পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৯১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

55 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ ষষ্ঠ খণ্ড সংকটের সমাধান হতে পারে এবং রাজনৈতিক আলোচানা শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গেই হতে হবে। তিনি পূর্বাহ্নে এমন একটি ধারণাও দিয়েছিলেন যে, বাংলাদেশ সমস্যার রাজনৈতিক সমাধান সম্পর্কে তাঁর মনে একটি প্রস্তাব রয়েছে। কিন্তু সেই প্রস্তাব সম্পর্কে তিনি সেই মুহুর্তে কিছু জানাতে অস্বীকার করেন। পূর্ব জার্মানীর অভিমত পূর্ব জার্মানীর তিন সদস্য বিশিষ্ট সংসদীয় প্রতিনিধিদল পশ্চিমবঙ্গের শরণার্থী শিবিরগুলো দেখার পর নয়াদিল্লীতে গত ২১ শে আগষ্ট এক সাংবাদিক সম্মেলনে মন্তব্য করেছেন, “এশীয়া তথা বিশ্বের শান্তি ও নিরাপত্তা অক্ষুন্ন রাখতে হলে বাংলাদেশ সমস্যার রাজনৈতিক সমাধান একান্ত প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি।” অপরদিকে নয়াদিল্লীর দূতাবাসে পশ্চিম জার্মানীর নবনিযুক্ত মন্ত্রী মিঃ ডবলু বেহরেম্ভস পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তে বাংলাদেশ থেকে আগত শরণার্থীদৈর শিবির পরিদর্শন করার পর সাংবাদিকদের কাছে মন্তব্য করেছেন যে, শরণার্থীরা যাতে স্বদেশে ফিরে যেতে পারেন সেজন্যে সেখানে উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি হোক, এটাই তাঁর দেশের কাম্য, এবং সে জন্যে একটা রাজনৈতিক সমাধান প্রয়োজন। সমাধান কোন পথে? সকলেই বাংলাদেশ সংকটের রাজনৈতিক সমাধানের কথা বলেছেন। রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পরিবর্তে রাজনৈতিক পথে এই প্রশ্নের যদি মীমাংসা করা সম্ভব হয় তাহলে আপত্তির কি থাকতে পারে। কিন্তু এই রাজনৈতিক সমাধানের রূপ কি হবে এবং কোন পথে এই সমাধানকে ফলপ্রসূ করা সম্ভব হবে তা কেউই খোলাখুলি বলছেন না। সিনেটর কেনেডি গণতান্ত্রিক ও মানবতাবাদী ভূমিকার জন্য বিশ্বের গণতন্ত্রবাদী ও শান্তিকামী মানুষের অকুষ্ঠ শ্রদ্ধা ও অভিনন্দন লাভ করেছেন। তিনি নিজেই একটা কথা স্বীকার করেছেন যে পাকিস্তানের হানাদার বাহিনী বাংলার মাটিতে থাকা পর্যন্ত একজন শরণার্থীও স্বদেশে ফিরে যাবে না বরং আগামী কয়েক মাসের মধ্যে শরণার্থীর সংখ্যা এক কোটি বিশ লক্ষে দাঁড়াবে। আমাদের ব্যক্তিগত ধারণা সিনেটর কেনেডি সংখ্যাটা অনেক কমিয়ে বলেছেন। তবে তাঁর কথা অনুযায়ী বলা যায় যে, পাকিস্তানের হানাদার বাহিনী বাং এমন একটা পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে যে, সেখানে মানুষের পক্ষে নিশ্চিন্তে নিরাপদে বাস করা সম্বব নয়। তারা দেশে সামান্যতম স্বাভাবিক অবস্থাও ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ হয়েছে। অর্থাৎ বৈদেশিক হানাদার বাহিনীর চরিত্র তারা কোন ক্রমেই চাপা দিতে পারছে না। সেখানকার অবস্থাটা যে খুবই অবনত তার প্রামাণ পাওয়া যায়, পশ্চিম পাকিস্তানী সরকার কর্তৃক শেষ মুহুর্তে আকস্মিকভাবে বাংলাদেশের অধিকৃত এলাকায় সিনেটর “অপারেশন ওমেগার লাঞ্ছনা বৃটিশ ও মার্কিন নাগরিক সমবায়ে গঠিত অপারেশন ওমেগার’ নামে একটি সেবা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের বাংলাদেশের দখলীকৃত এলাকায় প্রবেশ করেছিল। কিন্তু পাকিস্তানের হানাদার বাহিনী তাদের বাধা দেয় এবং ত্ৰাণ সামগ্রীসহ পুনরায় মুক্ত এলাকায় ফিরে আসতে বাধ্য করে। এই প্রতিষ্ঠানের সদস্য ও সদস্যগণ মানবতার নামে এবং মানবাধিকারের দাবীতে ত্রাণ সামগ্ৰী বিতরণ অধিকার দাবী করেছিল। কিন্তু জল্লাদ