পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৩০৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

271 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ ষষ্ঠ খণ্ড শিরোনাম ংবাদপত্র তারিখ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধঃ বাংলার বাণী ৯ নভেম্বর, ১৯৭১ প্রতিক্রিয়া মুজিবনগরঃ ১১শ সংখ্যা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধঃ প্রতিক্রিয়া যতই দিন যাইতেছে ইসলামাবাদের জঙ্গীশাহীর বিরুদ্ধে বিশ্ববিবেক ক্রমে ততই সোচ্চার হইয়া উঠিয়াছে। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রচণ্ড আক্রমণের মুখে ইয়াহিয়ার লেলাইয়া দেওয়া পশুদের দিশাহারা হইয়া পড়ার খবর আর গোপন নাই। অর্থনৈতিক অবস্থা অচল হইয়া পড়িয়াছে। বাংলাদেশের সকল বন্দর অকেজো। পশ্চিম পাকিস্তানের চরম বেকার সমস্যা, ছাঁটাই বরখাস্ত ও দেদার লক আউটের খবর শুধু পশ্চিম পাকিস্তানের সভ্যতার ঘৃণ্যতম শক্র খুনী ইয়াহিয়ার সকল চক্রান্তের খবর। আমরা এমনি কিছু পত্রপত্রিকার উদ্ধৃতি এখানে বাংলার বাণীর পাঠক পাঠিকাদের সামনে তুলিয়া ধরিতেছি। ডেইলী টেলিগ্রাফ বৃটিশ জাহাজ কোম্পানীর জনৈক মুখপাত্র বলিয়াছেন প্রায় তিন মাস যাবত আমরা বাংলাদেশের কোন নৌবন্দরে জাহাজ পাঠাই নাই। গত অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে ডেইলী টেলিগ্রাফের সংবাদাতার নিকট উক্ত মুখপাত্র এই তথ্য প্রকাশ করেন। এই জাহাজ কোম্পানী পৃথিবীর প্রায় সকল দেশে মালপত্র পরিবহন করে। বাংলাদেশ হইতে অধিকাংশ পাট এবং পাটজাত দ্রব্য এই জাহাজ কোম্পানীর মারফতই রপ্তানী করা হইত। মুখপাত্রটি বলেন, আমাদের এই সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশের অধিকৃত অঞ্চল তথা ইসলামাবাদের জঙ্গী সরকারের অর্থনীতির উপর ভীষণ চাপ পড়িবে। আশাহি সিজুন জাপান হইতে প্রকাশিত “আশাহি সিম্বন’ পত্রিকা এক সম্পাদকীয় নিবন্ধে বলিয়াছে ভারত উপমহাদেশে উত্তেজনা হাসের প্রথম পদক্ষেপ হিসাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে অবশ্যই অনতিবিলম্বে পাকিস্তানকে সকল সামরিক সাহায্যদান বন্ধ করিতে হইবে। ইহার কারণ ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে উক্ত পত্রিকা বলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া সামরিক সাহায্য পশ্চিম পাকিস্তানী সামরিক জান্তাদেরই শক্তিশালী করিয়া তুলিতেছে এবং তাহা বাংলাদেশে তাহদের বর্বর কার্যক্রম চালাইয়া যাওয়ায় সহায়তা করিতেছে। ইহার ফলে প্রতিদিন চল্লিশ হাজার শরণার্থী বাংলাদেশ হইতে পালাইয়া ভারতে আশ্রয় গ্রহণ করিতে বাধ্য হইতেছে। সম্পাদকীয় প্রবন্ধে এই অভিমত ব্যক্ত করা হয় যে বাংলাদেশে পশ্চিম পাকিস্তানী জঙ্গীচক্রের সামরিক কার্যক্রমের সমর্থনে যে সকল সামরিক সাহায্য বিদেশ হইতে প্রদান করা হইতেছে অনতিবিলম্বে তাহা বন্ধ করা উচিত।