পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

150 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ ষষ্ঠ খণ্ড শিরোনাম সংবাদপত্র তারিখ স্বাধীনতার প্রশ্নে আপোষ নাই মুক্তিযুদ্ধ ১ম বর্যঃ ১৩শ ৩অক্টোবর, ১৯৭১ সংখ্যা স্বাধীনতার প্রশ্নে আপোষ নাই (বিশেষ প্রতিনিধি) বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিভ্রান্তি সৃষ্টির উদ্দেশ্য সাম্রাজ্যবাদী গোষ্ঠী ও উহাদের তাবেদার কোন মহল সম্প্রতি অতি তৎপর হইয়া উঠিয়াছে। বীর মুক্তিবাহিনী ও গেরিলাবাহিনীর অকুতোভয় তরুন যোদ্ধারা স্বাধীনতার লাল সূর্যকে ছিনাইয়া আনার জন্য যখন অকাতরে বুকের রক্ত ঢালিতেছেন, তখন ইহাদের কষ্ঠে আপোষের সুর। যে স্বাধীনতার স্বপ্নকে সামনে রাখিয়া দেশবাসী গত ছয় মাস যাবৎ কঠোরতর দুঃখ কষ্ট ও চরম লাঞ্চনা সহ্য করিয়াছেন কিন্তু কখনও হতাশ হন নাই বা ভাঙ্গিয়া পড়েন নাই সেই স্বাধীনতার স্বপ্নকে নস্যাৎ করিয়া দিতে উদ্যত হইয়াছে ইহারা। ইহাদের সম্পর্কে সজাগ থাকা এবং অবিলম্বে উহাদের অশুভ তৎপরতা বন্ধ করা দরকার। গলব্রেথের মিশন ভারতে প্রাক্তন মার্কিন রাষ্ট্রদুত গলব্রেথ খোলাখুলিই বলিয়াছেন স্বায়ত্বশাসন দেওয়া হইলেই পূর্ব বাংলা সমস্যার সমাধান হইয়া যাইবে। অর্থাৎ তাহার মতে স্বায়ত্বশাসনের অধিক কোন কিছুর জন্য জেদ ধরা বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দের পক্ষে ঠিক হইবে না। তিনি নাকি সর্বদলীয় উপদেষ্টা কমিটি গঠনের ব্যাপারে উদ্বেগ গোপন না করিয়া বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিগণকে শাসাইয়াছেন যে, এভাবে চলিলে বাংলাদেশ ভারত ও সোভিয়েত ইউনিয়নের লেজুড়ে পরিনত হইবে। তাহার মত স্বাধীনতার দাবী ছাড়িয়া দিয়া বাংলাদেশের উচিত মার্কিনের মধ্যস্থতায় ইয়াহিয়া-চক্রের সহিত আপোষ মীমাংসার পথে আসা। হাফটনের ফর্মুলা অন্যদিকে বৃটেনের সংসদীয় শ্রমিক দলের চেয়ারম্যান ডগলাস হপফটন সম্প্রতি বলেন, ইয়াহিয়া খান ও আওয়ামীলীগ প্রতিনিধিদিগকে আলোচনা বৈঠকে মিলিত করার ব্যাপারে বৃটেন মধ্যস্থের ভূমিকা গ্রহণ করিতে পারে। তাহার মতে পাকিস্তানের জন্য একটি নয় শাসনতন্ত্র প্রণয়ন কিম্বা ইয়াহিয়া খানের শাসনতন্ত্রে সংশোধনের ব্যবস্থা সন্নিবেশিত করিয়াই সমস্যার সমাধান হওয়া সম্ভব। এ সম্পর্কে মন্তব্য নিম্প্রয়োজন। কিছু দিন আগে ইরানের মারফত মার্কিন সাম্রাজ্যবাদীরা আর এক দফা আপোষের টোপ ফেলিয়াছিল কিন্তু বাংলাদেশ উহাকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করিয়াছে। হিজ মাষ্টারস ভয়েস জল্লাদ ইয়াহিয়াচক্রেও দোসর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও বৃটেনের কোন মুখপাত্র কি বলিল উহা সমস্যা নয়। কারন বাংলাদেশের জনগণ রক্তমুল্যে সাম্রাজ্যবাদীদের স্বরূপ চিনিয়াছে কিন্তু সমস্যা হইতেছে বাংলাদেশের কিছু কিছু মার্কিন-প্রেমীর কার্যকলাপ। ইহারা ইহাদের মার্কিন প্ৰভুদের সুরে সুর মিলাইয়া আপোষের ধুয়া তুলিয়াছে, প্রকাশ্যে আপোষের কথা বলার সাহস না থাকায় গুজবের আশ্রয় লাইয়াছ। গুজবে গুজবে দেশ ছাইয়া