পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

142 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ ষষ্ঠ খণ্ড শিরোনাম সংবাদপত্র তারিখ সম্পাদকীয় স্বাধীন বাংলা ১ আগষ্ট, ১৯৭১ সংগ্রামী দেশবাসীর প্রতি ১ম বর্যঃ ৪র্থ সংখ্যা সম্পাদকীয় সংগ্রামী দেশবাসীর প্রতি বাংলাদেশের বীর জনগণকে মুক্তি সংগ্রামের একনিষ্ঠ হিসাবে কমিউনিষ্ট পার্টি জানায় বিপ্লবী অভিন্দন। দেশপ্রেমের অগ্নিপরীক্ষায় সগৌরবে উত্তীর্ণ জনগণেঐক্য, সাহস ও সংগ্রামী মনোবল বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সবচেয়ে বড় শক্তি। জনগণের বিজয় অবশ্যম্ভাবী, জনগণের ঐক্যবদ্ধ শক্তি অপরাজেয়-এই দৃঢ় প্রত্যয় লইয়াই কমিউনিষ্ট পার্টি অন্যান্য গণতান্ত্রিক শক্তির সহিত কাধে কাধ মিলাইয়া বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামে অংশগ্রহণ করিতেছি। দসু্য সর্দার ইয়াহিয়া খানের জল্লাদ বাহিনী গত চার মাস ধরিয়া বাংলাদেশে যে নৃশংস গণহত্যা ও পৈশাচিক বর্বরতা চালাইয়া আসিতেছে ইতিহাসে উহার নজির সত্যই বিরল। ইতিহাসে আমরা বহু অত্যাচার উৎপীড়নের কাহিনী পড়িয়াছি কিন্তু একটা নিরস্ত্র জাতিকে পৃথিবীর বুক হইতে নিশ্চিহৃ করিয়া দেওয়ার এই দানবীয় প্রচেষ্টার দৃষ্টান্ত কদাচিৎ দেখা যায়। কিন্তু ইয়াহিয়া বাহিনীর অত্যাচারে যেমন তুলনা নাই, তেমনি বাংলাদেশের গণ-জাগরণও অতুলনীয়। স্বাধীনতার দাবীতে এরূপ একতার দৃষ্টান্ত ইতিহাসে বিরল। মুক্তি সংগ্রামের শুরু হইতে শতকরা একশ জনই স্বাধীনতা সংগ্রামের স্বপক্ষে -প্রতিটি দেশবাসীই স্বাধীনতার সৈনিক। ১৯৪৭ সালে বৃটিশ সরকার এদেশের জনগণের মধ্যে হইতে যতটা বিচ্ছিন্ন ছিল, ইয়াহিয়া শাহী আজ বাংলাদেশের জনগণের সকল শ্রেণী, সকল স্তর হইতে ততোধিক বিচ্ছিন্ন। স্বাধীনতার দাবীতে জনগণের এই সুদৃঢ় ঐক্যও দরুনই ইয়াহিয়া শাহী বিপুল ন্যৈ-সামন্ত ও আধুনিক অস্ত্রশস্ত্ৰ সত্বেও বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামকে দমন করিতে পারিতেছে না। ইয়াহিয়া বাহিনীর শত অত্যাচারও জনগণের মনোবলকো ভাঙ্গিতে পারে নাই। বরং দসু্যবাহিনীর অত্যাচার ও উৎপীরন ইসলামবাদের জঙ্গী শাসক গোষ্ঠীর প্রতি বাংলাদেশের জনগনে ঘৃনাকে তীব্রতর করিতেছে, তাহদের সংকল্পকে আরও সুদৃঢ় করিতেছি। জাতীয় মুক্তির এই সংগ্রামের বিজয়ের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথ উন্মুক্ত হইবে এই আশা নিয়াই দেশবাসী এই মরণপণ যুদ্ধে ঝাপাইয়া পড়িয়াছেন। ইয়াহিয়া-চক্র নৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে ইতিমধ্যেই পরাজিত হইয়াছে, সামরিক ক্ষেত্রেও উহাদের পরাজয় অবধারিত হইয়া উঠিয়াছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অবশ্যম্ভাবী বিজয়ের দৃঢ় আস্থা লইয়া সেই বিজয়কে ত্বরান্তিত করার উদ্দেশ্য ১. বাংলাদেশের প্রতিটি শহর-বন্দর-গ্রাম-গঞ্জ, প্রতিটি গৃহকে শত্রর বিরুদ্ধে প্রতিরোধের দুর্ভেদ্য দূর্গ হিসাবে গড়িয়া তুলুন। ২. জনগণের শক্তিকে সংগঠিত করুন। মনে রাখিবেন পূর্বে আমাদের আন্দোলন ছিল নিয়মতান্ত্রিক ধরনের- উহাতে স্বতঃস্ফুর্ততার উপদান ছিল অধিক। বর্তমান সশস্ত্র শত্রর বিরুদ্ধে সংগ্রামে জয়লাভের জন্য স্বতঃস্ফুর্ততাকে পরিহার করিয়া জনশক্তিকে সংঘবদ্ধরূপে গড়িয়া তুলিতে হইবে। ৩. ছাত্র-যুবক ও শ্রমিকদের পাশাপাশি কৃষক ভাইয়েরা আরও বেশী সংখ্যায় স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণ করুন। মনে রাখিবেন, আমাদের দেশের শতকরা ৮০ জন কৃষিজীবী, কাজে কৃষক সমাস কত অধিক সংখ্যায় ও