পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

24 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ ষষ্ঠ খণ্ড শিরোনাম সংবাদপত্র তারিখ অমানিশার অবসানে পূর্ব দিগন্তে জয়বাংলা ১৯ মে, ১৯৭১ উষার আলো দেখতে পাচ্ছি। ১ম বর্ষঃ ২য় সংখ্যা অমানিশার অবসানে পূর্ব দিগন্তে উষার আলো দেখতে পাচ্ছি জাতির উদ্দেশ্যে অস্থায়ী রাষ্ট্রপ্রধানের বেতার ভাষণ ‘মুক্তি সংগ্রামের অন্ধকার অধ্যায় কাটিয়ে আমরা শুভ প্রভাতের দিকে এগিয়ে চলেছি। ইতিমধ্যে আমি পূর্ব দিগন্তে উষার আলো দেখতে পাচ্ছি।’ গত ১৮ই মে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে জাতির উদ্দেশ্যে প্রদত্ত এক ভাষণে স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপ্রধান সৈয়দ নজরুল ইসলাম উপরোক্ত ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, সেদিন বেশী দূরে নয়, যখন স্বাধীন বাংলাদেশ সরকার বহু বিদেশী রাষ্ট্রের স্বীকৃতি লাভ করবে। সৈয়দ নজরুল ইসলাম তাঁর ভাষণে মুক্তিফৌজের ভূমিকার উচ্ছসিত প্রশংসা করেন এবং বলেন, মুক্তিফৌজের কঠোর প্রতিরোধ ও তীব্র পাল্টা আক্রমণে পাকিস্তান বাহিনী হিমশিম খাচ্ছে এবং তাদের মনোবল একেবারে শূন্যের কোঠায় এসে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি মুক্তি-পাগল মানুষের প্রতি গভীর সহানুভূতি প্রকাশ করে সৈয়দ নজরুল বর্বর বাহিনীর গুলিতে প্রাণ দিয়েছে, কোটি লোক গৃহহারা হয়ে পথের ভিখারী বনেছে। লাখো লাখো মাতা তাদের সন্তান হারিয়েছেন, তাদের অশ্রুতে বাংলার আকাশ-বাতাস আজ সিক্ত। শহীদদের রক্তে বাংলাদেশের পথ-প্রান্তর আজ নদী। তবু তারা আজো সংগ্রামী মনোবল হারায়নি। আজ তাদের এতসব ত্যাগের প্রতিদানে তিনিও শুধু অশ্রু দিতে পারেন। অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি দৃঢ়তার সাথে বলেন যে, সাড়ে সাত কোটি বাঙালীর ত্যাগ বৃথা যেতে পারে না। এবং তা বৃথা যেতে দেওয়া হবে না। তিনি আশ্বাস দিয়ে বলেন যে, বাঙালীর এ অশ্রু একদিন তাদের মুখে হাসি ফোটাবে। বাংলাদেশ কেন স্বাধীনতা ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছে তার কারণ ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, ইয়াহিয়া ও তার উপদেষ্টাদের সাথে আলাপ আলোচনা শেষে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর সহকর্মীরা ২৫শে মার্চ সামরিক আইন প্রত্যাহার করে গণপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর সম্পর্কে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার কাছ থেকে একটি ঘোষণা শোনার জন্য অপেক্ষা করেছিলেন। কিন্তু সে ঘোষণা কোন সময় আর আসল না। তার তথাকথিক দুই শাসনতন্ত্রের প্রশ্নে আওয়ামী লীগের উপর যে দোষ চাপানোর প্রয়াস চলছে অস্থায়ী রাষ্ট্রপ্রধান ওটাকে একটি মিথ্যার বেসাতি বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, ইয়াহিয়ার উপদেষ্টারাই তাদের খসড়ায় এ প্রস্তাব করেছিলেন। তাতে স্পষ্টভাবে লেখা ছিল যে, পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ সদস্যগণ পৃথক