পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (সপ্তম খণ্ড).pdf/৪২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

387 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : সপ্তম খণ্ড ভাষাও আমার নেই। পরিষ্কার মনে হচ্ছে- আওয়ামী লীগ ফ্যাসিবাদী পদ্ধতি অনুসারে তাদের নিজেদের পরিকল্পনা অন্যের উপর চাপানোর সংকল্প করেছে। আওয়ামী লীগ এই প্রথমবার নীতি অনুসরণ করেনি।” ১৯৭০ সালের ২৮শে ফেব্রুয়ারী, চট্টগ্রামে, দৈনিক “বুনিয়াদ” এবং দৈনিক “সংগ্রাম” পত্রিকার দফতর দুটির উপর হামলা করা হয়। এই দুটি পত্রিকার আওয়ামী লীগ বিরোধী বলে পরিচিত ছিলো। পাকিস্তান ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভাইস প্রেসিডেন্ট মিঃ মাহমুদ আলী এই হামলা সম্পর্কে মন্তব্য করে বলেনঃ “সংবাদপত্রের স্বাধীনতার উপর হীন একটা হামলা।” তিনি আরও বলেন, “যদি বুনিয়াদ ও সংগ্রামের সঙ্গে আওয়ামী লীগের আদর্শের মিল না হয়, তাহলেই কি তাকে ধ্বংস করতে হবে? এই কি পাকিস্তানের জনগণের কাছে আওয়ামী লীগের প্রদত্ত গণতন্ত্রের নমুনা। ১৯৭০ সালের ৩১শে জুলাই ঢাকার পাকিস্তান অবজারভারসহ কয়েকটি পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হয় যে, “আওয়ামী লীগের পাঁচ শতাধিক সশস্ত্র কর্মীরা হালি শহর হাউসিং এষ্টেটের অধিবাসীদের আক্রমণ করে। এর ফলে ২২ জন আহত হয়। তার মধ্যে ৭ জনের অবস্থা গুরুতর খবরে জানা যায় যে আওয়ামী কর্মীরা চেয়েছিলেন যে উল্লেখিত লোকেরা ধর্মঘট পালন করুক। কিন্তু সে এলাকার অধিবাসীরা তা করতে অস্বীকার করে।” ১৯৭০ সালের ৭ই আগষ্ট দৈনিক “পূর্বদেশ” এর খবর প্রকাশ- “২রা আগষ্ট ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ টাউন ময়দানে পিডিপির এক জনসভা হয়। সে সভায় আওয়ামী লীগের একটি দল এবং ছাত্রলীগ কর্মীরা গোলযোগ বাধাবার চেষ্টা করে। খবরে প্রকাশ, সভাস্থানের সন্নিকটে শেখ মুজিবুর রহমানের গোপালগঞ্জ বাসভবন থেকে, সভায় গোলযোগ সৃষ্টিকারী আওয়ামী লীগ কর্মীদের বের হয়ে আসতে দেখা যায়। ১৯৭০ সালের ২৩শে আগষ্ট দৈনিক “সংগ্রাম’ পত্রিকার খবরে জানা যায় যে “চট্টগ্রামের দৈনিক আজান পত্রিকার দফতর এর পূর্বদিন ছাত্র বলে পরিচিত একদল যুবক কর্তৃক আক্তান্ত হয়। দুস্কৃতিকারীরা ৬ দফার সমর্থনে এবং “জয়-বাংলার’র স্লোগান দিচ্ছিলো। আজান কর্তৃপক্ষকে তারা ৬ দফা সমর্থন করে তাদের পত্রিকায় লেখার হুকুম করে। পত্রিকার একজন কর্মচারী হামলার সময় আহত হন।” ঈশ্বরদীর ইসলামী ছাত্র সংঘের জেনারেল সেক্রেটারীকে ১৯৭০ সালের ১৯শে সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগ কর্মীরা আক্রমণ করে। চাঁদপুর শহরের কাছে বাহুরীবাজারে ১৯৭০ সালের ২৪শে সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগ কর্মীরা নিজাম-ই-ইসলামের অফিসে হামলা করে এবং অফিসের আসবাবাদি বিনষ্ট করে বলে খবর পাওয়া যায়। ঢাকার দৈনিক পত্রিকা ‘সংবাদ” এর ১৯৭০ সালের ২০শে অক্টোবর খবরে প্রকাশ যে- “১৯৭০ সালের ১৮ই অক্টোবর ঢাকার হাজারীবাগ এলাকার ১৩নং রাস্তার বাচ্চ মিয়ার বাসভবন আওয়ামী লীগের একদল দুস্কৃতিকারী আক্রমণ করে। দুষ্কৃতিকারীরা বাড়ীর উপর পাথর নিক্ষেপ করে, বাড়ীর মেয়েদের গালিগালাজ করে এবং দুটি নাবালক ছেলের উপর দৈহিক নির্যাতন চালায়। ১৯৭০ সালের ৫ই নভেম্বর, পাকিস্তান ন্যাশনাল লীগের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং আওয়ামী লীগের এক প্রাক্তন অ্যাকটিং প্রেসিডেন্ট মিসেস আমেনা বেগম, এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের দ্বারা তাঁর মাতুয়াইলস্থ নির্বাচন দফতর আক্রমণের নিন্দা করেন। এক সপ্তাহ পরে (১৯৭০ সালের ১০ই নভেম্বর) “পূর্বদেশের এক খবরে প্রকাশ যে- ঢাকার অন্তর্গত জিঞ্জিরার কাউন্সিল মুসলিম লীগ প্রার্থী খাজা খয়েরউদিনের সমর্থকগণ বিরাট এক মিছিল বের করেন। গত রাতে আরামবাগ গ্রামে আওয়ামী লীগ কর্মীরা মিছিলের উপর হামলা চালায়। ফলে ৫ ব্যক্তি আহত হয়।” জাতীয় পরিষদের নির্বাচন ১৯৭০ সালের ৫ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবার কথা ছিল। সেপ্টেম্বর মাসে প্রবল বন্যায় পূর্ব পাকিস্তান ভীষণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। লক্ষ লক্ষ লোক গৃহহীন হয়, যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়। বন্যার