পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (সপ্তম খণ্ড).pdf/২২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

188 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : সপ্তম খণ্ড শিরোনাম সূত্র তারিখ ৮৬। বিনা উস্কানীতে গোলাবর্ষণের বিরুদ্ধে দৈনিক পাকিস্তান ২১ অক্টোবর, ১৯৭১ বিনা উস্কানীতে গোলাবর্ষণের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের তীব্র প্রতিবাদ পরিণতির জন্য ভারতই দায়ী হবে ইসলামাবাদ, ২০শে অক্টোবর, (এ পি পি)। - পাকিস্তান আজ ভারতকে জানিয়ে দিয়েছে যে, পাকিস্তানী ভূ-খণ্ডে বিনা উস্কানিতে ভারতের সেনাবাহিনীর কামান ও মর্টারের গোলাবর্ষণের ফলে যে পরিণতির সৃষ্টি হতে পারে সেজন্য ভারত সরকারই এককভাবে দায়ী হবে। গতকাল ভারতীয় হাই কমিশনের কাছে প্রতিবাদলিপিতে পাকিস্তান ভারত সরকারকে অবহিত করেছে যে, বিনা উস্কানিতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর গোলাবর্ষণ অব্যাহত রাখার বিরুদ্ধে পাকিস্তান সরকার কঠোর মনোভাব গ্রহণ করেছে। এই প্রতিবাদ জানানোর সঙ্গে সঙ্গে পাকিস্তান ভারতীয় সামরিক হস্তক্ষেপের ফলে জানমালের ক্ষতিপূরণের দাবী করার অধিকার সংরক্ষিত রাখছে। মঙ্গলবার শেষ রাতের দিকে পাকিস্তান সীমান্ত অতিক্রম করে। সদাসতর্ক পাকিস্তানী সৈন্যরা সঙ্গে সঙ্গে তাদের দেখতে পায়। তখনই তাদের আক্রমণ না করে সীমান্তবর্তী গ্রাম আপতাইর-এ পৌছে পাকিস্তানী সৈন্যরা তাদের উপর কার্যকরভাবে গুলিবর্ষণ শুরু করে। স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রে সজ্জিত অনুপ্রবেশকারীরাও পাল্টা গুলিবর্ষণ করে। কিন্তু শিগগিরই তারা ভারতীয় এলাকার দিকে পশ্চাদপসরণ শুরু করে। তখন তাদের ৯ জন নিহত হয়। পাকিস্তানী সৈন্যরা সীমান্তের দিকে পলায়নকারী ভারতীয় সৈন্যদের পশ্চাদ্ধাবন করে এবং আরো তিনজনকে হত্যা করে। অনুপ্রবেশকারীরাও একটি হালকা মেশিনগান, ৮টি রাইফেল, ২০টি হাতবোমা এবং প্রচুর কার্তুজ ফেলে পালিয়েছে। গোলাবর্ষণ এদিকে ভারতীয় গোলন্দাজ বাহিনী আজও কুমিল্লা, যশোর, রংপুর এবং ময়মনসিংহ জেলার সীমান্তবর্তী গ্রামসমূহে কোন রকম উস্কানি ছাড়াই গোলাবর্ষণ অব্যাহত রাখে। উস্কানি ছাড়াই ভারতীয় গোলন্দাজ বাহিনীর এরুপ নৃশংস গোলাবর্ষণের ফলে ৩৭ জন নিরপরাধ গ্রামবাসী নিহত এবং ৪৪ জন আহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ১২ জন মহিলা ও ১০ টি শিশুও রয়েছে। আজকের ভারতীয় গোলাবর্ষণে কুমিল্লার ৬টি, যশোরের আটটি, ময়মনসিংহের ২টি এবং রংপুর জেলার ২টি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মাঝারি কামান, ফিল্ডগান এবং বিভিন্ন ধরনের মর্টার থেকে পনেরো শ’র বেশী গোলা এইসব গ্রামে বর্ষিত হয়।