পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (প্রথম খণ্ড).pdf/১৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ প্রথম খণ্ড
১১৬

 বিট্রিশ আমলে অনুমোদিত ওল্ড স্কীম, নিউ স্কীম ও সাধারণ- এই তিন বিভিন্ন ধারার শিক্ষা-পদ্ধতিকে একই সাধারণ ভিত্তির উপর দাঁড় করাতে হবে। ধর্ম্মে যেমন আমরা একত্ববাদী, শিক্ষায়ও আমাদিগে একত্ববাদী হতে হবে। এজন্য নানা বিষয়ে অভিজ্ঞ শিক্ষাবিদদের নিয়ে একটি পরামর্শ সভার আশু প্রয়োজন হয়েছে। আযাদ পাকিস্তানে আমাদের অবিলম্বে শিক্ষা-তালিকার সংস্কার করতে হবে। এই নূতন তালিকায় রাষ্ট্র-ভাষা উর্দুকে স্থান দিতে হবে। যারা এতদিন রাজ-ভাষারূপে ইংরেজির চর্চা করেছে, তাদের উর্দু শিখতে কি আপত্তি থাকতে পারে? দেশে গণশিক্ষা, স্ত্রীশিক্ষা ও বয়স্কদের শিক্ষার বিস্তার করতে হবে। প্রাথমিক শিক্ষা, ধর্ম্ম ও নীতি শিক্ষা এবং সামরিক শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করতে হবে।

 আমাদিগে একটি একাডেমী (পরিষদ) গড়তে হবে, যার কর্তব্য হবে পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষা থেকে জ্ঞানবিজ্ঞান ও সাহিত্য বিষয়ে শ্রেষ্ঠ গ্রন্থাবলীর অনুবাদ বাংলায় প্রকাশ। এজন্য একটি পরিভাষা-সমিতির প্রয়োজন আছে। বিশেষ করে আরবী, পারসী এবং উর্দু ভাষা থেকে ইসলাম, ধর্ম্ম ও সংস্কৃতি সম্বন্ধে বইগুলির অনুবাদ একান্ত প্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে। মুখে পাকিস্তান জিন্দাবাজ’ বলেই পাকিস্তান জীবিত থাকবে না; তাকে ধর্ম্মে ও জ্ঞানে, চরিত্রে ও দৈহিক শক্তিতে উন্নত করে কৃষি ও শিল্পে, বাণিজ্যে ও রণকৌশলে, সাহিত্যে ও কলায় মহিমাম্বিত ও গৌরবাম্বিত করতে হবে। যে দিন সে দিন হবে, সে দিন আমরা দ্বিধামুক্ত অযুত কষ্ঠে বলতে পারব-

পাকিস্তান জিন্দাবাদ


  * আমরা হিন্দু বা মুসলমান সত্য, তার চেয়ে বেশী সত্য আমরা বাঙ্গালী। এটি কোন আদর্শের কথা নয়, এটি একটি বাস্তব কথা। মা প্রকৃতি নিজের হাতে আমাদের চেহারায় ও ভাষায় বাঙ্গালীত্বের এমন ছাপ মেরে দিয়েছেন যে, মালা-তিলক-টিকিতে কিংবা টুপি-লুঙ্গী-দাড়িতে ঢাকবার জো-টি নেই।

  ** ভাষনের শেষ যে অংশটি (তারকা চিহ্নিত) গ্রন্থে প্রকাশিত হয়নি তা এখানে বদরুদিন উমরের গ্রন্থ থেকে উদ্ধৃত হলো।