পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (পঞ্চম খণ্ড).pdf/২৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

230 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ পঞ্চম খন্ড জন্মভূমি থেকে হানাদারদের নিশ্চিহ্ন করে দেশকে মনের করে গড়ে তুলতে আজ আমরা বদ্ধপরিকর। আমাদের দুর্বার প্রথিরোধের সম্মুখে টিকতে না পেরে দখলীকৃত এলাকায় জাতিসংঘের রিলিফ কর্মী নিয়োগের আরেকটি চক্রান্ত এটেছে জঙ্গীশাহী। কিন্তু আমরা জানি এই রিলিফ কর্মী নিয়োগের আসল উদ্দেশ্য কি। জঙ্গীশাহী চাচ্ছেঃ রিলিফ কর্মীর কথা বলে বাংলার বুভুক্ষ জনতাকে যেমন যুদ্ধ সম্পর্কে বিভ্রান্ত করা যাবে, তেমনি বিশ্বজনমতকে বাঙালীর দরদি সেজে ধোঁকা দেয়া যাবে। আমরা এও জানি, জাতিসংঘের এই তথাকথিত রিলিফ কর্মীদের বাংলাদেশে নিয়োগের উদ্দেশ্য হচ্ছে জঙ্গশাহীর বর্বরতা-ও পৈশাচিকতায় সহায়তা করা। অর্থাৎ এদের ভূমিকা হবে দসু্যবাহিনীর দালালদের প্রতি আমাদের যে ব্যবস্থা গৃহীত হচ্ছে এদের প্রতিও তাই করা হবে। এই প্রসঙ্গে বি-বি-সি থেকে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের গেরিলা বাহিনীর একজন মুখপাত্র জাতিসংঘকে এই বলে হুশিয়ার করে দিয়েছেন যে, তাদের রিলিফ কর্মীদের জঙ্গীশাহীর দালাল বলেই গণ্য করা হবে এবং তারা দালালদের বিরুদ্ধে গৃহীত ব্যবস্থারই আওতায় পড়বে। বি-বি-সি থেকে আরও বলা হয়, এ ব্যাপারে জাতিসংঘ থেকে কোন মন্তব্য করা হয়নি। তবে অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, বাংলাদেশ গেরিলা বাহিনীর মুখপাত্রের এই হুশিয়ারি জাতিসংঘকে বেশ খানিকটা ভাবিয়ে তুলেছে।” রিপাবলিকান দলীয় সিনেটর পাসীও পাকিস্তান সরকারকে আমেরিকান সাহায্য দান বন্ধের দাবী জানান।” বি-বি-সি রিপোর্টার মিঃ মাটিন বেল সম্প্রতি শরণার্থী শিবিরগুলো পরিদর্শনের জন্য ভারত সফরে গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি শরণার্থীদের অসীম দুঃখ-দুর্দশাই প্রত্যক্ষ করেছিলেন- শুনেছেন পাক জঙ্গীশাহীর চরম বর্বরতা ও পৈশাচিকাতর অনেক করুণ কাহিনী। কিন্তু তিনি লাখ লাখ লাঞ্ছিত মানুষের শুধু একটা প্রমাণই দেখেছেন। শুনেছেন একই কথা। চাপ চাপ যন্ত্রণায় সে কথা চাপা পড়ে যায়নি বরং আরো বলিষ্ঠ হয়ে প্রতিধ্বনিত হচ্ছে গোটা বিশ্বে। আর সে কথাটি হচ্ছে বাঙালীর অন্তর মথিত হৃদয়-সঙ্গীত “জয় বাংলা।’ (শহীদুল ইসলাম রচিত) অমর ১৭ই সেপ্টেম্বর স্বরণে ১৭ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১ পাকিস্তান সরকারের স্বৈরাচারী শাসনের প্রতিবাদে বাংলাদেশের দীর্ঘকালব্যাপী সংগ্রামের ইতিহাসে ১৯৬২ সালের ১৭ই সেপ্টেম্বর একটি স্মরণীয় দিন। এই দিন বাংলাদেশের ছাত্ররা বুকের রক্ত দিয়ে সরকারী শিক্ষানীতির প্রতিবাদ করেছিল। সেই থেকে এই দিন বাংলাদেশের সর্বত্র শিক্ষা দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। আজ সম্পূর্ণ ভিন্ন পরিবেশে, স্বতন্ত্র পরিস্থিতিতে, দেশব্যাপী স্বাধীনতা সংগ্রামের মাঝে ১৯৬২ সালের শিক্ষা-আন্দোলনের শহীদদের প্রতি আমরা শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করছি। পাকিস্তান সরকারের শিক্ষানীতি চিরকালই ছিল জনসাধারণের স্বার্থের থেকে বিযুক্ত। নানারকম প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও সার্বজনীন অবৈতনিক প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থা দেশে প্রবর্তিত হয়নি, বয়স্কদের শিক্ষার ব্যাপারেও