পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/২০৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

170 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ ষষ্ঠ খণ্ড বাণিজ্য চালু করা। তবে, সেরূপ ক্ষেত্রে যাহাতে বিশৃঙ্খলা ও অবাধ মুনাফার প্রবণতা দেখা না দেয় তাহার জন্য বর্তমান পরিস্থিতিতে জনগণের প্রয়োজনের প্রতি লক্ষ্য রাখিয়া ব্যবসা বানিজ্য সরকারী নিয়ন্ত্রণে ও কো-অপারেটিভ ভিত্তিতে পরিচালিত হওয়া উচিত তাহারা মনে করেন। প্রশাসন মুক্ত অঞ্চলসমূহে বাংলাদেশ সরকারের বেসামরিক প্রশাসন চালু হইতেছে । আমাদের প্রতিনিধি জানাইতেছেন, রংপুরের মুক্তাঞ্চলগুলিতে থানা প্রশাসন চালু হইয়াছে, অসামরিক প্রশাসনের জন্য অনেক এলাকার আঞ্চলিক কাউন্সিল গঠন করা হইতেছে। বাংলাদেশ সরকারের রাজস্ব আদায় শুরু হইয়াছে এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও কিছু কিছু খোলা হইতেছে। ভুরুঙ্গামারী ও নাগেশ্বরী এলাকায় সরকারী হাট-বাজার হইতে তোলা আদায় করিতেছেন। প্রতিরক্ষা ও করিতেছেন। এই বিষয়ে সরকারের সতর্ক সৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন। বর্তমান অবস্থায় শুধু সচ্ছল ব্যবসায়ীর নিকট হইতেই তোলা আদায় করা উচিত বলিয়া মুক্তাঞ্চলের মানুষ মনে করেন। প্রয়োজন ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা মুক্তাঞ্চলের বহুমুখী জটিল সমস্যা সমাধানের জন্য প্রয়োজন দক্ষ দুনীতিমুক্ত ও সুষ্ঠু প্রশাসন গড়িয়া তোলা। ইহার জন্য বাংলাদেশ সরকার ও মুক্তিযুদ্ধে শরিক সকল দলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা প্রয়োজন হানাদার পাকিস্তানীরা বিতরিত হওয়ার পর কোন এলাকায় যাহাতে প্রশাসনিক শূন্যতা দেখা না দেয় তাহার জন্য প্রশাসনকে জনগণ ও সকল গণতান্ত্রিক দলের সক্রিয় অংশগ্রহণ সম্ভব করিয়া তুলিতে হইবে। প্রয়োজন। কিন্তু এ যাবৎ যে সকল জোনাল, সাব-জোনাল, থানা ও ইউনিয়ন কাউন্সিল গঠন করা হইয়াছে, সেগুলি কোনটি সর্বদলীয় ভিত্তিতে গঠিত হয় নাই। শুধু অফিসারদের বড়জোর অফিসার ও আওয়ামী লীগের লোকজন লইয়া গঠিত হইয়াছে। অথচ সব জায়গাতেই স্থানীয় জনসাধারণ দলমত নির্বিশেষে তাহদের বিশ্বাসভাজন নেতৃবৃন্দকে এই প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত দেখিতে চান। মুক্তাঞ্চলের থানাগুলিতে পুলিশ ও কর্মচারীর সংখ্যা প্রায়শই নগণ্য। এ ক্ষেত্রে সকল সংগ্রামী দল ও গণসংগঠন হইতে যুবকদের নিয়া স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী গড়িয়া তোলার প্রয়োজনীয়তা মুক্তাঞ্চলের মানুষ অনুভব করিতেছেন। পুনর্বাসন, খাদ্য ও চিকিৎসার ক্ষেত্রে যে তীব্র অভাব রহিয়াছে, সর্বদলীয় রিলিফ কমিটি গঠন করিয়া উহার কাজের সহিত সরকারী প্রশাসনের সমন্বয় সাধন করিয়া তাহা মোকাবিলা করিতে হইবে। ইতিপূর্বে ফুলবাড়ীর মুক্তাঞ্চল সর্বদলীয় রিলিফ কমিটি গঠনের সংবাদ মুক্তিযুদ্ধে প্রকাশিত হইয়াছে। এইরূপ রিলিফ কমিটি সকল মুক্তাঞ্চলে গড়িয়া তোলা দরকার। জনগণের মনোবল অটুট আছে আমাদের প্রতিনিধি জানাইতেছেন, মুক্তাঞ্চলের সর্বত্রই বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জনগণ বিপুলভাবে অভিনন্দিত করিতেছেন। মুক্তাঞ্চলের যুবকরাও মাতৃভূমিকে সম্পূর্ণ শত্ৰকবলমুক্ত করার সংকল্প লইয়া ট্রেনিং গ্রহণ করিতেছেন এবং জনগণ মুক্তিবাহিনীর সহিত পূর্ণ সহযোগিতা করিতেছেন।