পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৩০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

277 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ পঞ্চম খন্ড কর্তব্য সকলের দেখাশোনা করা। তারা দেখবে জনগণের সমস্যা, দুঃখ আর বেদনা। দুঃখের প্রতিকার করবে অসামরিক প্রশাসনের কর্মচারীবৃন্দ এবং সেই কাজটিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের প্রতিটি ইঞ্চি জমি শত্ৰমুক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দ্রুত অসামরিক শাসন ফিরিয়ে আনা, জনগণের মনে পূর্বের বিশ্বাস ফিরিয়ে আনা এবং সুখের সন্ধান দেবার দায়িত্ব তাদেরই, তাদের সঙ্গে সহযোগিতা করবে সাধারণ মানুষ। সরকার আর জনগণের সহায়তায় বাংলাদেশ সত্যিকার সুখী-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হবে। আরো কিছুদূর যেতে যেতে একটি ছোটখাটো যুদ্ধ হলো শত্রদের সঙ্গে, শত্রুসৈন্য মরলো, আত্মসমর্পণ করলো বহু কিছুদূরে গিয়ে চোখে পড়লো একজন আহত মানুষ। তার হাতে একটি ষ্টেনগান তখনো, দৃঢ়মুষ্টিবদ্ধ এবং সে তখনো জীবিত। একজন মুক্তিযোদ্ধা তার মুখে জল দিয়ে ডাকলো, জিজ্ঞেস করলো ঠিকানা, নাম। তবু নিরুত্তর সেই পাজামা-পাঞ্জাবি পরা তরুণটি। মুক্তিবাহিনীর মধ্যে কেউ কেউ তাকে রাজাকার বলে সন্দেহ করলো, অনেকে অনেক রকম মন্তব্য করলো। কেউ কেউ বললঃ কেড়ে নাও অস্ত্র, বিশ্বাসঘাতকের উপযুক্ত সাজা হয়েছে, পথের ধারে তাকে ফেলে রাখা, ধুকে ধুকে মরুক। কিন্তু অনেকেই জানতে চাইলো প্রকৃত ঘটনাটি। সহসা ক্যাপ্টেন এলো, আহতের মাথাটি কোলে তুলে নিয়ে গ্লাস থেকে আরেকটু জল মমতা-মাখা হাতে তুলে দিলো, জিজ্ঞেস করলো ঠিকানা। আহত জবাব দিলো, আস্তে আস্তেযেন মাধ্যাহ্ন সূর্য ধীরে ধীরে গ্রাস করছে কালবোশেখীর কালো মেঘ। সুকান্ত ভট্টাচার্যের কবিতায় সে বললো তার মনের কথাঃ ঠিকানা আমার চেয়েছো বন্ধু ঠিকানার সন্ধান, আজও পাওনি? দুঃখ যে দিলে করবো না অভিমান? বন্ধু, আজকে আঘাত দিও না তোমাদের দেওয়া ক্ষতে আমার ঠিকানা খোঁজ করো শুধু সূর্যোদয়ের পথে। আমার হদিস জীবনের পথে মন্বন্তরে থেকে ঘুরে গিয়েছে যে কিছুদূর গিয়ে মুক্তির পথে বেঁকে। 来 বন্ধু, আজকে বিদায়! দেখেছো উঠলো যে হাওয়া ঝড়ো, এবার মুক্ত স্বদেশেই দেখা করো। এবার মুক্ত স্বদেশেই দেখা করো।