পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/২২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

188 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ ষষ্ঠ খণ্ড সম্প্রতি কুয়ালালামপুরে অনুষ্ঠিত সপ্তদশ কমনওয়েলথ শারদীয় অধিবেশনে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর বর্বর অত্যাচারের তীব্র সমালোচনা করা হয় তাছাড়াও সিংহল, ফিলিপিন, নেপাল, ইংল্যাণ্ড প্রভৃতি দেশে বাংলাদেশের মিশণ স্থাপিত হতে যাচ্ছে। সমগ্র পরিস্থিতি দৃষ্টে এটুকু আশা করা যায় যে বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রাম তার সর্বাঙ্গীণ রূপ পরিগ্রহ করছে এবং সে তার আপন অধিকার শুধু দেশের মাঝেই সীমিত রাখবে না বিশ্বের মাঝেই সে তার স্থান করে নেবে। বিশ্বের গণতন্ত্রে বিশ্বাসী শান্তিকামী মানুষের যেমন সমর্থন সে কামনা করছে তেমনি বিশ্বের শোষণ মুক্তির প্রতিটি সংগ্রাম সে করবে সমর্থন। সংগ্রামের যথার্থ মুহুর্তেই সূচিত হয়েছে আমাদের এই কূটনৈতিক তৎপরতা। বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ এলাকা আজ হানাদারমুক্ত। বাংলাদেশ সরকার সেখানে তাদের কর্তৃত্ব সম্পূর্ণ বজায় রেখে চালিয়ে যাচ্ছেন প্রশাসন ব্যবস্থা। ঠিক এই পরিস্থিতিতে তার স্বীকৃতির প্রয়োজনে কূটনৈতিক কার্যপদ্ধতি অত্যন্ত প্রয়োজন। তবে এটা ঠিক যে আমাদের এই কূটনৈতিক তৎপরতায় চিনে নিতে হবে আমাদের হিতাকাঙ্খীদের। কারণ ইতিহাস আমাদের দেখিয়ে দিয়েছে যে মিত্ররূপী শত্র একটা দেশকে ধ্বংস করে দেয়ার জন্য কিনা করেছে। কূটনৈতিক ফাঁদে পড়ে বাংলাদেশ সমস্যার যে অপঘাত হতে যাচ্ছিল ওই তৎপরতায় প্রমাণিত হল যে বাংলাদেশের সংগ্রাম একমুখী নয়। শত্রর প্রতিটি আস্তানায় হানা দেবে বাঙালার বীর সন্তানরা এবং তারা হবে জয়ী। শুধু দু’চারটি দেশে নয় এশিয়া, আফিকা, ইউরোপ ও লাতিন আমেরিকার যে দেশগুলো আমাদের সংগ্রামের প্রতি সহানুভূতিশীল সে সব দেশেও আমাদের মিশন স্থাপন করতে হবে এবং কুটনৈতিক বোঝাপড়ার মাধ্যমেই গড়ে তুলতে হবে আমাদের পররাষ্ট্র নীতি। বেসামাল জঙ্গীশাহী আগ্ৰাণ চেষ্টা করেছে বাংলাদেশে দালালশাহী প্রবর্তনের। প্রতিক্রিয়াশীল ও ধর্মান্ধ রাজনৈতিক দলগুলোকে এক করে চেষ্টা করছে দালাল গণতন্ত্র সৃষ্টির। এর পেছনে যুক্তি একটি সেটা হ’ল বিশ্ব জনমতকে বিভ্রান্ত করা। অতএব আমাদের প্রতিটি পদক্ষেপ হবে সংগ্রামী পদক্ষেপ। আমাদের ধরে নিতে হবে যে আমরা প্রতিটি পদক্ষেপে সংগ্রামের সম্মুখীন হচ্ছি এবং যে সংগ্রাম আমাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে। শত্রর প্রতিটি গতিবিধি লক্ষ্য রেখে পরিচালিত করতে হবে আমাদের সংগ্রাম কৌশল।