পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

65 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ পঞ্চম খন্ড টনি ক্লিফটন বলেন, গত তিন মাসে পশ্চিম হানাদাররা বাংলাদেশে যে নারকীয় বর্বরতায় লিপ্ত হয়েছে তাতে এটা আজ অত্যন্ত সুস্পষ্ট হয়ে গেছে যে পাকিস্তান ভেঙ্গে দুটি স্বতন্ত্র দেশ হয়ে যাচ্ছে। সেটা ঠিক কবে হচ্ছে সেটাই শুধু প্রশ্ন, হচ্ছে কিনা সেটা আজ আর কোন প্রশ্ন নয়। স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ আজ একটি বাস্তব ঘটনা। ১০ জুলাই, ১৯৭১ বেশী দিনের কথা নয়। মাত্র কয়েক দিন আগে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জনাব তাজউদ্দীন আহমদ পশ্চিম পাকিস্তানের সংগে বাংলাদেশের সম্পর্কের প্রসঙ্গে দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে ঘোষণা করেছিলেন“বাংলাদেশের লাখো শহীদের লাশের তলায় পাকিস্তানের কবর হয়ে গেছে।” প্রধানমন্ত্রী জনাব তাজউদ্দীনের এই উক্তির কদিন পরেই লণ্ডনের প্রভাবশালী দৈনিক ডেলী মিরর-এ প্রকাশিত A DEATH OF A NATION শিরোনামের একটি মর্মস্পর্শী রিপোটে বাংলাদেশে পাক বর্বরতার লোমহর্ষক বিবরণ দিয়ে এই একই মন্তব্য করা হয়। এর আগে লেবানিজ দৈনিক “আল সাব’ পত্রিকায় প্রকাশিত ARTIFICIALLLY CREATED PAKISTAN IS UNFIT TO CONTINUE fossososol foots.[53 & 4xo Tools করা হয়। তারপর গত সপ্তায় প্রকাশিত প্রভাবশালী মার্কিন সাময়িকী NEWSWEEK- এ প্রকাশিত THE TERRIBLE BLOOD BATH OF TIKKA KHAN fossilsso foss; assos.Wol oftপাকিস্তানীদের বীভৎস হত্যাযজ্ঞ, ব্যাভিচার, নির্যাতন ও ধ্বংসলীলার বিবরণ দিয়ে মন্তব্য করা হয় যে, বাংলাদেশে পাকিস্তানের কবর হয়ে গেছে। পাকিস্তান ভেঙে দু টুকরো হয়ে যাচ্ছে। এ ভাঙ্গন জোড়া দেয়ার নয়। স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ আজ একটি বাস্তব ঘটনা। চলতি সপ্তাহে নিউজউইক লিখেছেন, পশ্চিম পাকিস্তান যেদিন বাংলাদেশে সৈন্য পাঠিয়েছে সেই দিনই পাকিস্তানের মৃত্যু হয়েছে। সম্প্রতি কানাডীয় পার্লামেন্টের তিনজন প্রভাবশালী সদস্য বাংলাদেশ থেকে ভিটেমাটি ছেড়ে যাওয়া সর্বহারা শরণার্থীদের অবস্থা এবং বাংলাদেশে পাক বর্বরতার নমুনা দেখার জন্যে শরণার্থী শিবিরগুলি পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। শরণার্থী শিবিরগুলি পরিদর্শন করে গিয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে তাঁরা বলেছেনঃ “পূর্ব পাকিস্তান’- এই নামে কোন রাষ্ট্র-রাষ্ট্রাংশের অস্তিত্ব আর নেই। বাংলাদেশ আজ একটি বাস্তব সত্য। সাংবাদিক সম্মেলনে জাতীয় পরিষদ সদস্যগণ এ কথা জোর দিয়ে বলেন, আমরা একটি গণতান্তিক দেশের নির্বাচিত প্রতিনিধি। নির্বাচন ও গণতন্ত্রের উপর আমাদের পূর্ণ আস্থা আছে। আর এই আস্থা বলেই আমরা মনে করি বাংলাদেশের গণনির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করাই বাংলাদেশ সমস্যা সমাধানের একমাত্র পথ। কানাডীয় পার্লামেন্টারী প্রতিনিধিদলের নেতা, কানাডার ক্ষমতাসীন লিবারেল পার্টির মিঃ জর্জের লাচসি সাংবাদিকদের বলেনঃ শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার দাবী জানিয়ে অন্যায় কিছু করেননি। তিনি বলেন, কানাডার অনেক পরিষদ সদস্যই তো কুইবেক-এর বিছিন্ন হওয়ার দাবী তুলেছেন। এটা গণতান্ত্রিক অধিকার। অতএব এই গণতান্ত্রিক অধিকার তোলার জন্যে কাউকে অপরাধী বলে গণ্য করা উচিত নয়। শরণার্থী শিবিরগুলি পরিদর্শনের পর কানাডীয় প্রতিনিধিগণ বলেনঃ এটা এখন পরিষ্কার যে পাকিস্তাতনের সামরিক কর্তৃপক্ষ পরিকল্পিতভাবে একটি জাতিকে ধ্বংস করতে চয়েছিলেন। তাঁরা বলেন, এটা এই শতাব্দীর সবচে কলঙ্কজনক অধ্যায়। শুধু কানাডার জনসাধারণের নয়, বিশ্ববাসী বিশেষ করে কমনওয়েলথ দেশসমূহের মানুষের যা কিছু করণীয় আছে আমরা তা অবশ্যই তুলে ধরবো।