নুরুল আমীনের কাজের সমালোচনা
জনাব এ, সবুরের বিবৃতি
প্রাদেশিক লীগ পার্লামেণ্টারী পার্টির সদস্য ও খুলনা জেলা লীগের প্রেসিডেণ্ট জনাব আবদুস সবুর অসুস্থ অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে আছেন। তিনি পুলিশের সাম্প্রতিক গুলিবর্ষণের নিন্দা করিয়া নিন্মোক্তরূপ বিবৃতি দান করিয়াছেনঃ-
গত ২১ শে ফেব্রুয়ারী হইতে ঢাকায় যে সকল কাণ্ড ঘটিয়াছে, তাহা হাসপাতালের রোগশয্যায় থাকিয়া আমি কিছু কিছু উপলব্ধি করিতেছে। ছাত্রদের উপর যে জুলুম চালিয়াছে তাহা অমানুষিক এবং আকারণে এই জুলুমের অনুষ্ঠান করা হইয়াছে। সরকার ও ছাত্ররা সবাই যখন বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করিতে চায়, তখন বিরোধ কোথায়? ১৪৪ ধারারই বা প্রয়োজন কেন হইয়াছিল?
জনাব নুরুল আমিন গত ২৪ শে ফেব্রুয়ারী তারিখে তাহার বেতার বক্তৃতায় ১৪৪ ধারা জারীর যে কারণ দর্শাইয়াছেন, তাহার উৎস কোথায়, অনুমান করা শক্ত নহে। গত কয়েকদিন ধরিয়া ঢাকার একখানি তৃতীয় শ্রেণীর ইংরেজী দৈনিক বিদেশী গুজব ও ভারতীয় এজেণ্ট-এর এবং বিশেষ করিয়া হিন্দু ষড়যন্ত্রের আওয়াজ তুলিয়া ছাত্র ও জননেতাদের উপর জুলুমের রথচক্র চালাইবার যে হীন পরামর্শ দিতেছিল, নুরুল আমীন সাহেব তাহার দ্বারা পরিচালিত হইতেছে। ক্ষমতালোলুপতা ত্যাগ করিয়া একটু প্রকৃতিস্থ হইয়া চিন্তা করিলে তিনি বুঝিতে পারিবেন যে, অহমিকার বশে দেশকে তিনি কোথায় লইয়া যাইতেছেন।
জনাব মোয়াজ্জেম উদ্দীন হোসেন কর্তৃক প্রধানমন্ত্রীর বেতার বক্তৃতার সমালোচনা
অবিভক্ত বাংলার প্রাক্তন শিক্ষা সচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন এক বিবৃতিতে বলেন, পূর্ববঙ্গের প্রধানমন্ত্রী জনাব নুরুল আমীনের সর্বশেষ বেতার বক্তৃতায় মনে হয়, যে, ছাত্রগণ রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপে উন্মুখ হইয়া আইন ও শৃঙ্খলা ভংগ করিবার ফলেই পুলিশ গুরি করিতে বাধ্য হইয়াছিল। যদি ইহাই সত্য হয় যে, ছাত্রগণ বাহিরের উস্কানীতে আইন ও শৃঙ্খলার ব্যাঘাত ঘটাইতেছিল, তবে তাহাদিগকে পশুপক্ষীর মত হত্যা না করিয়া যথার্থ ব্যবস্থা অবলম্বন বিধেয় ছিল।
তিনি আরও বলেনঃ জনাব প্রধানমন্ত্রীর মতে এই আন্দোলন ও বিক্ষোভের পিছনে অন্যের উস্কানী রহিয়াছে। একমাত্র ছাত্রগণই এজন্য দায়ী নহে। যদি তাহাই হয় তবে ছাত্রদের উপর গুলি বর্ষণের হুকুম জারী করা নেহায়েত বিকৃত মস্তিষ্কেরই পরিচায়ক মাত্র।
জনাব নুরুল আমীন যে সমস্ত বিবৃতি দিয়াছেন তাহা দ্বারা জনসাধারণকে আর বিভ্রান্ত করা চলিবে না। গত দুই সপ্তাহে সংবাদপত্র পাঠে ইহা স্পষ্ট বুঝা যাইবে যে, রাষ্ট্রভাষা সম্পর্কে ছাত্রদের মধ্যে একটি বিশেষ জাগরণের সৃষ্টি হইয়াছে এবং এ ব্যাপারে জনসাধারণ ও স্থানীয় অধিকাংশ সংবাদপত্রের পূর্ণ সমর্থন পাইতেছে। এই আন্দোলন শুরু করিবার জন্য ছাত্র ও জনসাধারণ বাহির হইতে কোন উস্কানী পায় নাই। ইহাতে প্রমাণ হয় যে, সরকার আশংকিত কোন অশান্তি দমনের জন্য ১৪৪ ধারা জারী করেন নাই।
জনাব সোহারাওয়ার্দীর সাম্প্রতিক বিবৃতিঃ
পূর্ব পাক আওয়ামী মোছলেম লীগ সেক্রেটারীর তীব্র সমালোচনা
ঢাকা, ২৫ শে ফেব্রুয়ারী, পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মোছলেম লীগের জেনারেল সেক্রেটারী জনাব শামসুল হক এক বিবৃতি প্রসংগে বলেন, “অন্য কয়েকটি সংবাদপত্রে জনাব শহীদ সোহরাওয়ার্দীর এক বিবৃতি দেখিয়া আমরা অত্যন্ত বিস্মিত হইলাম। উহাতে তিনি পরোক্ষভাবে উর্দুকেই পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষারূপে গ্রহণের জন্য ওকালতী করিয়াছেন। তিনি প্রকৃত প্রস্তাবে এরূপ বিবৃতি দিয়াছেন কিনা তাহা আমরা সঠিক জানি না। কিন্তু