পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (সপ্তম খণ্ড).pdf/২৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

202 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : সপ্তম খণ্ড ৮৮। জেনারেল ইয়াহিয়ার তিন দফা শান্তি প্রস্তাবঃ দৈনিক পাকিস্তান ২৬ অক্টোবর, ১৯৭১ জাতিসংঘের মধ্যস্থতা প্রয়াস অভিনন্দিত প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার তিন দফা শান্তি প্রস্তাব জাতিসংঘের মধ্যস্থতা প্রয়াস অভিনন্দিত থান্টকে অবিলম্বে সফরে আসার অনুরোধ (নিজস্ব প্রতিনিধি) ইসলামাবাদ, ২৫শে অক্টোবর। -প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান উপমহাদেশে শান্তি রক্ষার জন্য উথান্টের মধ্যস্থতার প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং উভয় পক্ষের সৈন্য প্রত্যাহারের উপায় ও পদ্ধতি আলোচনার জন্য তাঁকে অবিলম্বে পাকিস্তান ও ভারত সফরের অনুরোধ করেছেন। প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান সীমান্তের উভয় পার থেকে পাকিস্তান ও ভারতীয় সৈন্য প্রত্যাহারের ব্যাপারে তিন দফা শান্তি প্রস্তাব পেশ করেছেন এবং সেক্রেটারী জেনারেল উথান্টের প্রতি তা কার্যকর করার অনুরোধ জানিয়েছেন। এই তিন দফা প্রস্তাব হচ্ছেঃ প্রথমতঃ উভয় দেশের সেনাবাহিনী পাক-ভারত আন্তর্জাতিক সীমানা থেকে সরে যাবে। দ্বিতীয়তঃ সৈন্য প্রত্যাহারের তদারকের জন্য জাতিসংঘ পর্যবেক্ষক নিয়োগ করা হবে এবং তৃতীয়তঃ সৈন্য প্রত্যাহারের উপায় ও পদ্ধতি আলোচনার জন্য উথান্ট উপমহাদেশ সফর করবেন। উপমহাদেশে বিস্ফোরণোম্মুখ পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য উথান্ট মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়ে পাকিস্তান ও ভারতের কাছে যে চিঠি দিয়েছেন তার জবাবে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান উক্ত প্রস্তাব দিয়েছেন। উথান্ট ২০শে অক্টোবর চিঠি দিয়েছেন এবং প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ক্ষিপ্রতার সাথে ২১শে অক্টোবর জবাব দিয়েছেন। কিন্তু ভারতীয় জবাব গতরাত পর্যন্ত জাতিসংঘে পৌছায়নি। উথান্টের পত্রের বিষয়বস্তু প্রকাশ করা না হলেও বোঝা যাচ্ছে যে আন্তর্জাতিক সীমান্তে বিস্ফোরণোম্মুখ পরিস্থিতি এবং অর্থহীন ও ভয়াবহ যুদ্ধের গুরুতর পরিণতির তিনি একটা বাস্তব বিশ্লেষণ করেছেন। ব্যক্তিগত মধ্যস্থতার সম্ভাবনা উথান্টের মধ্যস্থতা প্রস্তাব সুনির্দিষ্ট ভাষায় গৃহীত না হলেও তার অর্থ নিম্নলিখিত দুটাের একটি হতে পারেঃ তিনি ব্যক্তিগত মধ্যস্থতা করতে পারেন কিংবা, বিকল্প পথ হিসাবে জাতিসংঘ সনদের ৯১ ধারা কাছে চিঠি দিলে তিনি হয় নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক ডাকবেন কিংবা অন্ততঃপক্ষে কঠোর মনোভাব গ্রহণ করা হবে। উথান্টের জুলাই মাসেও নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতির কাছেও চিঠি দিয়েছিলেন কিন্তু তা ৯১ ধারা অনুযায়ী দেয়া হয়নি। সেটি ছিল গোপন ও ঘরোয়া ধরণের চিঠি। উথান্ট তার পত্রে উল্লেখ করেছেন যে, পাক-ভারত সীমান্তে জাতিসংঘের অনুরুপ কোন ব্যবস্থা নেই। এই পর্যবেক্ষণের অর্থ সম্পর্কে কোন আভাস পাওয়া না গেলেও প্রেসিডেন্ট ইঙ্গিত ধরে নিয়ে তার পূর্বের প্রস্তাবের পুনরুল্লেখ করেছেন যে, সৈন্যদের স্বাভাবিক শান্তিকালীন অবস্থানে সরিয়ে নেয়া সম্ভব না হলেও উভয়পক্ষে নিরাপত্তাবোধ সৃষ্টির জন্য তাদের অন্ততঃপক্ষে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নেয়া প্রয়োজন।