পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (প্রথম খণ্ড).pdf/৭৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ প্রথম খন্ড
৭২৫

 পূর্ব পাকিস্তানীদের অধিকাংশ প্রোটিনজাত খাদ্য মাছেই পাওয়া যায় এবং প্রদেশের মৎস্য সম্পদকে প্রকৃত ‘সোনার খনি’ আখ্যা দেওয়া হয়। কিন্তু এই সম্পদকে এ পর্যন্ত পুরোপুরিভাবে ব্যবহার করা হয় নাই। ১৯৫০ সালের পূর্ব পাকিস্তান মৎস্য পালন ও সংরক্ষণ আইন এ পর্যন্ত সক্রিয়ভাবে চালু করা হয় নাই। বর্তমান প্রাদেশিক সরকারের নীতি হইতেছে এই আইনের বিধানসমূহকে কার্যকরী করা এবং মৎস্য, ডিম্বও পোনা মাছ ধ্বংস বন্ধ করা।

 সেই মতে মৎস্য ডিরেক্টরেটকে (১) বৈজ্ঞানিক উপায়ে মৎস্য চাষ দ্বারা দেশের মৎস্য সম্পদ বৃদ্ধি করার জন্য ও (২) মাছের পরিত্যক্ত অংশ এবং নষ্ট মাছের সর্বোৎকৃষ্ট ব্যবহার পদ্ধতি নিরুপণের জন্র ১৯৫৬-৫৭ সালের বাজেটে অধিক পরিমাণ টাকা বরাদ্দ করা হইয়াছে।

সিভিল ওয়ার্কস

 রাস্তাঘাট এবং সরকারী ইমারত প্রভৃতি নির্মাণ বাবদ ৭ কোটি ৬৬ লক্ষ টাকা ব্যয় বরাদ্দ করা হইয়াছে। এই খাতে পূর্বে গড়পড়তা বাৎসরিক ব্যায়ের অঙ্ক ছিল ৪ কোটি টাকা। বর্তমান আর্থিক বৎসরে এই খাতে আমরা ৭ কোটি ৬৬ লক্ষ টাকা ব্যয় করিতে মনস্থ করিয়াছি। বাজেটে বহুসংখ্যক জাতীয় গঠনমূলক পরিকল্পনাকে কার্যকরী করিবার ব্যবস্থা করা হইয়াছে। এই সমস্ত পরিকল্পনা দেশকে দ্রুত উন্নতির পথে অগ্রসর হইতে সাহায্য করিবে।

খাদ্য

 বর্তমান বৎসরের আনুমানিক খাদ্য ঘাটতি ৭ লক্ষ টন। বর্তমান বাজেটে এই ৭ লক্ষ টন খাদ্যশস্য সংগ্রহ করার ব্যবস্থা ইতিপূর্বেই করা হইয়াছে। সরকার নিমেণাক্ত স্থানসমূহ হইতে খাদ্রশস্য পাইবার আশ্বাস পাইয়াছেনঃ

পশ্চিম পাকিস্তান
ব্রহ্মদেশ
যুক্তরাষ্ট (আমেরিকা)
ভারত
সিংহল
জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক জরুরী শিশু তহবিল
সোভিয়েট রাশিয়া
চীন

··
··
··
··
··

··
··
··

··
··
··
··
··

··
··
··

মোট-

৯৪,৩৭৫
৬১,৪৫০
৪,১৪,৭১৩
২৫,০১৯
১,০০০


৩,২২৩
৪০,০০০
৬০,০০০
-----------------
৬,৯৯,৭৮০

 ইহার প্রায় অর্ধেক পরিমাণ খাদ্যশস্য ইতিপুর্বেই আসিয়া পৌঁছিয়াছে। বাদবাকী খাদ্যশস্য হয় আসিবার পথে, না হয় উক্ত দেশগুলিতে জাহাজে বোঝাই হইতেছে। এতদুপরি পাকিস্তানের প্রেসিডেণ্ট মেজর জেনারেল ইস্কান্দার মীর্জা সাহেব গত ৭ ই সেপ্টেম্বর তারিখে আরও ১ লক্ষ টন খাদ্য আমদানী করিবার আদেশ দিয়াছেন। উক্ত দেশ হইতে খাদ্যশস্য জাহাজে আনয়ন করার বিশেষ অসুবিধা বিধায় আমরা অন্যান্য দেশ হইতেও খাদ্যশস্য অতি সত্বর আনাইবার ব্যবস্থা করিতেছি। যখন সমস্ত আমদানীকৃত খাদ্যশস্য আসিয়া পৌঁছিবে তখন খাদ্যাবস্থা শুধু স্বাভাবিকই হইবে না বরং সঞ্চয়ের জন্য যতেষ্ট পরিমাণ খাদ্যশস্য হাতে রহিয়া যাইবে বলিয়া আশা করা যায়।