পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৫০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

465 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ ষষ্ঠ খণ্ড শিরোনাম সংবাদপত্র তারিখ বিশ্বাসঘাতকতার পথ এখনও অভিযান ২৫ নভেম্বর, ১৯৭১ পরিহার করুন ১ম বর্ষঃ ২য় সংখ্যা বিশ্বাসঘাতকতার পথ এখনও পরিহার করুন তা না হলে মৃত্যুর গ্লানিকর শাস্তিই হবে একমাত্র অবশ্যম্ভাবী পরিণতি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জনাব তাজউদ্দিন আহমদ গত ২৩শে নভেম্বর জাতির উদ্দেশ্যে এক বেতার ভাষণে বলেছেন, মুক্তিবাহিনীর আক্রমণ তীব্রতর পর্যায়ে উপনীত, যে কোন স্থানে যে কোন জায়গায় এমন কি শত্রর নিরাপদ অবস্থানের ওপর মুক্তিবাহিনী আক্রমণ চালিয়ে তাকে বিমূঢ় করে দিতে পারে। একদিকে রুণক্ষেত্রে শত্ররা যেমন মার খাচ্ছে, অন্যদিকে বাংলাদেশের জাতীয় মুক্তি আন্দোলনের প্রতি আন্তর্জাতিক সমর্থনও ক্রমশঃ বৃদ্ধি পাচ্ছে। আজ পশ্চিম পাকিস্তানও অর্থনৈতিক বিপর্যয় ও রাজনৈতিক ভাঙনের মুখে। এ থেকে নিস্তার পাবার জন্য পাকিস্তান ভারতের সাথে যুদ্ধ বাধিয়ে বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রাম থেকে পৃথিবীর দৃষ্টি অন্যদিকে সরিয়ে নেবার চেষ্টা করছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেন, এর দ্বারা বাংলাদেশের পাক জঙ্গশাহী মুনিশ্চিত পরাজয় এড়াতে পারবে না অথচ তাদের ভ্রান্তি, অপরাধের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে, পরিণামে তাদের আত্মবিনাশ সুনিশ্চিত হবে। পাকিস্তানের বিদেশী পৃষ্ঠপোষক যারা বাংলাদেশের সংগ্রামকে ভারত পাকিস্তান সংঘর্ষে চিহ্নিত করতে উদ্যোগ নিয়েছেন তাদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যবস্থা একটিতা হোল পূর্ণ স্বাধীনতা। সেটাই প্রমাণিত হচ্ছে বাংলাদেশের মানুষের সংকল্পে, রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে আর স্বাধীনতা রক্ষার অপরাজেয় শক্তির মধ্য দিয়ে। ভারতকে যথেষ্ট অর্থ সাহায্যের বিনিময়ে বাংলাদেশের শরণার্থীদের পাকাপাকিভাবে ভারতে বসবাসের ব্যবস্থা করার জন্য কোন একটি দেশের প্রস্তাব উল্লেখ করে তাজউদ্দিন বলেন, “এর দ্বারা পবর্তপ্রমাণ অবিচার অন্যায়কে বিনা বাক্যে স্বীকার করে নেয়া হয়েছে, ভবিষ্যতে গণহত্যা ও ব্যাপক বাস্তত্যাগের পথ প্রশস্ত করা হয়েছে”। তাদেরকে হুশিয়ার করে তাজউদ্দীন আহমদ বলেছেন, “শরণার্থী অস্থাবর সম্পত্তি নন যে অর্থের বিনিময়ে তাঁদেরকে হাত বদল করা যাবে।” তিনি সুস্পষ্টভাবে ঘোষণা করেছেন, শরণার্থীরা সম্মান ও মর্যাদার সাথে জন্মগত অধিকার নিয়ে স্বদেশ ফিরে যাবেন, সেদিন প্রত্যাসন্ন। তাজউদ্দীন আহমদ প্রশ্ন করেন, উপমহাদেশে তথ্য সংগ্রহের জন্য প্রেসিডেন্ট নিক্সন একটি বিশেষ দল পাঠিয়ে কি উদ্দেশ্য সাধন করতে চান ? তার দেশের তক ও আইন সভার সদস্যরা অবগত নন এমন কি তথ্য জানতে চান ? ব্যাপক গণহত্যাকে যারা নিন্দা করেননি, তারা তথ্য সংগ্রাহক পাঠিয়ে কি ফল লাভ করতে চান, তিনি বুঝতে পারেন না। তিনি সুস্পষ্টভাবে ঘোষণা করেন ”তাতে আমাদের সংকল্পের ব্যত্যয় হবে না, সে সংকল্প হল দেশকে শত্রমুক্ত প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতা লাভের দিনটি আজ নিকটতর হয়েছে। তাই আজ শক্ৰ সংহারের প্রতিজ্ঞা