পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (সপ্তম খণ্ড).pdf/১৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : সপ্তম খণ্ড - শিরোনাম সূত্র তারিখ ৫৭। ভারতের বিরুদ্ধে জেনারেল ইয়াহিয়ার হুশিয়ারী দৈনিক পাকিস্তান ২ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১ প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার হুশিয়ারী ভারত দেশের কোন অংশ দখলের চেষ্টা করলে প্যারিস, ১লা সেপ্টেম্বর (রয়টার)। -আজ এখানে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান হুশিয়ার করে দিয়েছেন যে, ভারত পাকিস্তানী ভূখণ্ডের কোন অংশ দখলের চেষ্টা করলে পাকিস্তান পুরোপুরি যুদ্ধ করবে। দৈনিক লা ফিগারো পত্রিকার সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আমি বিশ্বকে হুশিয়ার করে দিতে চাই যে, ভারত যদি মনে করে থাকে যে তারা বিনা উস্কানততে আমাদের ভূখণ্ডের কোন অংশ দখল করতে পারবে, তাহলে তারা মারাত্মক ভুল করবে। এর অর্থ হবে যুদ্ধ, পুর্ণ যুদ্ধ তাকে আমি ঘৃণা করি। কিন্তু আমার দেশকে রক্ষার জন্য আমি তাতে ইতস্ততঃ করব না। প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান বলেন যে, পূর্ব পাকিস্তানের সংকটকালে এটা ফাঁস হয়ে গেছে যে, তার দেশের বিরুদ্ধবাদীদের পুরোভাগে রয়েছে বৃটেন। পূর্ব পাকিস্তান সংকটে তিনি ফ্রান্স ও চীনের ভূমিকার প্রশংসা করেন। পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আইন ও শৃংখলা পরিস্থিতির ব্যাপারে কতিপয় সীমান্ত এলাকা তিনি বলেন আমি বলতে পারি, জনগণের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে আমি এখনো দৃঢসংকল্প। আমি আওয়ামী লীগ বাতিল করেছি। কিন্তু প্রদেশের প্রতিনিধিদের আসন আমি বাতিল করিনি। আমি দেশদ্রোহীদের বিতাড়িত করেছি। ৮৯ জন ডেপুটি জাতীয় পরিষদের আসন গ্রহণ করবেন। সীমান্তে গোলযোগও গণতান্ত্রিক পদ্ধতি অনুসরণ থেকে আমাকে বিরত করতে পারবে না। সীমান্ত পরিস্থিতি মোটেই শান্ত নয়। ভারতীয়রা সৈন্যদের অনুপ্রবেশ এবং বিদ্রোহে উস্কানী অব্যাহত রেখেছে। এ জন্যই উদ্বাস্তত্তরা বাড়ীঘরে ফিরে আসতে পারছেন না। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন যে, ভারতীয়রা উদ্বাস্ত্তদের রাজনৈতিক পুঁজি হিসেবে ব্যবহার করছে। তারা জাতিসংঘ থেকে উদ্বাস্ত্তদের জন্য সাহায্য পাচ্ছে। ভারত অর্থ পাচ্ছে এবং উদ্বাস্ত্তদের ফিরতে দিচ্ছে না। উদ্বাস্ত্ত সমস্যা ভারতীয় সমস্যা নয়, আমাদের সমস্যা। পূর্ব পাকিস্তানে অভিযান এলাকা থেকে বিদেশী সাংবাদিকদের কেন সরিয়ে রাখা হয়েছিল, তা জিজ্ঞেস করা আমি তাদেরকে রক্ষা করতে চেয়েছিলাম। এই ধরনের সামরিক অভিযান শুরু হলে, তার পরিণাম কি হবে, তা কেউ জানে না। আমি একজন সৈনিক হিসেবেই কাজ করেছি, একজন আয়েশী রাজনীতিবিদ হিসেবে নয়। পরে অবশ্য আমি এজন্য দুঃখ প্রকাশ করছি। যদি কোন সাংবাদিক আওয়ামী লীগের হাতে নিহত হতেন, সেটা আমার কাছে খুবই কাজে আসত। কারণ আওয়ামী লীগ কর্তৃক পরিচালিত নির্যাতনের কথা অনেকেই বলাবলি করতেন।