পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৪৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

441 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ ষষ্ঠ খণ্ড শিরোনাম সংবাদপত্র তারিখ শ্রীমতি গান্ধী পশ্চিম সফরান্তিক অভিযান ১৮ নভেম্বর, ১৯৭১ সাফল্য ১ম বর্ষঃ ১ম সংখ্যা শ্রীমতি গান্ধী পশ্চিম সফরান্তিক সাফল্য তিন সপ্তাহকাল পশ্চিমের বিভিন্ন দেশ সফর করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী গত ১৩ই নভেম্বর স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করেছেন। তা সফরসূচীর অন্তর্ভুক্ত দেশগুলো ছিল বেলজিয়াম, অষ্ট্রিয়া, বৃটেন, আমেরিকা, ফ্রান্স ও পশ্চিম জার্মানী। বর্তমান সফর পশ্চিমের দেশের রাষ্ট্রনায়কদের সাথে বাংলাদেশ প্রশ্ন আলোচনায় মোটামুটিভাবে সন্তুষ্ট হয়েছেন বলে শ্রীমতি গান্ধী পালাম বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের কাছে মন্তব্য করেন। পর্যবেক্ষকমহল মনে করেন, যে সমস্ত দেশ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে এতোদিন পাকিস্তান সরকারকে সাহায্য করে আসছিল শ্রীমতি গান্ধীর সফরে সে সমস্ত দেশগুলো এখন অন্ততঃ নিরপেক্ষ থাকবে বলে আশা করা যায়। শ্রীমতি গান্ধীর পশ্চিম দেশ সফরের উদ্দেশ্য সম্পর্কিত প্রশ্ন আলোচনার পূর্বে আমাদের জানা দরকার বাংলাদেশ প্রশ্ন প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য কি রকম। শ্রীমতি গান্ধী প্রথম থেকেই বলে আসছেন যে, বাংলাদেশ সমস্যা পাকিস্তানের আভ্যন্তরীণ ব্যাপার এবং ভারত তাতে হস্তক্ষেপ করার বিরোধী। কিন্তু বাংলাদেশে গণহত্যা পরিস্থিতির ফলে লক্ষ লক্ষ লোক যে ভারতে শরণার্থী হয়েছেন এটাও একটি বাস্তব সত্য। ভারত মানবতার খাতিরেই তাদের আশ্রয় দিয়েছে এবং তা ভারতের অর্থনীতিতে একটা প্রচণ্ড আঘাত। সুতরাং এই বাংলাদেশ সমস্যা এদিক দিয়ে একটি আন্তর্জাতিক সমস্যা। বাংলাদেশে এখনও জঙ্গীশাহী গণহত্যা অব্যহত রেখেছে। এমতাবস্থায় শরণার্থীদের ভারত পুনরায় মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিতে পারে না। তাহলে মানবতা কথাটা হয়ে পড়বে অর্থহীন। শরণার্থীও এই পরিস্থিতিতে স্বদেশে ফিরে যেতে মোটেই রাজী নন। বাংলাদেশে তাই প্রয়োজন আশু রাজনৈতিক সমাধান। এই বক্তব্যের আলোকেই এখন বিচার করে দেখতে হবে বর্তমান সফরের উদ্দেশ্য। এটা বুঝতে কারুরই কষ্ট হওয়া উচিত নয় যে, বাংলাদেশ সমস্যার সঠিক যৌক্তিকতা পশ্চিমী দেশগুলোকে অনুধাবন করাবার প্রচেষ্টাতেই শ্রীমতি গান্ধীর এই সফর। পাকিস্তান এতোদিন ধরে প্রচার করে বেড়িয়েছে যে বাংলাদেশের স্বাদীনতা সংগ্রাম সর্বৈব মিথ্যা এবং ভারতের কারসাজীতেই বিচ্ছিন্নতাবাদীর অনুপ্রবেশকারীদের সাথে পূর্ব বাংলায় নানারকম নাশকতামূলক কাজে অংশ নিয়েছে। পাকিস্তানী প্রচারের এই ধুম্রজালসৃষ্টি হয়ত বিশ্বের বৃহৎ শক্তিগুলোকে বিভ্রান্ত করেছে। আর তারই ফলশ্রতিতে পাকিস্তান পেয়েছে বিভিন্ন রাষ্ট্রের কাছ থেকে সামরিক সাজ সরঞ্জাম। কিন্তু সামরিক সাজ সরঞ্জাম পাওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধারা একের পর এক বিজয় অর্জন করে দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছে। বিপুলসংখ্যক পাকসেনা খতম ও জখম হওয়ার ফলে পাকিস্তানী সামরিক বাহিনী এখন ভাঙনের মুখোমুখি। এই ভাঙনকে ঠেকাতে বিকল্প কর্মসূচী অবশ্যই ইয়াহিয়া খাঁকে পেশ করতে হবে। ইয়াহিয়া খাঁ ইতিমধ্যেই বিকল্প পন্থা হিসাবে যুদ্ধের দামামা বাজিয়েছেন। রণহুংকার ছেড়েছেন ভারতের বিরুদ্ধে। ভারতের সাথে যুদ্ধ