পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

144 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ ষষ্ঠ খণ্ড শিরোনাম সংবাদপত্র তারিখ ইয়াহিয়াচক্রকে মদত দেওয়ার জন্য স্বাধীন বাংলা ১ আগষ্ট, ১৯৭১ জাতিসংঘের পর্যবেক্ষক দল ও মার্কিন ১ম বর্যঃ ৪র্থ সংখ্যা ‘বিশেষজ্ঞ' ইয়াহিয়াচক্রকে মদত দেওয়ার জন্য জাতিসংঘের পর্যবেক্ষক দল ও মার্কিন বিশেষজ্ঞ’ (বিশেষ প্রতিনিধি) মার্কিন সাম্রাজ্যবাদীরা কি বাংলাদেশকে ভিয়েতনামে রূপান্ততির করার যড়যন্ত্র আটিয়াছেন? এই অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক প্রশ্নটি আজ সকলের মনকে আলোড়িত করিতেছে। নির্ভরযোগ্য সুত্রে জানা গিয়াছে, মার্কিন জননিরাপত্তার নামে এই বিশেষজ্ঞ ও তাহার শিকারী কুকুরের দলে কাজ হইবে, মুক্তিযুদ্ধ দমনের কাজে ইয়াহিয়ার জল্লাদ বাহিনীকে মদত দেওয়া। এই দায়িত্ব দিয়া যে কুটনীতিকে ঢাকায় পাঠান হইতেছে, এই ধরনের কাজে তাহার নাকি বিশেষ পারদর্শিতা ও পূর্ব অভিজ্ঞতা রহিয়াছে। খবরে প্রকাশ, ইতিপুর্বে এই ব্যাক্তি ভিয়েতনামে নিযুক্ত ছিল এবং সেখানেই বিশেষজ্ঞ হিসাবে হাত পাকায়। পাকিস্তানে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদুত ফারল্যাণ্ড একজন কুখ্যাত সি-আই-এ এজেন্ট । এক সময়ে তিনিও কুটনৈতিক কার্য উপলক্ষে ভিয়তনামে ছিলেন। কাজেই পুলিশ বিশেষজ্ঞ হিসাবে রবার্ট জ্যাকসন রাষ্ট্রদূত ফারল্যাণ্ডের সহিত যোগদান করিলে একবারে সোনায় সোহাগা হইবে তবে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদীদের খেলার এইখানেই শেষ নয়, মাত্র শুরু। ভিয়েতনামেও তাহারা এইভাবেই সৈন্যদল পাঠাবার আগে নগো দিন দিয়েম-চক্রকে মদত দিবার জন্য পুলিশ বিশেষজ্ঞ পাঠাইয়াছিল। বাংলাদেশে ভিয়েতনামের সেই পুরাতন খেলারই পুনরাবৃত্তি হইতে চলিয়াছে মাত্র। বাংলাদেশ সীমান্তে জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞ বসাইবার যে পরিকল্পনা কার্যকর হইতে যাইতেছে উহার পিছনেও রহিয়াছে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদীদের নোংরা হাত। বাংলাদেশে ইয়াহিয়ার জল্লাদ বাহিনীর হাতে দশ লক্ষ নর নারী প্রাণ দিল, মানবাধিকারের পবিত্র সনদ রক্তের বন্যায় ভাসিয়া গেল, জাতিসংঘ টু শব্দটি পর্যন্ত করিল না। হিন্দু মুসলমান নির্বেশেষে পৌনে এক কোটি শরনার্থী ভারতে আশ্রয় গ্রহণ করিয়াছে- জাতিসংঘ তাহাদের রিলিফের দায়িত্ব গ্রহণ না করিয়া বিশ্ববাসীর উদ্দেশ্যে একটি আবেদন জানাইয়া বিবেক পরিস্কার করিয়াছে, অবশেষে মর্কিন সাম্রাজ্যবাদীদের ”গুড বয়” সদরুদ্দিন আগা খান দাওয়াই আবিস্কার করিয়াছে, ভারত বাংলাদেশ সীমান্তে জাতিসংঘ পর্যবেক্ষক বসাইতে দিতে রাজি না হওয়ায় এখন বাংলাদেশের এলাকায় পর্যবেক্ষক নিয়োগের পায়তার চলিতেছে। কিন্তু বাংলাদেশের সরকারও দ্ব্যর্থহীন ভাষায় এই উদ্যোগের বিরোধীতা করিয়াছে। জাতিসংঘ কর্মকর্তাদের জানিয়া রাখা দরকার যে, বাংলাদেশ সরকারের বিনা অনুমতিতে বাংলাদেশের এলাকার মধ্যে পর্যবেক্ষক নিয়োগের কোন অধিকার তাহদের নাই এবং ইহা দ্বারা জটিলতা বৃদ্ধি ছাড়া সমস্যা সমাধানের কোনই সম্ভাবনা নাই। এই মুহুর্তে জাতিসংঘের যাহা করুনীয় তাহা হইল, বাংলাদেশ হইতে দখলকারী বাহিনী সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহার করার জন্য ইয়াহিয়া সরকারকে চাপ দেওয়া। উহা না করিয়া জাতিসংঘ পর্যবেক্ষক বসাইলে বাংলাদেশে স্বাভাবিক অবস্থা বা জনমনে আস্তা ফিরিয়া আসিবে, বাস্তত্যাগ বন্ধ করিয়া জাতিসংঘ পর্যবেক্ষক বসাইলেই বাংলাদেশে স্বাভাবিক অবস্থা বা জনমনে আস্তা ফিরিয়া আসিবে, বাস্তত্যাগ বন্ধ হইবে এবং ভারতে আশ্রয়- প্রার্থীরা প্রত্যাবর্তন করিবে ইহা আশা করা মুখতা ছাড়া আর কিছুই নয়। দুঃখের বিষয়, জাতিসংঘ জানিয়া