পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (প্রথম খণ্ড).pdf/৬০৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ প্রথম খণ্ড
৫৮১
শিরোনাম সূত্র তারিখ
আওয়ামী লীগ সরকার মুখ্যমন্ত্রীর নীতি-নির্ধারণী বক্তৃতা পূর্ব পাকিস্তান সরকারের প্রচার ৭ই সেপ্টেম্বর, ১৯৫৬।
আমাদের নীতি ও কার্যক্রম পূর্ব পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী জনাব আতাউর রহমান খানের বেতার ভাষণ
(৭ই সেপ্টেম্বর-১৯৫৬)

 গত ৭ই সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় ঢাকা বেতার কেন্দ্র হইতে পূর্ব পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী জনাব আতাউর রহমান খান এক বেতার বক্তৃতায় নূতন মন্ত্রী-সভার নীতি ও কর্মপরিকল্পনা বিশ্লেষণ করেন। তিনি সকল রাজবন্দীর মুক্তির ঘোষণা প্রচার করেন এবং বলেন যে, খাদ্য সমস্যার সমাধানের জন্য তাঁহারা সম্ভাব্য সকল উপায় অবলম্বন করিবেন। তাঁহার এই বক্তৃতার পূর্ণ বিবরণ নিন্মে বিবরণ দেওয়া গেল:—

 ইতিমধ্যেই আপনার সম্ভবতঃ জানতে পেরেছেন যে কেবলমাত্র সাড়ে ছাবিবশ ঘণ্টা আগে আমি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহন করেছি। সরকার গঠনের কাজ এখন পর্যন্ত সম্পূর্ন হয়নি। শীঘ্রই এ কাজ সম্পূর্ণ হবে। ইত্যবসরে আমি ও আমার অপর চারজন সহকমী যে সব সমস্যা শাসন-ব্যবস্থা ও জন-কল্যাণ প্রচেষ্টাকে ব্যাহত করে রেখেছে, সাহস ও সংকল্পের সাথে সেগুলির সমাধানের জন্য এগিয়ে যাব বলে সঙ্কলপবদ্ধ হয়েছি।

 আর অধিক কিছু বলার পূর্বে আমার এবং আমার সহকর্মীদের প্রতি আন্তরিক সহানুভুতি প্রকাশের জন্য আমি দেশবাসী জনগনের উদ্দেশে কৃতজ্ঞতা জাপন করছি।

 ভ্রাতা ও ভগ্নিগণ! আমরা এ প্রদেশের ইতিহাসের একটি সঙ্কট মুহুর্তেই কার্যভার গ্রহণ করেছি। আমরা বেশ ভালরূপেই অবগত আছি যে, আমাদিগকে কতকগুলো ভয়াবহ সমস্যার সমাধান করতে হবে এবং যথাসম্ভব স্বল্প সময়ের মধ্যেই তা করতে হবে। আমরা শুধুমাত্র ক্ষমতা ও গদি দখলের লোভে দায়িত্ব গ্রহণ করি নাই। উপরন্ত কর্তব্যের চরম আহবানেই তা করেছি। আমাদের কার্যতার গ্রহণ করার মাত্র একদিন আগে পুলিশের গুলী চালনার ফলে ঢাকা শহর এক ভীষণ গোলযোগের সম্মুখীন হয়েছিল। আমরা এই দুর্ঘটনার জন্য একটি বিচারবিভাগীয় তদন্তের প্রস্তাব করেছি এবং সরকার নিহত ও আহতগণের উত্তরাধিকারীদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ও দেবেন।

খাদ্য সমস্যা

 খাদ্য ব্যবস্থা ও শাসন-ব্যবস্থার ক্ষেত্রে ক্রমাবনতি গভীর উৎকণ্ঠার সঙ্গেই আমরা লক্ষ্য করছি। গ্রামাঞ্চলের জনসাধারণ বহু বৎসর যাবৎ যে অবহেলা সহ্য করে আসছে, তা প্রকৃতই অবর্ণীয়। অর্থনৈতিক দিক দিয়ে সোজা ভাষায় বলতে গেলে হয় যে, প্রদেশ দুর্দ্দশার শেষ সীমার গিয়ে পৌছেচে। যা হোক খাদ্য সংকট সব সমস্যাকে ছাড়িয়ে উঠেছে। আমি আপনাদিগকে আশ্বাস দিচ্ছি যে, অগ্রে বিবেচ্য বিষয়সমূহের মধ্যে খাদ্যই সর্বোচ্ছ স্থান অধিকার করে আছে। কাজেই আমাদের প্রথম কাজই হচ্ছে সমগ্র খাদ্য সমস্যার পর্যালোচনা করা। এ সম্পর্কে আজ লাট-ভবনে প্রেসিডেণ্ট মেজর-জেনারেল ইস্কান্দার মীর্জার সঙ্গে আমাদের একটি বৈঠক হয়ে