পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/২১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

181 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ ষষ্ঠ খণ্ড শিরোনাম ংবাপত্র তারিখ সম্পাদকীয় সোনার বাংলা আগষ্ট, ১৯৭১ বিশ্ববিবেক নীরবতার প্রেক্ষিতে ১ম বর্ষঃ ৬ষ্ঠ সংখ্যা বিশ্ববিবেক নীরবতার প্রেক্ষিতে বিশ্বপলিটব্যুরোর বুড়োদের কি ভীমরতী ধরেছে? বাংলার মুক্তিযুদ্ধ সাত মাস অতিক্রান্ত। শরণার্থীদের সংখ্যা ভারতে দিন দিন বাড়ছেই, তেমনি বাড়ছে আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের গেরিলা তৎপরতা। অনেকেই বাংলার লালরং দেখে গেলেন। শরণার্থীদের বুকফাটা কান্না শুনে গেলেন। ভালো ভালো কান্নাজড়ানো, জ্ঞানিকথা কপচানো বিবৃতিও দিয়ে গেলেন। কিন্তু তাদেরকে প্রশ্নঃ এগুলো রসগোল্লা ফিরিস্তি কি উপদেশ ঝাড়া নয়? যখন জল থেকে বালককে উদ্ধার করাটা সবচেয়ে প্রথম কর্তব্য তখন এহেন উপদেশ প্রহসন নিশ্চয়ই নিম্প্রয়োজন। কিন্তু তাদের কাছে, না কোন আবেদন বা আজ্ঞে হুজুরের নিবেদন নয়। বাঙালী জেগেছে-এ কথাটা এখন পুরনো। বাঙালী কোনদিন ঘুমিয়ে ছিল এবং নির্যাতিত, শোষিত, লাঞ্ছিত বন্দি কি কখনো ঘুমায়-তা তাদের অবশ্যই জানা উচিত। আর যদি ঘুমায় কখনো, তবে তাদের জানা উচিত এ তাদের চির জাগ্রত নিদ্রা। বাঙালী জাতির ইতিহাস চিরকালই ঘুম ভাঙ্গানোর ইতিহাস-একটা বিশেষ লাল ঐতিহ্য। অতএব তাদেরকে অনুরোধ, তারা আর মিছামিছি বড় বড় আলোচনা বৈঠক না করে, আশা দিয়েও আর হতাশ করবেন না। এতো রক্ত, এতো শহীদানের পর পাকিস্তানের ক্রমেই বাংলাকে বেঁধে রাখার অপচেষ্টা করে আমাদের স্বাধীনতা অর্জনকে বিলম্বিত করবেন না। আমাদের এ যুদ্ধ আমাদের প্রিয়তম নেতার সুরে সুর মিলিয়ে বলি-এ সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এ সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। চলছে, চলবে। তবে হ্যাঁ বিশ্ববিবেকের ধুয়া তুলে, শুধু কথা এবং আশা দিয়ে নয় আসুন আমরা সবাই মিলে, কি হিন্দু কি মুসলিম, কি খৃষ্টান সব সাম্প্রদায়িকতার উর্ধ্বে উঠে নির্বিশেষে আমাদের এই মহৎ সংগ্রাম যাতে আরো এগিয়ে যায় তার পথকে সুগম করার চেষ্টা করি।