পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (সপ্তম খণ্ড).pdf/২৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

203 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : সপ্তম খণ্ড জাতিসংঘ পর্যবেক্ষক প্রেসিডেন্ট আরোও প্রস্তাব করেছেন যে, জাতিসংঘ পর্যবেক্ষকগণ সীমান্তের উভয় পারে সৈন্য অপসারণ তদারক ও শান্তি বজায় রাখবেন। একই সঙ্গে সশস্ত্র অনুপ্রবেশ এবং পাকিস্তান সীমান্তের ভিতরে গোলাবর্ষণ বন্ধ করতে হবে। প্রেসিডেন্ট এর চিঠি ভারতকে বেকায়দায় ফেলেছে। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে চলতিকালে উথান্টের সফর এবং শান্তির জন্য জাতিসংঘ পর্যবেক্ষক মোতায়েন এই উভয় প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান ভারতের পক্ষে কঠিন হবে। প্রেসিডেন্টের চিঠির বিবরণ আমি আপনার ১৯৭১ সালের ২০শে অক্টোবর বাণী আমার রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে পেয়েছি। পাক-ভারত সীমান্তে পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি ঘটেছে আপনার এই অভিমতের সঙ্গে আমি পুরোপুরি একমত। উভয় দেশের শান্তি রক্ষা এবং ভয়াবহ পরিস্থিতি এড়ানোর ব্যাপারে আপনার মত আমিও গভীর উদ্বেগ বোধ করছি। কারণ ভয়াবহ পরিস্থিতির উদ্ভব হলে তাতে কোটি কোটি লোকের শুধুমাত্র দুর্ভোগই নেমে আসবে। ইতিমধ্যেই আমাদের সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে গোলাবর্ষণের ফলে শত শত নর-নারী ও শিশু হতাহত এবং অসংখ্য লোক গৃহহারা হয়েছে। এই প্রসঙ্গে উল্লেখ করা যেতে পারে যে, ১৯৭১ সালের ১৯শে অক্টোবর সয়াদিল্লীতে এক সাংবাদিক সম্মেলনে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী সীমান্ত থেকে উভয় দেশের সৈন্য প্রত্যাহারের প্রস্তাব সরাসরি নাকচ করে দিয়েছেন। যুক্তি দেখানো হয়েছে যে, সীমান্তে ভারত অপেক্ষা পাকিস্তানী সৈন্যরা আরো কাছাকাছি অবস্থান করছে। এই প্রশ্নে আমি কোন বিতর্কে না নেমে প্রস্তাব করছি পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তান উভয় অঞ্চলের আন্তর্জাতিক সরিয়ে নেয়া না গেলেও অন্ততপক্ষে উভয় পক্ষের নিরাপত্তা বোধের নিশ্চয়তা বিধানের জন্য পরস্পরের একই সঙ্গে পূর্ব পাকিস্তানে আমাদের সীমান্ত সশস্ত্র অনুপ্রবেশ ও গোলাবর্ষণ বন্ধ করতে হবে। আমি আরো সুপারিশ করছি যে, সৈন্য প্রত্যাহার পর্যবেক্ষণ ও শান্তি তদারকের জন্য সীমান্তের উভয় পারে জাতিসংঘ পর্যবেক্ষক নিয়োগ করা হোক। সীমান্ত ঘাঁটিগুলোতে শুধুমাত্র স্বীকৃত সীমান্তরক্ষী বাহিনী ও পুলিশ বাহিনী মোতায়েন থাকবে। আমি আপনার মধ্যস্থতার প্রস্তাবকেও অভিনন্দন জানাচ্ছি এবং খুবই আশা করছি যে, সৈন্য প্রত্যাহারের উপায় ও পদ্ধতি আলোচনার জন্য আপনি অবিলম্বে পাকিস্তান ও ভারত সফর করবেন। এতে ঈপি্সত ফল পাওয়া যাবে এবং শান্তির পথ প্রশস্ত হবে বলে আমি সুনিশ্চিত। পাকিস্তানী সীমান্তবর্তী শহর লাহোর ও শিয়ালকোট দখলের জন্য ভারতীয় নেতৃবৃন্দের হুমকির ফলে পরিস্থিতির সংকট নিষ্পত্তির জন্য আপনি ভারত ও পাকিস্তান সফরের প্রকাশ্য ঘোষণা করতে তা খুবই অনুকূল হবে। উপসংহার আমার দেশের পক্ষ থেকে আপনাকে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দিচ্ছি।