পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৩৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

300 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ ষষ্ঠ খণ্ড শিরোনাম সংবাদপত্র তারিখ অবিলম্বে সংগ্রামের নতুন বাংলা ২১ অক্টোবর, ১৯৭১ সকল স্তরে ঐক্য চাই ১ম বর্ষঃ ১০ম সংখ্যা অবিলম্বে সংগ্রামের সকল স্তরে ঐক্য চাই (নিজস্ব ভাষ্যকার) ২০শে অক্টোবর ৬ মাসেরও অধিককাল অতিবাহিত হইল। সংগ্রামের সকল স্তরে এখনও ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হইল না। মুক্তি সংগ্রামে ঐক্যের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করার বিশেষ প্রয়োজন পড়ে না। বিশেষতঃ বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রাম আজকের এই মুহুর্তে যে পর্যায়ে আসিয়া উপনীত হইয়াছে, সেখানে সংগ্রামের সকল স্তরে ঐক্য ও সংহতি স্থাপন একেবারে অপরিহার্য হইয়া উঠিয়াছে। মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী খুঁটির জোরে পাকিস্তান বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামকে ভারতের কাজ বলিয়া প্রমাণের বলিয়াছি মুক্তি সংগ্রামকে তীব্রতর করার মধ্য দিয়া এবং শক্রকে চরম আঘাত হানিয়াই এই চক্রান্তের জবাব দিতে হইবে। অন্যথায় এই চক্রান্ত সফল হইলে বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের ক্ষেত্রে সাময়িকভাবে হইলেও বিঘ্ন সৃষ্টি হইবে। বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী লীগ এই ঐক্য ও সংহতির জন্য বারবার প্রচেষ্টা চালাইয়া আসিতেছে। বাংলাদেশের কমিউনিষ্ট পার্টির এই প্রচেষ্টা চালাইয়া আসিতেছে। সম্প্রতি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জনাব তাজউদ্দিন আহমদও মুক্তিফৌজের সদ্য ট্রেনিংপ্রাপ্ত জোয়ানদের এক সমাবেশে ভাষণ দানকালে এই ঐক্যের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করিয়াছেন। আজ (বুধবার) ২০শে অক্টোবর আওয়ামী লীগের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হইতেছে। সময়ের দিক হইতে এই বৈঠক খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল আশা করেন যে, ইতিপূর্বে উপদেষ্টা পরিষদ গঠনের ব্যাপারে যে প্রজ্ঞা প্রদর্শন করা হইয়াছে, আওয়ামী লীগের এই বৈঠকে সংগ্রামের সকল স্তরে ঐক্য স্থাপনের ব্যাপারে ততোধিক প্রজ্ঞা প্রদর্শিত হইবে। আমাদের মনে রাখিতে হইবে যে, মুক্তিযুদ্ধে নিয়োজিত সংগ্রামী রাজনৈতিক দল ও শক্তিসমূহের সার্বিক ঐক্যই আমাদের শক্তি। অনৈক্যের ফলে শক্ররই লাভ হইতে পারে। তাহা ছাড়া দেশমাতৃকার প্রশ্নে ভেদ বুদ্ধি সংকীর্ণতার কোন অবকাশ থাকিতে পারে না আর যদি থাকে তাহা হইলে তা শক্রকেই সাহায্য করে শক্র এখন চরম খেলায় মাতিয়া উঠিয়াছে। আশা করা হইতেছে, সংগ্রামী শক্তিসমূহের সুদৃঢ় সংহতি স্থাপন করিয়া শক্রর খেলাকে বানচাল করা হইবে এবং বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামকে তুরান্বিত করা হইবে।