পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (প্রথম খণ্ড).pdf/৪৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ প্রথম খন্ড
৪১২

জনগণই; তাই আপনাদের সমবেত অভিমত জ্ঞাপন উদ্দেশ্যে এই সভার আয়োজন করা হইয়াছে। আপনারা দলমত নির্ব্বিশেষে ঐক্যবদ্ধভাবে সাড়ে সপ্তকোটি কণ্ঠে আওয়াজ তুলুন গণতন্ত্র বিরোধী কোন কার্য্যকলাপ আমরা এই আজাদ পাকিস্তানে বরদাস্ত করিব না। দেখিবেন আপনাদের সমবেত আওয়াজের ফলে গণতন্ত্র বিরোধী সকল চক্রান্ত ধূলিসাৎ হইয়া যাইবে। মনে রাখিবেন গণতন্ত্র রক্ষার দায়িত্ব পাঞ্জাবী, পাঠান, সিন্ধী, বেলুচি, বাঙ্গালী সকলেরই সমান।

 যুক্তফ্রণ্টের অন্যতম নেতা মওলানা ভাসানী আজ দেশের বাহিরে। তাঁহার স্বদেশে প্রত্যাবর্ত্তন সম্পর্কে সরকারী কোন বাধানিষেধ আছে কিনা তাহা আমার জানা নাই। পাকিস্তানের স্বাধীন নাগরিক হিসাবে স্বদেশে প্রত্যাবর্ত্তনের সম্পূর্ণ অধিকার মওলানা ভাসানীর রহিয়াছে। প্রকৃতই যদি তাহার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ থাকিয়া থাকে তবে তাঁহার বিচার হইতে পারে কিন্তু তাই বলিয়া তাঁহার স্বদেশে প্রত্যাবর্ত্তন সম্পর্কে কোন বাঁধানিষেধ থাকিতে পারে না। ঐরূপ বাঁধা-নিষেধ গণতন্ত্রের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। আমি বহুবার রাজবন্দীদের মুক্তির জন্য সরকারের নিকট আবেদন জানাইয়াছি। আজ পর্যন্ত বহু রাজবন্ধীকে জেলে পচান হইতেছে। ইহার প্রতিবাদ আমি এবং অন্যান্য বহু ব্যক্তি পুনঃ পুনঃ জানাইয়াছি। সরকার আমাদের কথায় কানই দিতেছে না। উপসংহারে আমি পুনরায় আমার দেশবাসীকে আজাদ পাকিস্তানের আজাদ নাগরিক হিসাবে সর্ব্বপ্রকার গণতন্ত্র বিরোধী কার্য্যকলাপের বিরুদ্ধে মাথা উঁচু করিয়া দাঁড়াইতে আহ্বান জানাইতেছি। আপনারা আজ ওয়াদা করুন এবং সমস্বরে আওয়াজ তুলুন পাকিস্তানের গণতন্ত্রের পূর্ণ প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্য্যন্ত আমরা ক্ষান্ত হইব না। আমীন!!

পাকিস্তান জিন্দাবাদ!

যুক্তফ্রণ্ট জিন্দাবাদ!!

গণতন্ত্র জিন্দাবাদ!!!