পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/২৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

260 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ ষষ্ঠ খণ্ড শিরোনাম সংবাদপত্র তারিখ বিশ্ববাসী রুখিয়া দাঁড়াও ংলার বাণী ১২ অক্টোবর, ১৯৭১ মুজিব নগরঃ ৭ম সংখ্যা সম্পাদকীয় বিশ্ববাসী রুখিয়া দাঁড়াও মস্তিষ্ক বিকৃতি রোগীর বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে যেমন পাগলামীর তীব্রতাও বৃদ্ধি পাইতে থাকে তেমনি পাইতেছে। অগ্নিকুণ্ডে ঝাঁপাইয়া পড়ার পরিণতি আত্মঘাতী অপমৃত্যু জানিয়াও ইয়াহিয়া খান নিজের হাতে এই উপমহাদেশে একটা ভয়াল যুদ্ধের দাবানল ছড়াইয়া দিয়া একটা ভয়াবহ সর্বনাশের সূচনা না করিয়া ছাড়িবে বলিয়া মনে হইতেছে না। অবস্থাদৃষ্টে এই ধারণা পোষণ না করিয়া পারা যায় না যে, ইয়াহিয়া খান আজ যুদ্ধই চায়- ‘টোটাল ওয়ার’, সে চায় সর্বাত্মক যুদ্ধ। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ক্রমাগত মার খাইতে খাইতে দিশাহারা বেসামাল ইয়াহিয়া খান আজ চাহিতেছে আরও বড় যুদ্ধ- সর্ববিধ্বংসী পাক-ভারত যুদ্ধ। ইসলামাবাদের জঙ্গীশাসক কুল চূড়ামণি ইয়াহিয়ার এই রণোন্মাদনা নতুন কিছু নয়। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ শুরু হইবার পর উহাকে ভারতের কারসাজি বলিয়া আখ্যায়িত করিয়া সে বার বার ভারতের মুণ্ডপাত করিয়াছে, বার বার ভারতের বিরুদ্ধে রণহুঙ্কার ছাড়িয়াছে। পশ্চিম পাকিস্তানী, জঙ্গীশাহীর এই উন্মত্ত সহযোগিতার চুক্তি। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা সেদিন সংগত কারণেই প্রত্যাশা করিয়াছিলেন যে এই চুক্তি রণোন্মাদ ইয়াহিয়ার যুদ্ধের খায়েশ চিরতরে মিটাইয়া দিতে সক্ষম হইবে। কিন্তু সাগরে যে ঘর বাঁধিয়াছে শিশিরে আর তার ভয় কি? যে ডুবিতেছে, অতলান্ত সমুদ্রের গভীরে কি ভয়াবহ পরিণতি অপেক্ষা করিতেছে উহা বিবেচনার অবকাশ তাহার কোথায়। তাই প্রত্যাসন্ন ভরাডুবির মুখে হিংস্র হয়েনার শেষ মরণ কামড়ের মতই নরদসু্য ইয়াহিয়া আজ পরিত্রাণের সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, ইয়াহিয়ার রণপ্রস্ততি চরমে উঠিয়াছে। বাংলার বাণীর বিশেষ প্রতিনিধি জানাইয়াছেন, জঙ্গীশাহী ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, যশোহর, রাজশাহী প্রভৃতি অধিকৃত শহরে ব্যাপক যুদ্ধ প্রস্তুতি গ্রহণ করিয়াছে। বাংলাদেশে অধিকৃত এলাকার শহরসমূহ এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ইতিমধ্যেই বিমানবিধ্বংসী কামান বসানো হইয়াছে, স্থাপিত হইয়াছে দূরপাল্লার কামান, খনন করা হইয়াছে সুগভীর পরিখা। ইহারই পাশাপাশি করোগেটেড টিন সহযোগে নির্মিত হইতেছে বাঙ্কার। চট্টগ্রাম হইতে শুরু করিয়া ফেনী, চৌদ্দগ্রাম কুমিল্লা সব খানেই পশ্চিম পাকিস্তানী সৈন্যরা নিজেরদের অবস্থান সুরক্ষিত করিতেছে। সীমান্তবর্তী এলাকায় কারফিউ জারি হইয়াছে। সীমান্তের দশ মাইল অভ্যন্তর পর্যন্ত জনপ্রাণীশূন্য করার কাজ পুরাদমে চলিতেছে। ক্যান্টনমেন্টগুলিতে বিপুল পরিমাণ সামরিক সরঞ্জাম ও অস্ত্রশস্ত্র মজুদ করা হইয়াছে। এদিকে বিদেশী বার্তা সংস্থার খবরে জানা যায় পশ্চিম পাকিস্তানে পুরাদমে রণপীয়তারা চলিতেছে। শহরে বন্দরে সর্বত্র ব্লাক আউটের মহড়া চলিতেছে। বিপুল সেনা সমবেশ ঘটানো হইয়াছে ভারত সীমান্তে। শতদ্রত