পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৪৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

407 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ ষষ্ঠ খণ্ড শিরোনাম সংবাদপত্র তারিখ শরণার্থী শিবিরে- দেশ বাংলা ১৮ নভেম্বর, ১৯৭১ ১ম বর্ষঃ ৪র্থ সংখ্যা শরণার্থী শিবিরে (শিবির প্রতিনিধ) এখনো শরণার্থীরা আসছেনঃ ৫ লক্ষ শিশু মারা যাবে ? শরণার্থীরা বিনিদ্র রাত কাটাচ্ছেন ভারত সরকার ইসিএমে’র সাহায্য চেয়েছেন পশ্চিম বাংলার সীমান্তবর্তী জেলাসমূহের শরণার্থী শিবিরগুলিতে এখনো প্রতিদিনই হাজার হাজার নতুন শরণার্থী এসে পৌছাচ্ছেন। ওদিকে পাকিস্তানী কর্তৃপক্ষ দাবী করছে, বাংলাদেশের পরিস্থিতি শান্ত এবং শরণার্থীরা ধীরে ধীরে ফিরে যাচ্ছেন। কোথাও কোথাও পৈতৃক ভিটামাটির আকর্ষণে কিছু কিছু শরণার্থী ফিরে যাবার চেষ্টা যে করছেন না, তা নয়। কিন্তু প্রায় ক্ষেত্রেই মাঝপথ থেকেই তাঁদের ফিরে আসতে হচ্ছে। যারা কোন প্রকারে নিজ নিজ গ্রামে পৌছাতে পেরেছেন তাঁদেরও অধিকাংশকে পুনরায় ভারতে চলে আসতে হচ্ছে। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী এলাকায় এ ধরণের ঘটনা নিত্যই ঘটছে। তাছাড়া মুক্তিবাহিনীর তৎপরতা বাড়ার সাথে সাথে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী জেলাগুলির এবং ক্ষেত্র বিশেষে অভ্যন্তর ভাগেরও বহু থানা, ইউনিয়ন এমনকি মহকুমা এখন কার্যতঃ মুক্তাঞ্চল। কিন্তু পাক-বাহিনীর দূর পাল্লার কামান ও বিমান হামলা এ সব এলাকার সাধারণ মানুষ যারা এতদিনও কোনপ্রকারে ভিটেমাটি আঁকড়ে থেকেছে তারা এখন নিরাপদ বাংলাদেশের ভেতর বিস্তীর্ণ অঞ্চলে চাষাবাদ বন্ধ থাকায় এবং বাড়তি এলাকা থেকে ঘাটতি এলাকায় খাদ্যশস্যাদির সরবরাহ না থাকায়, স্থানে স্থানে চরম দুর্ভিক্ষাবস্থা দেখা দিয়েছে। তাছাড়া উন্নয়নমূলক কার্যকলাপ বন্ধ থাকায় এবং ব্যবসা-বাণিজ্যে অচলবস্থা দেখা দেওয়ায় দিনমজুর ও বেসরকারী সংস্থার কর্মচারীরা অধিকাংশই এখন বেকার হয়ে পড়েছেন। এ ধরণের ব্যক্তিরা নেহাৎ পেটের তাড়ায় দেশত্যাগে বাধ্য হচ্ছেন এবং স্ত্রী-পুত্র-পরিজন নিয়ে শরণার্থী শিবিরগুলিতে আশ্রয় নিচ্ছেন। জলপাইগুড়ি, কুচবিহার, পশ্চিম দিনাজপুর, মালদহ, নদীয়া, চবিবশপরগনা প্রত্যেক জেলায় দৈনিক কয়েক হাজার নতুন শরণার্থী আসছেন। এদের অধিকাংশই হচ্ছেন মুসলমান চাষী ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর। গত সপ্তাহে কেবলমাত্র নদীয়া জেলাতেই দশহাজার নতুন শরণার্থী সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে এসেছেন। 米 শরণার্থী শিবিরগুলিতে শিশুখাদ্যের অভার ক্রমেই বাড়ছে। কতিপয় বিদেশী ত্রাণসংস্থা এবং ভারতীয় রেডক্রস-এর পক্ষ থেকে মাঝে মাঝে কিছু পরিমাণ শিশুখাদ্য সরবরাহ করা হলেও, তা প্রয়োজন মেটাতে পারছে না। শিবিরবাসীরা প্রায়ই অভিযোগ করে থাকেন, তাঁদের প্রাপ্য শিশুখাদ্য সঠিকভাবে বিতরণ করা হয় না। বিভিন্ন শিবিরে অপুষ্টিজনিত কারণে শিশুমৃত্যের হার মারাত্মক রকমে বেড়েছে। কিছুদিন পূর্বে জাতিসংঘের জনৈক