পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

141 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ ষষ্ঠ খণ্ড শিরোনাম সংবাদপত্র তারিখ সামরিক আদালতে মুজিবের বিচার স্বাধীন বাংলা ২৫ জুলাই, ১৯৭১ ১ম বর্যঃ ৩য় সংখ্যা অভিযোগ প্রমানীত হইলে মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত দেওয়া যাইতে পারে- ইয়াহিয়া (বিশেষ প্রতিনিধি) ইসলামাবাদের সামরিক চক্র কর্তৃক গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধান শেখ মুজিবুর রহমানের সামরিক আদালতে বিচারের চক্রান্ত দেশবাসী ও রাজনৈতিক মহলে তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করিয়াছে। সকল মহল ইহাকে বে-আইনী ইসলামাবাদ গোষ্ঠীর অধিকার বহির্ভূত এবং বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আর একটি যড়যন্ত্রমূলক কার্য বলিয়া অভিহিত করিয়াছেন। উল্লেখযোগ্য যে, শেখ মুজিব বর্তমানে ইয়াহিয়ার হাতে বন্দী। বিবিসি প্রচারিত এক খবরে ফাইনান্সিয়াল টাইমস পত্রিকার সংবাদের বরাত দিয়া বলা হয় ইয়াহিয়া উক্ত পত্রিকার প্রতিনিধিদের জানাইয়াছে যে, শীঘ্রই শেখ মুজিবুর রহমানকে বিচারের জন্য সোপর্দ করা হইবে। এই বিচার সামরিক আদালতে গোপনে অনুষ্ঠিত হবে। ইয়াহিয়া নাকি আরও বলে যে, শেখ সাহেবের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনয়ন করা হইয়াছে উহা প্রমানীত হইলে মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত দেওয়া যাইতে পারে। সৈয়দ নজরুল ইসলাম বাংলাদেশ সরকারের অস্থায়ী সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম সোভিয়েত ইউনিয়ন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান এবং ভারত, চীন, বৃটেন, ক্যানাডা, অষ্ট্রেলিয়া, প্রভৃতি প্রধানমন্ত্রীদের কাছে শেখ মুজিবের নিরাপত্তা ও মুক্তির ব্যাপারে হস্তক্ষেপের জন্য আবেদন জানাইয়া তারবার্তা প্রেরণ করিয়াছেন। কমিউনিষ্ট পার্টি ও ন্যাপের নেতৃবৃন্দ ইয়াহিয়া গোষ্ঠীর এই সিদ্ধান্তের নিন্দা করিয়া বলেন যে, ইহা তো বিচার নয়, বিচারের প্রহসন করিয়া শেখ মুজিবকে হত্যার যড়যন্ত্র মাত্র। তাহারা বলেন, ইয়াহিয়ার এই চক্রান্তও তথাকথিত আগরতলা যড়যন্ত্র মামলার ন্যায় একই পরিনতি লাভ করিবে। কমিউনিষ্ট পার্টির জনৈক মুখপাত্র বলেন শেখ মুজিবুর রহমানের বিচার করার কোন অধিকার ইয়াহিয়ার চক্রের নাই। উল্লেখ্য যে, কমিউনিষ্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির এক সভায় সম্প্রতি শেখ মুজিবুর রহমানের বিনাশর্তে মুক্তি দাবী করা হয়। আমাদের নিজস্ব বার্তা পরিবেশক জানানঃ সাংবাদিকদিগকে পীড়ন করিতেছেন। বিভিন্ন পত্রিকার বার্তা সম্পাদক, বার্তা পরিবশেক, আলোকচিত্র শিল্পী প্রভৃতিকে ক্যান্টমেন্টে নিয়া গিয়া শেখ মুজিবের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ সংক্রান্ত বিবৃতিতে স্বাক্ষর আদায় করা হইতেছে। কতকগুলি দালাল সংবাদপত্র এ ব্যাপারে সোৎসাহে সহযোগিতাও করিতেছে।