পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৩১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

287 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ পঞ্চম খন্ড অভিযোগ- যাকে অবজ্ঞা করা তার পক্ষে সম্ভব নয়। সে যুগে পুরোহিততন্ত্রের প্রভাব ও ক্ষমতা ছিল বিস্তৃত। তারা পীলাতকে ভয় দেখাল যে, যদি পীলাত যীশুর বিচার না করে তবে তিনি রোম সম্রাটের প্রকৃত বন্ধু নন। পরিশেষে পীলাত নিজের ভালো দেখলেন। চাইলেন তার বিরুদ্ধে যেন সম্রাটের কাছে কোন নালিশ না যায়। তাই তার বিচার প্রহসনে দাঁড়িয়ে গেল। সাক্ষ্য-প্রমাণ ছাড়াই বিচার বিচার খেলাটা শেষ হয়ে গেল। প্রকাশ করা হল রায়- ঐ ব্যক্তিকে চরম দণ্ড দেওয়া হল। না, ফাঁসী নয়- আরও নির্মম, নৃশংস ও লাঞ্ছনার মৃত্যুদণ্ডাদেশ-ক্রুশীয় মৃত্যু। হাতে, পায়ে পেরেক গেথে ক্রুশকাঠে ঝুলিয়ে যীশুকে হত্যা করা হল- যিনি ছিলেন নিরপরাধ, নিষ্কলঙ্ক, নিষ্পাপ ব্যক্তি। যিনি এসেছিলেন মানুষের ধর্মীয় পরিমণ্ডলের শুচিতা, শুভ্রতা ফিরিয়ে আনতে। যিনি এসেছিলেন মানুষকে পাপ থেকে উদ্ধার করে অনন্ত, অমৃত জীবনের সন্ধান দিতে। এখন প্রশ্ন হল, তাঁর মৃত্যুতেই কি সব শেষ হয়ে গেল? তিনি কি হেরে গেলেন পাপী প্রতিক্রিয়াশীল পুরোহিত-তন্ত্রের কাছে? তাঁর মৃত্যু কি তাঁর সাথে মানুষের চিরবিচ্ছেদ ঘটিয়ে দিল? না। এর উত্তরে অসংকোচে বলা যাবে, তা নয়। অন্ধকারের পরে আসে আলো- এটা বিতর্কিত নয় কিন্তু প্রাকৃতিক সত্য। যীশু প্রমাণ করলেন মৃত্যুর পরে তেমনি আসে পুনরুত্থান। মৃত্যুর তিন দিন পর কবর থেকে অমোঘ মৃত্যুকে পরাজিত করে তিনি পুনরুখিত হলেন। তাঁর পুনরুত্থান তার প্রতি বিশ্বাসী মানুষকে পাপ থেকে পরিত্রাণ দিল। মানুষকে বললেন, আমাকে বিশ্বাস কর। বললেনঃ ভয় নেই আমি আছি, আমি তোমাদের শক্তি দেব। সমস্ত অন্যায়ের বিরুদ্ধে তোমরা যুদ্ধ কর, সমস্ত অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধ কর- পরাজিত হবে না। আমার মতো বিজয়ী হবে। পাপের সাথে যুদ্ধ কর-অবশ্যই তোমরা পাপকে জয় করতে পারবে। কারণ, আমি তোমাদের পরিত্রাণ কর্তাতোমাদের শক্তিদাতা। মৃত্যুকেও তোমরা জয় করবে, আমার মতো মৃত্যুঞ্জয়ী হবে- ঈশ্বরের রাজ্যে, অনন্ত জীবনের দেশে তোমরা পৌছাতে পারবে। তখন অনায়াসেই বলতে পারবে- মৃত্যু, তুমি নাই। কবির ভাষায়ঃ আড়ালে তার সূর্য হাসে।” (ডেভিড দাস রচিত)