পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/২৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

199 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ ষষ্ঠ খণ্ড শিরোনাম ংবাদপত্র তারিখ সম্পাদকীয় ংলার মুখ ১০ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তোমার স্বপ্ন সফর তোমার বাংলা স্বাধীন ১ম বর্ষঃ ১২শ সংখ্যা সম্পাদকীয় তোমার স্বপ্ন সফল তোমার বাংলা স্বাধীন জয় নব অভু্যত্থান জয় বাংলাদেশ, জয় বাংলার সাড়ে সাত কোটি সংগ্রামী নর-নারীর ত্যাগ, তিতিক্ষা, অশ্রু আর রক্তের। জয় বিশ্বের স্বাধীনতা সংগ্রামী জনগণের। বঙ্গবন্ধু বাংলার যে স্বপ্ন দেখেছেন, যে স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্যে আত্মত্যাগ করেছেন তা আজ সফল। ভারত আর ভুটানকে বাংলাদেশের স্বীকৃতির জন্যে, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র এবং সর্বোপরি লাঞ্ছিত মানবতার জন্যে আত্মত্যাগ এবং চরম বলিষ্ঠতার জন্যে বাংলার সাড়ে সাত কোটি মানুষ জানাচ্ছেন অন্তরের গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা। সাম্রাজ্যবাদ গোষ্ঠী, মানবতা বিরোধীদের শেষ গোরস্তান আজ বাংলাদেশ। সাড়ে সাত কোটি বাঙালীর আশা-আকাঙ্কার স্বাধীন দেশ পৃথিবীর বৃহত্তম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের স্বীকৃতি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মুক্তিবাহিনীর হানাদার সেনা নিধনের অভিযান সাফল্যের দ্বারপ্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে। মুক্তিবাহিনীর সাথে ভারতীয় বাহিনীর যোগদানে যুদ্ধ-পরিস্থিতির বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটছে। মুক্তিবাহিনী এবং ভারতীয় বাহিনীর যুক্ত আক্রমনে হানাদার পাকসেনাদের ঘাঁটিগুলোর পতন ঘটছে এবং হানাদার সেনারা পিছু হটে যাচ্ছে। মুক্তিবাহিনী এবং ভারতীয় বাহিনীর মিলিত আক্রমনের মুখে বহু হানাদার পাক সেনা নিহত ও আহত হয়েছে এবং বিভিন্ন অংশে অনেক হানাদার পাকসেনা আত্মসমর্পণ করেছে। পাকিস্তান বিশ্ব সভ্যতার সব রকম নীতিমালাকে অস্বীকার করে ভারতের বিভিন্ন অংশে বিমান আক্রমন চালিয়ে উপমহাদেশের শান্তিপূর্ণ অবস্থার মধ্যে সংকটের সৃষ্টি করেছে। পাকিস্তানী সামরিকচক্র আমাদের স্বাধীনতার স্বপ্নকে ধূলিসাৎ করবার জন্যে ভারত আক্রমন করেছে। আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপের তথা ঈঙ্গ-মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী শক্তি হস্তক্ষেপের মাধ্যমে আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামকে বানচাল করবার জন্যে এক আন্তর্জাতিক সমস্যা সৃষ্টিতে লিপ্ত হয়েছে পাকিস্তান। বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষ যে স্বাধীনতার মন্ত্রে উদ্দীপ্ত তা আন্তর্জাতিক চক্রান্তের জাল ছিন্ন করে বিশ্বের দরবারে যে মর্যাদা অর্জন করেছে তা রক্ষা করতে বদ্ধপরিকর জনগণ মুক্তিবাহিনী এবং ভারতীয় বাহিনীকে সর্বাত্মক সাহায্য দিয়ে চলেছে। মুক্তিবাহিনী এবং ভারতীয় বাহিনীর আক্রমনে পূর্ব রণাঙ্গনে ফেনী, লাকসাম, সিলেট শক্ৰ কবলমুক্ত হয়েছে। উত্তর এবং উত্তর পশ্চিম রণাঙ্গনেও ব্যাপক সাফল্য লাভের খবর পাওয়া গেছে। যশোর ক্যান্টনমেন্ট এবং বিমানবন্দরে পাকিস্তানী সেনাদের পতন ঘটেছে। এছাড়া চট্টগ্রাম জেলার রামগড়, কক্সবাজার, বান্দরবনও শক্ৰকবলমুক্ত হয়েছে।