পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৩৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

310 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ ষষ্ঠ খণ্ড (৩) এই চরম বিপদের দিনে যে সব বন্ধুরাষ্ট্র (ভারত, রাশিয়া, পোলাও ও অন্যান্য সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র) (৪) স্বাধীন বাংলাদেশকে গড়িয়া তুলিতে হইবে স্বাধীন প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বলাবাহুল্য, ইহা হইবে একটি সত্যিকারের ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র অর্থাৎ সকল ধর্মের সমান অধিকার থাকিবে। (৫) পার্লামেন্ট হইবে সার্বভৌম-জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই দেশ শাসন করিবেন। প্রাপ্তবয়স্করাই ভোট দিতে পরিবেন। নির্বাচন হইবে যুক্ত। (৬) বিচার বিভাগ শাসন বিভাগ হইতে পৃথক হইবে। (৭) নর-নারী জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকলের সমান অধিকার থাকিবে। (৮) নিরপেক্ষ ও স্বাধীন বৈদেশিক নীতি গ্রহন করিবে। ভারত ও সোভিয়েট ইউনিয়ন প্রভৃতি গণতান্ত্রিক ও সামাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র এবং সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত দেশগুলির সহিত সখ্যের সম্পর্ক গড়িয়া তুলিবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের স্বপক্ষে দাঁড়াইবে। সিন্ধি, বালুচ, পাঠান প্রভৃতি নিপীড়িত সকল জাতির সহিত মৈত্রী সম্পক গড়িয়া তুলিবে। (৯) সাম্রাজ্যবাদী শক্তিসমূহের সহিত কোনরূপ অসম চুক্তি করিবে না। (১০) দেশের এক চেটিয়া বৃহৎ পুঁজিপতিদের অধিকার খর্ব করা হইবে। ভারী ও মূল শিল্প জাতীয়করণ করিবে একচেটিয়া পুঁজিবাদ গড়িয়া উঠিতে দিবে না। ছোট ও মাঝার জাতীয় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড উৎসাহিত করিবে। ব্যাঙ্ক, ইনসিওরেন্স, বৈদেশিক বাণিজ্য রাষ্ট্রায়ত্ত করা হইবে । (১১) ভূমির সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণ করবে। অতিরিক্ত মালিকদের যথাযোগ্য ক্ষতিপূরণ দিবে। বাড়তি জমি গরীব ও ভূমিহীন কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করবে। (১২) শ্রমিক কর্মচারীদের ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার ও ন্যায্য মজুরির নিশ্চয়তা বিধান করিবে। ক্ষেত মজুররা যাহাতে কাজ পায় ও ন্যায্য মজুরি পায় মূল্য কৃষককে দিবার সুব্যবস্থা করিবে। (১৩) পাট শিল্প ও চা শিল্প জাতীয়করণ করা হইবে এবং কৃষক যাহাতে পাটের ন্যায্য মূল্য পায় তাহার বাস্তব ব্যবস্থা করিবে। অন্যান্য কৃষিপণ্যের ন্যায্য মূল্য কৃষককে দিবার সুব্যবস্থা করিবে৷ (১৪) দালালদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করিবে৷ (১৫) বাক ও ব্যক্তি স্বাধীনতা, সভাসমিতি ও সংগঠন করার নিশ্চয়তা থাকিবে। (১৬) জনগণের মিলিশিয়া থাকিবে। (১৭) শিক্ষা ব্যবস্থাকে বৈজ্ঞানিক মতে আধুনিকীকরণ করবে। মাতৃভাষাই হইবে শিক্ষার মাধ্যম। (১৮) সার্বজনীন অবৈতনিক শিক্ষার মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত চালু করিতে হইবে। (১৯) কারিগরী শিক্ষার প্রসারের উপর গুরুত্ব দিতে হইবে। (২০) জাতীয় মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারীদের যথাযোগ্য মর্যাদা ও স্বীকৃতি প্রদান করিবে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারবর্গকে সাহায্য দিবে।