পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (সপ্তম খণ্ড).pdf/২৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

207 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : সপ্তম খণ্ড জানিয়েছি। তাদেরকে পূর্ণ নিরাপত্তার এবং প্রত্যাবর্তন ও পুনর্বাসন-এর ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সবরকম সুযোগ-সুবিধা প্রদানের আশ্বাস দেয়া হয়েছে। এছাড়া সরকারের প্রদশির্ত সাধারণ ক্ষমার উদ্দেশ্য হচ্ছে তাঁদের মন থেকে সবরকম ভয় ও আশংকা দূর করা। আমার সরকার বাস্তুচু্যত ব্যক্তিদের পুনর্বাসনের কাজকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে আস্থা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে পূর্ব পাকিস্তানের বেসামরিক সরকারে তাদের একজনকে মন্ত্রী নিয়োগ করা হয়েছে। পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর নিজে এই কাজে ব্যক্তিগতভাবে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। দেয়া হয়েছে। পুনর্বাসনে আরো সাহায্য করার উদ্দেশ্যে বাস্তুচু্যতদের মধ্যে যাদের প্রয়োজন তাদের সকলকেই নগদ মঞ্জুরী দেয়া হবে। যদি এজন্য অতিরিক্ত সম্পদের প্রয়োজন হয়, তবে তা দ্রুত সরবরাহ করা হবে। মোতায়েন এবং এ ব্যাপারে জাতিসংঘের সেক্রেটারী জেনারেল ব্যক্তিগত প্রভাবকে কাজে লাগানোর জন্য তাঁর প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে রিলিফ ও পুনর্বাসনের সমন্বয় সাধনের উদ্দেশ্যে জাতিসংঘের সেক্রেটারী জেনারেল ও জাতিসংঘের উদ্বাস্ত্ত সংক্রান্ত হাইকমিশনারের প্রতিনিধিরা ইতিমধ্যেই ঢাকায় এসেছেন। জাতিসংঘের উদ্বাস্তু সংক্রান্ত হাইকমিশনারের প্রতিনিধি পূর্ব পাকিস্তানে ব্যাপকভাবে সফর করেছেন এবং বাস্তচু্যত ব্যক্তিদের অভ্যর্থনা জানানো এবং তাদের পুনর্বাসনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিজেই লক্ষ্য করেছেন। এটা দুঃখজনক যে, বিশেষ পরিস্থিতিতে যারা বাড়ীঘর ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন, সে সমস্ত হতভাগ্য ব্যক্তিদের নিরাপদ প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে পারে এরুপ কোন ব্যবস্থাই ভারত সরকার গ্রহণ করেনি। আমরা যখন আমাদের নাগরিকদের ফিরে পেতে ইচ্ছুক এবং আগ্রহী, ভারত তখন এই মানবিক সমস্যাকে নিজের স্বার্থে ব্যবহার করছে এবং তাদের প্রত্যাবর্তনে বাধা দেয়ার জন্য সবরকম বিঘ্ন সৃষ্টি করছে। এই উদ্দেশ্যে বারত ইচ্ছাকৃতভাবে সীমান্ত এলাকায় গোলযোগ বজায় রাখছে এবং নিরাপত্তাহীনতা ও অনিশ্চয়তার পরিবেশ সৃষ্টি করছে। জাতিসংঘের সেক্রেটারী জেনারেল সম্প্রতি এই পরিস্থিতির প্রতি বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন যে অনুপ্রবেশ এবং কামান ও মর্টারের গোলাবর্ষণের ফলে সীমান্ত এলাকায় যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে, তা ভারতীয় কর্তৃপক্ষ কোন কোন বিদেশী রাষ্ট্র থেকে নৈতিক ও আর্থিক সমর্থন পাওয়ার উদ্দেশ্যে বাস্তচু্যত ব্যক্তিদের সংখ্যা অত্যন্ত বেশী বাড়িয়ে বলছে। যাঁরা স্থানীয় অবস্থানের কথা পুরোপুরিভাবে পরিচিত, তাঁরা ভারতীয় প্ররোচনায় বিভ্রান্ত হবেন না। কারণ এটা সবার জানা আছে যে পশ্চিম বঙ্গের অন্যান্য স্থানের বাস্তুত্যাগী শিবিরগুলো কলকাতার স্থায়ী ভবঘুরে ও বেকার লোকে ভর্তি। তাছাড়া, উদ্বাস্তু সম্পর্কে ভারতীয় হিসেবে ১৯৪৭ সালে যারা পূর্ব পাকিস্তান থেকে ভারতে চলে গেছে এবং কোন না কোন কারণে এখন পর্যন্ত পুনর্বাসিত হয়নি, তাদেরকেও ধরা হয়েছে। একথা অবশ্যই স্মরণ রাখতে হবে যে, দেশ ভাগাভাগির সময় সীমান্তের উভয় দিক থেকে ব্যাপকহারে লোক এক দেশ থেকে অন্যদেশে চলে গেছে। ভারত কিছুতেই এসব লোককে উদ্বাস্তু হিসেবে গণ্য করতে পারে না এবং পূর্ব পাকিস্তানে সাম্প্রতিক গোলযোগের সময় যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের মধ্যেও ধরতে পারে না। আমরা বিষয়টি পুংখানুপুংখভাবে হিসেব করে দেখেছি এবং তাতে দেখা যায় যে, এ বছরের মার্চ থেকে ২০ লাখের কিছু বেশী লোক তাদের বাড়ীঘর ছেড়ে চলে গেছে। উদ্বাস্তু সংখ্যা সম্পর্কে যে কোন রকমের সন্দেহ