পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৪৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

410 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ ষষ্ঠ খণ্ড শিরোনাম সংবাদপত্র তারিখ সম্পাদকীয় দেশ বাংলা ৯ ডিসেম্বর, ১৯৭১ কাল রাত্রির অবসান নতুন সূর্যের অভু্যদয় ১ম বর্ষঃ ৬ষ্ঠ-৭ম সংখ্যা সম্পাদকীয় কাল রাত্রির অবসানঃ নতুন সূর্যের অভ্যুদয় স্বাধীন গণপ্রজাতান্ত্রিক বাংলাদেশ সরকারকে আনুষ্ঠানিকভারে স্বীকৃতি দিয়েছেন ভারত সরকার। সাড়ে সাত কোটি বাঙালীর অকৃত্রিম সুহৃদ ভারত প্রতিবেশীর প্রতি, মানবতার প্রতি, সর্বোপরি গণতন্ত্রের প্রতি তার দায়িত্ব পালন করেছে পরিপূর্ণভাবে। দেশ বিভাগের ডামাডোলে বাংলার শ্যামল মাটিতে সাম্রাজ্যবাদী মূল্যবোধ পদদলিত করে উপ-মহাদেশের বুকে হিংসার রাজনীতি, দসু্যতার রাষ্টনীতি এবং শোষণের অর্থনীতি কায়েম রাখার চক্রান্ত চালিয়ে এসেছে, বাংলাদেশের মুক্তিকামী জনতা এবং সংগ্রামরত মুক্তিবাহিনীর সহায়তায় এগিয়ে গিয়ে ভারতের বীর সেনাবাহিনী আজ তার গোড়া ধরে টান দিয়েছে। এই উপমহাদেশের শান্তি ও সমৃদ্ধির ক্ষেত্রে স্বাধীন বাংলাদেশের অভু্যদয় তাই একটি অন্ধকার যুগের অবসান, আরেকটি আলোকোজ্জ্বল নতুন যুগের উদ্বোধন। পাকিস্তানী দস্যবৃত্তির বিষদাঁত ভেঙ্গে ফেলার সাথে সাথে ভারত বাংলা উপমহাদেশে আগামী দিনেও শান্তি ও সমৃদ্ধির নতুন দুয়ার উন্মুক্ত হলো। গত চবিবশ বছর এই দরিদ্র উপমহাদেশের সীমিত সম্পদের বৃহত্তম অংশ যুদ্ধ প্রস্তুতি এবং পারস্পারিক হানাহানির মাশুল জোগাতেই নিঃশেষ হয়েছে। এখন থেকে বাংলাদেশ ও ভারতের পারস্পারিক হৃদ্যতা, সহযোগিতা ও পরস্পর নির্ভরশীলতার পটভূমিতে উপমহাদেশের সকল সম্পদ শান্তিও সমৃদ্ধির কাজে লাগানো সম্ভব হবে। বহিঃশত্রর আক্রমনের আশঙ্কামুক্ত পরিবেশে দু'দেশেই নিজ নিজ জাতীয় সম্পদের পরিপূর্ণ ব্যবহারের মাধ্যমে স্বনির্ভর অর্থনীতি গড়ে তুলতে সক্ষম হবে। ভিক্ষাপাত্র হাতে বিদেশী সাম্রাজ্যবাদের দ্বারে দ্বারে আর ঘুরে বেড়াতে হবে না। বলা বাহুল্য কেবল ভারত-বাংলা উপমহাদেশের জন্যই নয়, বিশ্বরাজনীতির ক্ষেত্রেও উপমহাদেশের আভ্যন্তরীন সংঘাতের অবসান এবং অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতার যুগান্তকারী তাৎপর্য রয়েছে। আগামী দিনের বিশ্বরাজনীতিতে এই উপমহাদেশ অন্যতম প্রধান বৃহৎশক্তি’ হিসাবে গণ্য হবে,-একথা আজ নিশ্চিত রূপেই বলা চলে। স্বাধীনতার এই স্বর্ণফসল। স্মরণ করি তাঁদের যাঁরা আজো বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভিন্নভাবে স্বাধীনতাকে বাস্তবরূপ দেবার জন্য নিরলসভাবে সংগ্রাম করে চলেছেন। সর্বোপরি স্মরণ করি স্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, বাংলার মানুষের প্রাণপ্রিয় নেতা, প্রেসিডেন্ট মুজিবকে, যিনি আজও স্বদেশ-স্বজন থেকে বহু দূরে দসু্যশিবিরে বন্দীদশায় রয়েছেন। তাঁর সোনার স্বদেশ মুক্ত হয়েছে। তিনিও মুক্ত হবেন। সেদিন আর দূরে নয়। এই মহালগ্নে আমরা ভারত সরকার, ভারতের জনগণ, সোভিয়েট সরকার, সোভিয়েট জনগণ এবং বিশ্বের অন্যান্য গণতন্ত্রকামী মানুষ, যাঁরা আমাদের দুঃখদিনের সাখী হয়েছেন, সাহয্য সহানুভূতি দিয়ে আমাদের