পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

160 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ ষষ্ঠ খণ্ড শিরোনাম সংবাদপত্র তারিখ গ্রাম বাংলায় জঙ্গশাহীর কর্তৃত্ব অচল স্বাধীন বাংলা ১৪ নভেম্বর, ১৯৭১ ১ম বর্যঃ ১৯শ সংখ্যা গ্রাম বাংলায় জঙ্গশাহীর কর্তৃত্ব আচল (নিজস্ব বার্তা পরিবেশক) বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে পাক জঙ্গী শাহীর কর্তৃত্ব সম্পূর্ণ ভাঙ্গিয়া পড়িয়াছে। অধিকৃত এলাকার বিভিন্ন অঞ্চল হইতে আমাদের নিজস্ব সংবাদদাতাগণ যে প্রত্যক্ষদশীর রিপোট পাঠাইয়াছেন তাহাতে বলা হয়, সৈন্যবাহিনী শহরগুলি হইতে সচরাচর বাহির হয় না। তদুপরি পাক জঙ্গীশাহী ভারতের সহিত যুদ্ধ প্রস্তুতির অঙ্গ হিসাবে সেনাবাহিনীর প্রধান অংশকে সীমান্ত অঞ্চলে মোতায়েন করায় অধিকৃত বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে জঙ্গীশাহীর শাসন কার্যত রাজাকার ও অবাঙালী পুলিশ বাহিনীর লুটপাট ও জবরদস্তির মধ্যেই সীমাবদ্ধ কিন্তু অধিকৃত এলাকায় পাক সরকারের প্রশাসন সম্পূর্ণ অচল এবং মুক্তিবাহিনী ও স্থানীয় ভিত্তিতে গড়িয়া ওঠা ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামে পরিষদগুলির কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে। এইসব এলাকায় বাংলাদেশে সরকারের বেসামরিক প্রশাসন চালু করা সম্ভব এবং অত্যান্ত দরকার। পাক হানাদার বাহিনী কর্তৃক অধিকৃত শহরগুলিতে স্কুল-কলেজ কিছু কিছু খোলা হইলেও গ্রামাঞ্চলে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ বন্ধ। পাক দস্য বাহিনী সামরিক অভিযান চালাইবার পর স্থানীয় সমাজ বিরোধী প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি তথা পাক দালালেরা জনসাধারনের উপর নির্যাতন, লুটতরাজ প্রভৃতি দুষ্কর্ম করে। কিন্তু পরবর্তীকালে মুক্তিবাহিনী ও স্থানীয় গেরিলা বাহিনীগুলি সংঘবদ্ধ হইয়া ইহাদিগকে শায়েস্তা করে। বর্তমানে এই মহলটি একেবারে কোনঠাসা এবং মুখচেনা পাক দালালেরা সকলেই গিয়া শহরে আশ্রয় লইয়াছে। গ্রামে যারা আছে তাহারা মৌখিকভাবে হইলেও মুক্তিসংগ্রামের প্রতি সহানুভূতি জানাইয়াছে। কিছু কিছু ভুয়া মুক্তিফৌজ জনসাধানের উপর অত্যাচার করিত। মুক্তিবাহিনী ও গেরিলা বাহিনীগুলো ইহাদিগকেও ঠান্ডা করিয়াছে। অর্থনৈকি সংকট হানাদার বাহিনীর লুটপাট,অগ্নিসংযোগ, ধবংসাত্মক কার্যকলাপের ফলে জনজীবনে দারুন অর্থনৈতিক সঙ্কট সৃষ্টি হইয়াছে। গত আউশের মওশুমে ধান হয় নাই-পাক সেনাদের অত্যাচারে কৃষকরা ধান বুনিতে ও প্রভৃতির আয়ের কোন পথ নাই। ধান -চাউলের দর কোন কোন জায়গায় খুবই বেশী- বরিশালের একটি এলাকা হইতে আমাদের প্রতিনিধি জানইতেছেন, সেখানে নতুন আউশের চাল প্রতিমন ৬০ টাকা দরে ক্রয়