পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/২৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

232 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ ষষ্ঠ খণ্ড শিরোনাম সংবাপত্র তারিখ জাতিসংঘের সাহায্য সামগ্ৰী নিয়ে বাংলার বাণী ১৪ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১ ছিনিমিনি খেলা মুজিব নগরঃ ৩য় সংখ্যা জাতিসংঘের সাহায্য সামগ্ৰী নিয়ে ছিনিমিনি খেলা (বিশেষ প্রতিনিধি) বাংলাদেশের দখলীকৃত এলাকায় পশ্চিম পাকিস্তানী হানাদার সেনাবাহিনী জাতিসংঘের সাহায্য কেন্দ্রের গাড়ীগুলি যথেচ্ছভাবে সামরিক কাজে ব্যবহার করিতেছ। লুটতরাজ, অগ্নিসংযোগ, নারী নির্যাতন এবং গণহত্যায় লিপ্ত পাকফৌজের পক্ষে সামরিক বাহিনীর গাড়ীর পরিবর্তে জাতিসংঘের গাড়ী ব্যবহার করা অধিকতর সুবিধাজনক। বিশ্বস্তসূতে জানা গিয়ছে, নভেম্বর মাসে বাংলাদেশে যে প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিবাত্যার ফলে লক্ষ লক্ষ মানুষ প্রাণ হারায় ঐসময়ে ত্রাণকার্যে সুবিধার জন্যে এইসব গাড়ী বাংলাদেশে আনা হইয়াছিল। জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক জরুরী শিল্প-কল্যাণ তহবিল পরেও সাহায্য কার্যেও জন্য আরও কিছু গাড়ী প্রেরণ করিয়াছে। এইসব গাড়ী ছাড়াও তখন নরওয়ে এবং অন্যান্য স্কাণ্ডিনেভিয়ান দেশ বহু যন্ত্রচালিত ও রবারের নৌকা ত্রাণকার্যেও জন্য দান করিয়াছিল। দখলদার পাকিস্তানী জঙ্গশাহী দুঃস্থ মানুষের সাহায্যেও জন্য প্রদত্ত সেই সমস্ত জলযানসমূহও সামরিক কার্যে ব্যবহার করিতেছে। সম্প্রতি মুক্তিযোদ্ধারা খুলনায় একটি পকিস্তানী গানবোট দখল করিয়াছেন। তাঁহারা খখিয়াছেন, এই গানবোট জাতিসংঘের প্রদত্ত জলযানসমূহেরই একটি। পাকিস্তানী সৈন্যরা এগুলির কিঞ্চিৎ সংস্কার করিয়া পাকিস্তানী সৈন্যরা যে শুধু জতিসংঘের গাড়ীই ব্যবহার করিতেছে তাহা নহে। তাহারা বাত্যাবিধ্বস্ত মানুষের জন্য প্রদত্ত কাপড়-চোপড়, খাদ্য-ঔষধপত্র সমস্তই নিজেদের প্রয়োজনে ব্যবহার করিয়াছে। সর্বশেষ সংবাদে জানা গিয়াছে, ইউরোপের তিনটি দেশ জাতিসংঘ ত্রাণসামগ্রীর এইরূপ অপব্যবহার সম্পর্কে জাতিসংঘের সেক্রেটারী জেনারেলের সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রক্ষা করিয়া চলিতেছে। দেশত্রয় মনে করে-অবিলম্বে পাকিস্তানকে জাতিসংঘের সকল প্রকার সাহায্যদান বন্ধ করা উচিত। এদিকে বাংলাদেশ সরকার জাতিসংঘকে জানাইয়া দিয়াছেন যে, পাকিস্তান জঙ্গীচক্র ইউনিসেফ (Unicef) প্রদত্ত গাড়ীগুলি সামরিক কার্যে ব্যবহার করিতেছে। লণ্ডনস্থ বাংলাদেশ মিশন বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ হইতে জাতিসংঘের কাছে এই অভিযোগ পেশ করিয়াছে।