পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (সপ্তম খণ্ড).pdf/২৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

231 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : সপ্তম খণ্ড শিরোনাম সূত্র তারিখ ১০৮। ভারতীয় অনুপ্রবেশ সম্পর্কে সরকারী মুখপাত্রের | দৈনিক পাকিস্তান ২৯ নভেম্বর, ১৯৭১ বিবরণ সরকারী মুখপাত্রের বিবরণ পূর্ব পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ভারতীয় অনুপ্রবেশ চেষ্টা ব্যর্থ রাওয়ালপিণ্ডি, ২৮শে নভেম্বর, (এপিপি)। -আজ এখানে একজন সরকারী মুখাপাত্র বলেন যে, কুমিল্লানোয়াখালী সেক্টরে পাকিস্তানী সৈন্যদের সঙ্গে বিভিন্ন সংঘর্ষে আরো ৩০ জন ভারতীয় সৈন্য নিহত হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় এসব ভারতীয় সৈন্য মারা যায়। কুমিল্লা-নোয়াখালী সেক্টরের গুলবানিয়ায় ভারতীয়রা নতুন করে ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয় সেখানে তাদের ১০ জন সৈন্য নিহত এবং তাদের দুটি হালকা মেশিনগান ও ৭টি রাইফেল আটক করা হয়েছে। ময়মনসিংহ সেক্টরে আরো ২০ জন ভারতীয় সৈন্য নিহত হয়েছে। ভারতের নিয়মিত সৈন্য ও তাদের চরেরা এই সেক্টরে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করে। কিন্তু পাকিস্তানী সেনাবাহিনী ও রাজাকারদের হাতে তারা প্রচুর ক্ষতি স্বীকার করতে বাধ্য হয়। মুখপাত্রটি আরো বলেন যে, ভারতীয়রা দিনাজপুর জেলার পচাগড়ে প্রচন্ড গোলাবর্ষণ করে। কিন্তু পরে তাদের প্রতিহত করা হয়। এই সংঘর্ষের বিস্তারিত বিবরণ এখনো পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, ভারতীয়রা সারা সীমান্তে উত্তেজনা বজায় রাখে এবং ময়মনসিংহ জেলার বরমারী, আকিপাড়া ও কমলপুর, দক্ষিণ সিলেট এলাকার কেরামত নগর ও ফুলতলা, কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণবাড়িয়া এলাকায় কায়েমপুর ও যশোরের হিরণ, জীবনন্যার ও বাকশায় গোলাবর্ষণ করে। মুখপাত্রটির মতে ভারতীয় সৈন্যরা গত ২৪ ঘন্টায় পুর্ব পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোর উপর আক্রমণ ও প্রচন্ড গোলাবর্ষণ করে। ভারতীয়দের আক্রমণের প্রধান লক্ষ্য ছিল পুর্ব পাকিস্তানের পশ্চিম সীমান্ত যশোর। সেখানে দুই কোম্পানী ভারতীয় সৈন্য ট্যাংকের সাহায্যে চৌগাছা এলাকায় বুইন্দার দিকে আরো এগিয়ে যাবার চেষ্টা করে। পাকিস্তানী সৈন্যরা তাদের প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দেয়। একই সেক্টরে ভারতীয়রা দুই কোম্পানী সৈন্য ও ট্যাংকের সাহায্যে শিমুলিয়া ও নবগ্রামে আক্রমণ চালালে আমাদের সৈন্যদের সক্রিয় ও সময় মতো কামানের গোলাবর্ষণে ভারতীয়রা পিছু হটতে বাধ্য হয়। মুখপাত্রটি বলেন, দুটি ভারতীয় কোম্পানী কুমিল্লা এলাকার চাঁদগাজীপুরে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করলে পাকিস্তানী সৈন্যরা তাদেরকে প্রতিহত করে। প্রশ্নঃ -ভারতীয়রা কোন বিমান অবতরণ কেন্দ্রে অথবা বিমান বন্দরে আক্রমণ করেছে কি? উত্তরঃ- গত ২২শে নভেম্বর যশোরে প্রথম আক্রমণ শুরু হওয়ার পর ভারতীয় প্রচেষ্টা প্রতিহত করা হচ্ছে। কিন্তু সংঘর্ষের সাধারণ ধরন একই রুপ ছিল। সীমান্ত সংঘর্ষের তীব্রতাও একই রুপ। সীমান্ত এলাকা থেকে এই সংঘর্ষ অন্যত্র ছড়িয়ে পড়েনি। ভারতীয়দের পুর্ব পাকিস্তানের গভীর অভ্যন্তরে অনুপ্রবেশ অথবা তাদেরকে নতুন কোন এলাকা দখল করতে দেয়া হয়নি। যশোর সেক্টরের চৌগাছা এখনো ভারতীয়দের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।