পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (প্রথম খণ্ড).pdf/৭১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ প্রথম খন্ড
৬৮৮

 কতিপয় উর্দুভাষী ছাত্রও বক্তৃতা দান করেন। ইহাতে ছাত্রদের মধ্যে উৎসাহের সঞ্চার হয়। তাহারা জনসাধারণের নিকট এই বলিয়া আবেদন জানা যে, তাঁহাদের পথকে কেহ যে ভুল ধারণা না করেন এবং কল্পিত বিরোধের ধুয়া তুলিয়া দুই দলে বিভেদ বাধাইয়া না দেয়।

গায়েবানা জানাজা

 বেলা ২টায় উক্ত হল প্রাঙ্গণে গায়েবানা জানাজা আদায় হয় এবং তাহাতে প্রায় চারি হাজার লোক যোগদান করেন। তন্মধ্যে বিশববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর, সলিমুল্লা মোছলেম হলের প্রভোষ্ট এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য অধ্যাপকও উপস্থিত ছিলেন।

জনাব ফজলুল হকের আবেদন

 অপরাহ্নে জনাব এ, কে, ফজলুল হক মোছলেম হলের সভায় উপস্থিত হইয়া ছাত্রদিগকে নিজেদের মধ্যে শাস্তি বজায় রাখিতে বলেন। ছাত্রদের দাবীকে জয়যুক্ত করাইবার জন্য তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করিবেন বলিয়াও আশ্বাস দেন।

গুলী চালানোর হুকুম আমি দেই নাইঃ

মফিজুদ্দিন

 পূর্ববঙ্গের সাহায্য সচিব জনাব মফিজউদ্দিন আহমদ সংবাদপত্রে নিম্নলিখিত বিবৃতি দান করিয়াছেনঃ

 “ছাত্রদের উপর গুলী চালনার জন্য আমি পুলিশকে হুকুম দিয়াছি বলিয়া বাহিরে গুজব উঠিয়াছে জানিতে পারিয়া আমি অত্যন্ত মর্মাহত হইয়াছি। এইরূপ একটি ভিত্তিহীন সংবাদ কি করিয়া রটিতে পারে, তা ভাবিয়া আমি বিস্ময় বোধ করিতেছি।

 ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংগ্রাম পরিষদ কর্তৃক প্রকাশিত প্রেসের নামসহ একটি প্রচারপত্র আজ আমার হস্তগত হইয়াছে।

 প্রচারপত্রটিতে বলা হইয়াছে, আমার আদেশেই পুলিশ গুলী করে। ইহা সত্যের অপলাপ ছাড়া আর কিছুই নাহে সুতারং জনগণ যাহাতে ভুল না বুঝেন তার জন্য সত্য বিকৃত করিতেছি।

 আমি মেডিক্যাল কলেজের গেট দিয়া মোটেও যাই নাই, ঘটনাস্থলেও ছিলাম না...কোন পুলিশ কর্মচারীর সাথে আমার সাক্ষাৎকাও হয় নাই। সাধারণত যে পথে পরিষদে যাইয়া থাকি ঐ দিনও সেই অর্থাৎ... (রেসকোর্সের পশ্চিম দিক) পূর্ব দ্বার দিয়া পরিষদ ভবনে প্রবশ করি। পরিষদের অধবেশন ৩-৩০ মিঃ শুরু হয়। পরিষদে বিরোধী দলের সদস্যগণ ছাত্রদের উপর পুলিশের গুলী করার কথা বলিলে প্রথম আমি সংবাদ জানিতে পারি।...

 গুলীবর্ষণের দুঃখজনক ঘটনায় অত্যন্ত ব্যথিত। কিন্তু রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাছেল করিবার জন্য একটি দুঃখজনক ঘটনাকে কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবহার হইবে ইহা আমি ভাবিতেই পারি নাই।”

আজাদ সম্পাদক অভিনন্দিত

 ব্যবস্থা পরিষদের সদস্য পদে এস্তেফা দেওয়ায় আজাদ সম্পাদক জনাব আবুল কালাম শামসুদ্দিনকে অভিনন্দন জানাইয়া আগামসিহ লেনের জনাব কাজী হেদায়েত হোসেন যে পত্র লিখিয়াছেন তাহার একটা অংশ নিম্নে উদ্ধৃত করা হইলঃ

 “এই বর্তমান সন্ধিক্ষণে আপনি পূর্ববঙ্গ ব্যবস্থা পরিষদের সদস্যপদ ত্যাগ করিয়া যে মমত্ববোধ ও কর্তব্য জ্ঞানের পরিচয় দিয়েছেন তাহা বাস্তবিকই অতুলনীয়। আপনার এই সাহসিকতাপূর্ণ কাজের জন্য উপযুক্ত শোকর-