পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৩২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

289 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ ষষ্ঠ খণ্ড শিরোনাম সংবাদপত্র তারিখ আপোষ নয়, পূর্ণ স্বাধীনতা পাঁচ নতুন বাংলা ১৬ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১ পার্টির যুক্ত ঘোষণা মুজিবনগরঃ ৫ম সংখ্যা আপোষ নয়, পূর্ণ স্বাধীনতা পাঁচ পার্টির যুক্ত কমিটি গঠন ও যুক্ত ঘোষণা (বিশেষ প্রতিনিধি) বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম পরিচালনার ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারকে উপদেশ প্রদানের জন্য বাংলাদেশের পাঁচটি রাজনৈতিক দলকে লইয়া একটি উপদেষ্টা (কনসালটেটিভ) পরিষদ গঠিত হইয়াছে। এই রাজনৈতিক দলগুলি হইতেছে আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, ভাসানী পন্থী ন্যাপ, বাংলাদেশের কমিউনিষ্ট পার্টি ও বাংলাদেশ ন্যাশনাল কংগ্রেস। গত বুধবার মুজিব নগরে অনুষ্ঠিত ঐ পাঁচটি রাজনৈতিক দলের শীর্ষ স্থানীয় নেতৃবৃন্দের এক যুক্ত বৈঠকে উপরোক্ত উপদেষ্টা পরিষদ গঠিত হয়। বৈঠকে গৃহীত এক প্রস্তাবে ঘোষণা করা হয় যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রশ্নে কোন আপোষ হইবে না- পূর্ণ স্বাধীনতা অর্জন না হওয়া পর্যন্ত সংগ্রাম অব্যাহত থাকিবে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের পক্ষে প্রধানমন্ত্রী জনাব তাজউদ্দীন আহমদ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী জনাব খোন্দকার মোশতাক আহমদ, জনাব মনসুর আলী, জনাব কামরুজ্জামান, জনাব আবদুস সামাদ, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির পক্ষে অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ, ভাসানীপন্থী ন্যাপের পক্ষে মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, বাংলাদেশের কমিউনিষ্ট পার্টির পক্ষে শ্রী মণি সিং এবং বাংলাদেশ ন্যাশনাল কংগ্রেসের পক্ষে শ্রী মনোরঞ্জন ধর। যেই উপদেষ্টা পরিষদটি গঠিত হইয়াছে, উহার সদস্যসংখ্যা ৮ জন। এই সদস্যবৃন্দ হইতেছেনঃ মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী (ভাসানীপন্থী ন্যাপ), শ্রী মণি সিং (বাংলাদেশের কমিউনিষ্ট পার্টি), শ্রী মনোরঞ্জন ধর (বাংলাদেশ ন্যাশনাল কংগ্রেস), অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ (বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি) এবং বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে প্রধানমন্ত্রী জনাব তাজউদ্দীন আহমদ ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী জনাব খোন্দকার মোশতাক আহমদ। পরিষদে আওয়ামী লীগের পক্ষে দুইজন সদস্য থাকিবেন। তাঁহাদের নাম পরে জানান হইবে। পরিষদের বৈঠক পরিচালনা করিবেন প্রধানমন্ত্রী জনাব তাজউদ্দীন আহমদ। পরবর্তী বৈঠক খুব শীঘ্রই অনুষ্ঠিত হইবে বলিয়া জানা যায়। প্রস্তাবাবলীঃ গত বুধবারের পাঁচ পার্টির ঐ যুক্ত বৈঠকে মোট ৭টি প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। প্রস্তাবাবলীর সংক্ষিপ্ত বিবরণ নিন্মে প্রদত্ত হইলঃ সভায় শেখ মুজিবের বিচার প্রহসনের গভীর ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। এই বিচার প্রহসন বন্ধ করার জন্য জাতিসংঘ ও বিশ্বের সকল শক্তির প্রতি আহবান জানান হয়। সভায় বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আন্তরিক আস্থা ও পূর্ণ সমর্থন প্রকাশ করা হয়। এক প্রস্তাবে বাংলাদেশ সরকারকে স্বীকৃতি প্ৰদান ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বাস্তবতা স্বীকার করিয়া লওয়ার জন্য ভারত ও বিশ্বের দেশগুলির প্রতি আহবান জানান হয়।