পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৯১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

67 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ পঞ্চম খন্ড হোক। কারণ, এখন পাকিস্তানে যে কোন আন্তর্জাতিক সাহায্যই দেয়া হোক না কেন তা সম্পূর্ণ অর্থহীন হয়ে দাঁড়াবে। রিপোর্টে তারা বলেছেনঃ বর্তমানে পাকিস্তানকে কোন রকম আন্তর্জাতিক সাহায্য দেয়া যাবে না। এমন কি পাকবাহিনী বিধ্বস্ত বাংলাদেশের জন্যে যদি কোন আন্তর্জাতিক সাহায্য পাঠানো হয় তাহলে ইয়াহিয়ার সামরিক সরকার সেই সাহায্যকে পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে যাবে। বাংলাদেশের মানুষের কাছে কোন সাহায্যই গিয়ে পৌঁছুবে না। বাংলাদেশে যুদ্ধ চালাতে গিয়ে পাকিস্তানের অর্থাৎ পশ্চিম পাকিস্তানের অর্থনীতি দারুণভাবে বিপর্যস্ত হয়েছে। পাকিস্তানের অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড ভেঙ্গে যাচ্ছে। এ অবস্থায় পাকিস্তানকে কোন রকমের আন্তর্জাতিক সাহায্য দিলে ইয়াহিয়া সরকার তা পশ্চিম পাকিস্তানেই পাচার করবে। অতএব পাকিস্তানকে কোন রকম আন্তর্জাতিক সাহায্য দেয়া যেতে পারে না। বাংলাদেশ ও পাকিস্তান সফরকারী বিশ্ব ব্যাঙ্ক প্রতিনিধিদলের GREİ Mr. I. P. M. CARGILL stā fāzofĒ 2IgG ÆGT EFTI Mr. I. P. M. CARGILL fā: zīITCH দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া বিভাগের ডিরেক্টর। Mr. CARGILL তাঁর রিপোর্টে লিখেছেন, বাংলাদেশে পাকিস্তানী সামরিক অভিযানের ব্যাপকতা এত বেশি হয়েছে যে সেখানে ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক জীবনধারা একেবারে বন্ধ হয়ে গেছে। বাংলাদেশের মানুষের জীবনে এখন এক ভয়াবহ আতঙ্ক ও অনিশ্চয়তা ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। Mr. CARGILL তাঁর রিপোটে লিখেছেনঃ পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী বাংলাদেশের সহজ সরল মানুষের বিরুদ্ধে যে এখনও সামরিক অভিযান অব্যাহত রেখেছে, সেখানের সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে তাঁরা যে এখনও চরম শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে, হত্যা, লুণ্ঠন ও ব্যাভিচারে তারা যে এখনও সমান তৎপর রয়েছে সে বিষয়ে কোন সন্দেহ থাকতে পারে না। সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধেই হোক অথবা বিশেষ ব্যক্তিবর্গের বিরুদ্ধেই হোক, সামরিক গভীর আতঙ্ক ও অনিশ্চয়তা। বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ চলছে। মুক্তিসেনাদের হাতে প্রচণ্ড মার খাচ্ছে পাক সেনারা, আর তারই প্রতিশোধ তারা গ্রহণ করছে সাধারণ মানুষের ওপর। ংক্ষেপে, বাংলাদেশের প্ররিস্থিতি এখন দারুণ উদ্বেগজনক। স্বাভাবিকতার নাম-গন্ধ নেই। বাংলাদেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক বলে পাকিস্তানী সামরিক সরকার যে দাবী করছে Mr. CARGILL তাঁর রিপোর্টে তার কঠোর সমালোচনা করে বলেনঃ সামরিক তৎপরতা বন্ধ করা, সৈন্য প্রত্যাহার করা ও বেসামরিক প্রশাসন প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসতে পারে না। ১৮ জুলাই, ১৯৭১ কিছুটা বিলম্বে হলেও বাংলাদেশ সম্পর্কে বিশ্বজনমত আজ এক নতুন ধারায় প্রবাহিত হতে শুরু করেছে। বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষের বিরুদ্ধে বর্বর সেনাবাহিনীকে লেলিয়ে দিয়ে ব্যাপক হত্যা, লুণ্ঠন ও পৈশাচিক নির্যাতন চালিয়ে পশ্চিম পাকিস্তানী পুঁজিপতি স্বার্থান্বেষী মহল ও ইয়াহিয়া চক্র সর্বাত্মক মিথ্যা ও অপপ্রচার ছড়িয়ে যে বিভ্রান্তির কালো ধোঁয়া ছড়িয়েছিলো বিশ্বমানবতা ও বিশ্ববিবেকের নবতর অভু্যদয়ের আলোকচ্ছটায় তা দ্রুত কেটে যাচ্ছে। বিশ্বের দেশে দেশে আজ ইয়াহিয়ার বর্বর বাহিনীর গণহত্যা, ধ্বংসযজ্ঞ ও অমানুষিক নির্যাতনের খবর পৌছে গেছে। বাংলাদেশে পাক বাহিনীর গণহত্যা ও বর্বরতার পেছনে কোন দুরভিসন্ধি ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য কাজ করেছে বিশ্বের মানুষের কাছে তা আজ অনেকখানি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। পাশে এসে দাঁড়াচ্ছে। বিশ্বের বহু দেশ আজ আমাদের প্রকাশ্যভাবে সমর্থন জানাচ্ছে। কানাডা, পশ্চিম জার্মানী, সুইডেন, স্ক্যাণ্ডিনেভীয় দেশসমূহ এবং আরও কয়েকটি দেশ বাংলাদেশ সংক্রান্ত প্রশ্নটি জাতিসংঘে তোলার জন্যে