পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/২৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

210 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ ষষ্ঠ খণ্ড শিরোনাম সংবাদপত্র তারিখ সম্পাদকীয় বিপ্লবী বাংলাদেশ ১৭অক্টোবর, ১৯৭১ তথ্য সংগ্রহ ও অন্য কাজ ১ম বর্ষঃ ৯ সংখ্যা সম্পাদকীয় তথ্য সংগ্রহ ও অন্য কাজ গেরিলা যুদ্ধের মূল নীতিই হলো Hit and Run অর্থাৎ আঘাত করো এবং করেই সরে পড়ো। কিন্তু সাধারণ বুদ্ধিতেই বোঝা যায় যে, শত্রুজোরালো হলে তাকে আঘাত করা সহজ নয়। তখন শত্রকে প্রথমে দুর্বল করে নিতে হয়, অথবা তার দুর্বলতম স্থান খুঁজে বার করতে হয়। শত্রকে দুর্বল করে তুলতে হলে তার সংযোগগুলো ছিন্ন করা প্রয়োজন। এ কাজটা অবরোধের পর্যায়ে পড়ে, যা আগেই আলোচনা করা হয়েছে। আর শত্রর দুর্বলতম স্থান খুঁজে বের করতে হলে চাই শক্র সম্বন্ধে তথ্য সংগ্রহ করা, অর্থাৎ জনসংযোগ। এ সম্বন্ধেও আগে লেখা হয়েছে। এবার আলোচ্য বিষয় হলো ঠিক কোন উপায়ে বাংলাদেশে মুক্তিবাহিনী এই ধরনের কার্যকলাপ চালাতে পারে। প্রথমে তথ্য সংগ্রহের কথাই আলোচনা করা যাক। গ্রামাঞ্চলে তথ্য সংগ্রহ করবে গ্রামবাসীরাই। তাদের সামান্য শিক্ষা দিলেই তারা হানাদার পাক সৈন্যদের সম্বন্ধে খবর জোগাড় করতে পারে। যথাঃ ১। ছাউনীর আয়তন ও তার পাহারার ব্যবস্থা, যা থেকে অনুমান করা যেতে পারে যে মোটামুটি কতজন সৈন্য সেখানে আছে। ২। গাড়ীর সংখ্যা ও সেগুলির সৈন্য বহন ক্ষমতা। ৩৷ সাধারনতঃ কি ধরনের ও কতো অস্ত্র নিয়ে সৈন্যরা চলাফেরা করে। ৪। পেট্রলের প্রাপ্তিস্থান ও পরিমাণ, যার থেকে আন্দাজ করা যেতে পারে গাড়ী নিয়ে পাক সৈন্য কতদূর অবধি হানা দিতে পারে। ৫। গাড়ীগুলোতে কি কি অস্ত্র বহন/চালনার ব্যবস্থা আছে। ৬। গাড়ী চলবার মত রাস্তা কোথায় কোথায় আছে। ৭। জলযান আছে কি না, এবং থাকলে গাড়ীর মতোই সেগুলো সম্বন্ধেও তথ্য সংগ্ৰহ ৮। রসদ আসে কোন পথ দিয়ে, কবে কবে, কখন কখন, এবং তার সাথে কি ধরনের/পরিমানের প্রহরা থাকে। ৯। ছাউনীর কাছে ধারে আড়াল রেখে মুক্তিবাহিনীর লড়াই চালাবার মতো কোন ঝোপ-জঙ্গল, টিলাপাহাড়, নদ-নদী আছে কিনা, এবং থাকলে কতো আছো। ১০। মুক্তিবাহিনী কোন পথে যাতায়াত করতে পারে, কিভাবে এবং কখন। ১১। পাক সৈন্য কখন বিশ্রাম করে বা অসতর্ক থাকে। এসব তথ্য সংগ্রহ করা একটা অসম্ভব কিছু ব্যাপার নয়। সামান্য নজর রাখলেই দুয়েকজন গ্রামবাসী দশ পনেরো দিনে এইসব খবর যোগাড় করে দিতে পারে।