পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/২৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

258 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ ষষ্ঠ খণ্ড গোষ্ঠীগত স্বার্থরক্ষা এবং রাজনৈতিক ভারসাম্য বজায় রাখার স্বার্থে বাংলাদেশের মানুষের রক্ত স্রোতকে ব্যবহার করিতে দেওয়া হইবে না। পূর্ণ স্বাধীনতাই আমাদের লক্ষ্য।” বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী মহল জন্য আমাদিগকে মরিতে দিন।” নিউইয়র্কে জাতিসঙ্ঘের চার্চ সেন্টারে এক সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তৃতাকালে গত শুক্রবার জাতিসঙ্ঘে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতা বিচারপতি জনাব আবু সাঈদ চৌধুরী বাংলাদেশের পক্ষ হইতে সমগ্র বিশ্বকে জানাইয়া দিয়াছেন বঙ্গবন্ধুর মুক্তি, বাংলাদেশের স্বীকৃতি এবং দখলদার বাহিনীর অপসারণ ছাড়া কোন রাজনৈতিক সমাধানই বাংলাদেশের জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হইবে না। এদিকে গত শনিবার সৈয়দ নজরুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ মন্ত্রী সভার এক বৈঠকের পর ঘোষণা করা হইয়াছে যে, পূর্ণ স্বাধীনতাই আমাদের লক্ষ্য। এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য আমরা বিশ্ববাসীর সাহায্য ও সহযোগিতা চাই।’ সুতরাং এ ব্যাপারে কোন জল্পনা কল্পনা বা সন্দেহের অবকাশ নাই যে মৃত পাকিস্তানকে জীবিত করিয়া বাঙ্গালী জাতি কোন অবস্থাতেই ইয়াহিয়ার সঙ্গে কোনও আপোষে রাজী হইবে না। ইহার পরে আসে রাজনৈতিক সমাধানের প্রশ্ন। এ ব্যাপারেও বাঙ্গালী জাতির বক্তব্য অতি সুস্পষ্ট। পূরণের মাধ্যমে রাজনৈতিক সমাধানের দারোদঘাটিত হইতে পারে। ইহা ছাড়া রাজনৈতিক সমাধানের নামে অন্য কোন গোঁজামিল বাংলার মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হইবে না। ইহা কিসের আলামত বাঙ্গালী জাতি রাজী হইবে না বলিয়া স্পষ্টভাবে উপলব্ধি করিয়াই ইয়াহিয়া খান আবার বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে অস্ত্র শাণাইতে শুরু করিয়াছে। একটি বিদেশী বার্তা প্রতিষ্ঠান জানাইয়াছেন, বঙ্গবন্ধুকে বিচার প্রহসনের মাধ্যমে যে শাস্তি দেওয়া হইবে উহা যাতে বিশ্বজনমতকে বিক্ষুব্ধ করিতে না পারে তজ্জন্য প্রবল প্রচারণা চালাইবার জন্য পশ্চিম পাকিস্তানী জঙ্গশাহী বিদেশস্থ উহার কূটনৈতিক মিশনগুলিকে নির্দেশ প্রদান করিয়াছে। এক সার্কুলারে জঙ্গীশাহী সংবাদপত্র জগতকে এ ব্যাপারে প্রভাবান্বিত করার জন্য মিশনগুলির প্রতি নির্দেশ দিয়াছে। সামরিক জান্তা বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দানের জন্য ঢাকা হইতে ৪ জন সাংবাদিক, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ জন শিক্ষক, ২ জন ব্যাঙ্ক কর্মকর্তা এবং বিপুলসংখ্যক বাঙ্গালী সামরিক ও বেসামরিক কর্মচারীকে পশ্চিম পাকিস্তানে চালান দিয়াছে। খবরে প্রকাশ, ঢাকা ত্যাগের আগে এই সব “সাক্ষীকে” তালিম দেওয়া হইয়াছে। সাক্ষ্যদানকালে তাদের বলিতে হইবে যে শেখ মুজিব নিজেই অবাঙ্গালীদের হত্যা করার হুকুম দিয়াছিলেন। সাক্ষীদের কেহ কেহ ইতিমধ্যেই ঢাকা ফিরিয়া আসিয়াছে, অন্যরা এখনও পশ্চিম পাকিস্তানে সুরক্ষিত বন্দীশালায় আটক রহিয়াছে। ইহারা কোথায় আছে, সে কথা তাদের পরিবার পরিজনকেও জানিতে দেওয়া হয় না। ২০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ গত মঙ্গলবার জঙ্গীশাহীর এক ঘোষণায় বলা হয় যে, শেখ মুজিবের বিচার প্রহসনে এ পর্যন্ত মোট ২০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হইয়াছে এই ঘোষণার উদ্ধৃতি দিয়া রাওয়ালপিণ্ডি হইতে এ, পি, এ, জানান যে, বঙ্গবন্ধুর বিচার প্রহসন চলিতেছে। ঘোষণায় বলা হয় যে, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার অভিযোগ বিগত ৭ই সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধু গোপন বিচার পুনরায় শুরু হইয়াছে। জঙ্গীশাহী জানায় যে, জনাব এ, কে, ব্রোহী, vshs