পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/২৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

213 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ ষষ্ঠ খণ্ড তারা ভুল ধারণা পোষণ করে এখনো তুচ্ছ সংকীর্ণতার আবর্তে হাবুডুবু খাচ্ছে। পাকিস্তান স্বাধীনতা লাভের পর স্বার্থবাদী শাসক চক্র হিন্দুদেরকে সংখ্যালঘু বলে চিরদিন দাবিয়ে রেখেছে। ক্ষমতার রাজনীতিতে পাক স্বার্থবাদী গোষ্ঠী বার বার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে। অথচ তাঁর প্রথম থেকেই যদি শাসক চক্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতেন তাহলে হয়তো স্বার্থবাদী গোষ্ঠীর চক্রান্ত তাসের ঘরের মত ভেঙ্গে গুড়িয়ে যেত। আজো তেমনি ভুলের বশবর্তী হয়ে কিছু সংখ্যক যুবক নিরপেক্ষকের ভূমিকা অবলম্বন করেছে, এ সত্যি দুঃখজনক ঘটনা। বাংলাদেশে যখনি ন্যায়ের দাবিতে জনতার কষ্ঠে সোচ্চার হয়ে উঠেছে তখনি স্বার্থবাদী শাসক সম্প্রদায় ভারতের সঙ্গে বিরোধ নয় তো ধর্মের নামে ঘৃণ্য সাম্প্রদায়িকতা সৃষ্টি করে জনতার কণ্ঠকে স্তব্ধ করেছে। এর জন্য বার বার বলি হয়েছে নিরীহ মানুষ। বার বার রক্তে রঞ্জিত হয়েছে বাংলার মাটি। কিন্তু স্বার্থবাদী গোষ্ঠীর মুখোশ খুলে গেছে এবার। তাই বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষ লক্ষ লক্ষ শহীদের বেদীমূলে দাঁড়িয়ে ঘৃণ্য সাম্প্রদায়িকতা বিসর্জন দিতে সক্ষম হয়েছে। পাক সাম্প্রদায়িক সরকারের সর্ব প্রকারের উস্কানি ব্যর্থ করে দিয়েছে বাংলার সংগ্রামী জনতা। বাংলার মানুষ আজ বাঙ্গালী। হিন্দু-মুসলমান-বৌদ্ধ-পৃষ্টান নয়, তারা বাংলার মানুষ। জাতি ধর্মের উপরে যে মানব ধর্ম সেই মহান ধর্মে উদ্বুদ্ধ আজ বাঙ্গালী জাতি। লক্ষ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে যে বাংলাদেশ আজ পৃথিবীর মানচিত্রে স্থান করে নিয়েছে সে দেশ শুধু মুসলমানের নয়। হিন্দু-মুসলমান-বৌদ্ধ-পৃষ্টান সবার দেশ বাংলাদেশ। তাই আসুন আমাদের সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দেশমাতৃকার শৃঙ্খল ছিন্ন করে হানাদার শেষ করে পূত পবিত্র করে গড়ে তুলি জননী জন্মভূমি বাংলাদেশকে।