পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (প্রথম খণ্ড).pdf/৬৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ প্রথম খণ্ড
৬০৬

 Mr. Ashabuddin Ahmed: স্যার, স্বায়ত্তশাসনের দাবীর উপরেই পাকিস্তানের ভিত্তি। ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাবেও স্বায়ত্তশাসনের কথা বলা হয়েছে। তাই এখন স্বায়ত্তশাসনের দাবীর বিরোধী করা লাহোর প্রস্তাব ও পাকিস্তানেরই বিরোধিতা করা হবে। আমার আর একটা কথা হ’ল স্যার যে, মুসলিম লীগের পতন হত নাচরম ব্যর্থতায় মুসলিম লীগ শাসন পর্যবসিত হত না যদি পাকিস্তান লাভের পর তারা পূর্ণ আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসন আদায়ের জন্য সংগ্রাম করতেন এবং সচেষ্ট হতেন। তা না করে প্রদেশের হাতে বিভিন্ন কর আদায়ের যে ক্ষমতা ছিল সেগুলিও কেন্দ্রের হাতে তাঁরা তুলে দিলেন। যে পরিমাণ ক্ষমতা তাঁরা কেন্দ্রের হাতে ছেড়ে দিয়েছেন সে পরিমাণ ক্ষমতা আমাদের এ প্রদেশ হারিয়েছে। তার ফলে হয়েছে দেশবাসী তাদের ক্ষমা করেননি তাদের ক্ষমতাচ্যুত করেছে। ২১ দফা জাতির মহাসনদ। এই সনদে জনাব শহীদ সোহরাওয়ার্দী সাহেব, জনাব এ, কে, ফজলুল হক সাহেব ও মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী সাহেব স্বাক্ষর করেছিলেন। সে সনদেও আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসনের দাবী করা হয়েছিল। (ঠড়রপব: মওলানা আতাহার আলী সাহেবও সে ২১-দফা সনদে স্বাক্ষর দিয়েছিলেন)। আমি মনে করি যে আমাদের ২১-দফা যে সমস্ত বিষয় নিয়ে রচিত হয়েছিল তার মধ্যে ১৯নং দফায় যে পূর্ণ আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসনের দাবী আছে সেটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এই দাবী আদায় করতে না পারলে আমাদের অন্যান্য দাবী পূরণ করা সম্ভব হবে না। আমি একথা বলতে পারি যে যদি এই ১৯নং দফর পূর্ণ আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসনের দাবী আদায় করতে না পারি তাহলে আজকে এই আইন পরিষদে যারা সদস্য হয়ে এসেছে জনসাধারণ তাদের দফা রফা করে দেবে।... একথা কেউ অস্বীকার করতে পারবেন না যে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গী যদি বাস্তব না হয় তাহলে আমরা জাতি হিসাবে বাঁচতে পারব না। একথাও কেউ অস্বীকার করতে পারবেন না যে আমাদের পাকিস্তান দু’অংশ পরস্পর শত মা ল দূরে অবস্থিত। এই বাস্তব সত্যের উপর ভিত্তি করে আমাদের রাষ্ট্রের সমস্ত কিছু নীতি নির্ধারণ করতে হবে। আমাদের আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসনের দাবী অস্বাভাবিক কিছু নয় আজ আমাদের দেশের একটা খাল-বিল কাটতে হলে করাচী থেকে সম্মতি আনতে হয়। এই প্রদেশের খাল-বিল, নদী-নালা, স্বাভাবিক এটা কেউ অস্বীকার করতে পারে না। কিন্তু এই নদী-নালা আকাশ পথে সংস্কার অনুমোদনের জন্য করাচী প্রেরণ এটা অস্বাভাবিক না অতিপ্রাকৃত। জনাব স্পীকার সাহেব, গত কয়েক বছর যাবৎ কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের এ প্রদেশ কিরূপ ব্যবহার পেয়েছে সেটা আপনি জানেন। হিসাবে দেখা যায় যে ১৯৪৭ সাল থেকে ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত এই ভাবে ব্যয় করা হয়েছেঃ

[কোটি টাকার অঙ্কে]
পূঃ পাকিস্তান। পঃ পাকিস্তান
রাজস্ব খাতে ১৮৮ ১,০০৮
কল-কারখানা ও যন্ত্রপাতি ৫৪ ২১৯
সাহায্য খাতে ১৮ ৫৪
বিদেশী সাহায্য ১৫ ৭৩
কৃষি খাতে ৯৭
পঞ্চ-বার্ষিক পরিকল্পনায় সামরিক খাতে ৩৭ ৬১২
ডাক ও তার ১৩

তকরপর ১৯৪৭-১৯৫৫ সন পর্যন্ত রপ্তানীর জন্য অনুমুতি দেওয়া হয়েছে এই ভাবে-

[কোটি টাকার অঙ্কে]
আমদানী রপ্তানি
পূর্ব পাকিস্তান ২৮৯ ৫৬২
পশ্চিম পাকিস্তান ৭৭১ ৫৮১