পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৩৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

316 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ ষষ্ঠ খণ্ড শিরোনাম সংবাদপত্র তারিখ সম্পাদকীয় মুক্তবাংলা ৪ অক্টোবর, ১৯৭১ প্রধানমন্ত্রীর আহবান ১ম বর্ষঃ ৩য় সংখ্যা সম্পাদকীয় প্রধানমন্ত্রীর আহবান গণপ্রজাতান্ত্রিক বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী জনাব তাজউদ্দীন আহমদ বিশ্বজনগণ এবং পশ্চিম পাকিস্তানী মজলুম জনতার বিবেকের কাছে একখানা আবেদনপত্র পেশ করেছেন। আবেদনপত্রে ইয়াহিয়া খানের সৈন্যবাহিনী কর্তৃক বাংলাদেশে অবাধ গণহত্যা, নারীনির্যাতন, লটতরাজ ও গৃহদাহের করুণ বর্ণনা দিয়ে প্রধনমন্ত্রী বিশ্বের গণবিবেককে আহবান জানিয়েছেন মানবতার এ জঘন্য অপমানকে বন্ধ করতে বিশ্বের গণবিবেক ইতিমধ্যেই জেগেছে। ৫টি মহাদেশের গণকণ্ঠই বজ্রস্বরে আজ আওয়াজ তুলছে স্বৈরাচারী ইয়াহিয়া খানের নারকীয় কাণ্ডবের বিরুদ্ধে। কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানী জনগণ এখনো চুপ কেন? স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগেঃ বাংলাদেশে ইয়াহিয়া খানের অবাধ নরহত্যা তথা ব্যাপক অরাজকতা সম্পকে ওরা কি ওয়াকিবহাল নয়? অথবা জেনেশুনেই তাঁদের এ উদাসীনতা? কিন্তু আমরা জানি তারা উদাসীন কিংবা বাংলাদেশ সম্পর্কে সম্পূর্ণ অজ্ঞ নয়। তাঁরা বাকশক্তিহীন। স্বাধীনতা তথা পাকিস্তান রাষ্ট্র সৃষ্টি হওয়ার পরেও তাঁরা যে তিমিরে ছিলেন সেই তিমিরেই রয়ে গেছেন। সামন্তচক্র, তাদের দোসর পুঁজিবাদী-মহল ও স্বেরাচারী শাসকগোষ্ঠীর স্বার্থে মোল্লাদের মাধ্যমে ধর্মের দোহাই দিয়ে জ্ঞান-বিজ্ঞানের আলো থেকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে রাখা হয়েছে তাদেরকে। স্বাধীনতার চবিবশ বছরে বাংলাদেশে লুটপাট করে যা ধনসম্পদ ওখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তার সবকিছুই ব্যয়িত হয়েছে সর্দার, পীর, মীর, সাহেবজাদা প্রভূতি বিভিন্ন খেতাবে পরিচিত সমাজচক্র ও তাদের দুস্কার্যের দোসর পুঁজিপতি মহল এব্য স্বেরাচারী শাসক গোষ্ঠীর আয়েস-আরামের প্রতি লক্ষ রেখেই গরীব-জনসাধারণ তাতে একটুও উপকৃত হয়নি। তারা দিন-আনে দিন-খায় পাকিস্তানি গণতন্ত্রের শেষ ভরসা ছিলো বাংলাদেশ। তাই পশ্চিম পাকিস্তানী সামন্ত গোষ্ঠী, পুঁজিপতি ও স্বৈরাচারী শাসকচক্রের বাংলাদেশকে এতো ভয়। আর সেই হেতু পাকিস্তানে জন্মলগ্ন থেকেই ওরা ডিভাইড এণ্ড রুল -এর আশ্রয় নিয়ে সুকৌশলে পশ্চিম পাকিস্তানি সরলমনা জনগণের কানে কানে বাঙালী মুসলমানেরা পালন করে না। ধর্মের জন্য সত্যিকারের মহব্বৎ বাঙালী মুসলমানদের নেই, ইত্যাদি ইত্যাদি। এই সেদিনও জাতীয় পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবার পূর্ব মুহুর্তে ইসলামের ধ্বজাধারী মাওলানা নামে পরিচিত ফ্যাসিস্ট রাজনৈতিক দলের ডিরেক্টর মওদুদী সাহেব (পাঞ্জাবে দশ হাজার কাদিয়ানী হত্যার করানোর নায়ক) বাংলাদেশ সফর করে লাহোরে পৌঁছেই বলেছিলেন, বাঙালী মুসলমানেরা কালীপূজা করে থাকে। কিন্তু মওদুদী সাহেবের ঐ নতুন আবিস্কারে বাঙালী মুসলমানেরা মনে কোনো আঘাত পায়নি। শুধু কৌতুক অনুভবই করেছ। কারণ তাদের জানা আছে ইসলাম ধর্মের মুলগ্রন্থ কুরআন শরীফে মহানবী মোহাম্মদ (দঃ)কে খাতেমূন-নবী’ বা সর্বশেষ নবী বলে উল্লেখ করে নবীদের আর্বিভাবের সমাপ্তি ঘোষণা করলেও পাঞ্জাবে