পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (সপ্তম খণ্ড).pdf/৪৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

397 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : সপ্তম খণ্ড (১০) প্রত্যেক প্রদেশে গভর্নরকে তাঁর কর্তব্য পালনে সাহায্য করার জন্য একটি উজীর সভা থাকবে এবং মুখ্য-উজীর এই উজীর সভার প্রধান থাকবেন। অবশ্য প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য কিংবা জাতীয় পরিষদের সদস্য কিংবা জাতীয় পরিষদের সদস্য পদে নির্বাচিত কোন ব্যক্তি ছাড়া কাউকেই উজীর নিযুক্ত করা যাবে না। (১১) ঘোষণা প্রচারের ৭ দিনের মধ্যে ঢাকা ও ইসলামাবাদে একটি করে দুটি কমিটি গঠন করা হবে। করবেন এবং এসব ধারা পরে জাতীয় পরিষদের তৈরী করা শাসনতন্ত্রের অন্তর্ভুক্ত করা হবে। (১২) উপরোক্ত কমিটি দুটোর রিপোর্ট পাওয়ার পর প্রেসিডেন্ট পাকিস্তানের জন্য একটি শাসনতন্ত্র তৈরীর উদ্দেশ্য তাঁর বিবেচনামত উপযুক্ত তারিখ সময় ও স্থানে জাতীয় পরিষদের অধিবেশন ডাকবেন। (১৩) কোন প্রদেশের গভর্নরের রিপোটের মাধ্যমে কিংবা অন্য কোন উপায়ে যখনই প্রেসিডেন্টের মনে হবে যে, এমন একটা পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে যে সেই প্রদেশের সরকারকে দিয়ে কাজ চালানো যাচ্ছে না প্রেসিডেন্ট এক ঘোষণার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট প্রদেশের কার্যনির্বাহী সরকারের সব কিংবা যে কোন ক্ষমতা নিজে গ্রহণ করতে পারবেন। একই দিন (২০শে মার্চ, ১৯৭১) কাউন্সিল মুসলিম লীগ এবং জমিয়তে উলামার নেতারা শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে পৃথক পৃথক বৈঠকে মিলিত হন। ২১শে মার্চ, ১৯৭১ শেখ মুজিবুর রহমান জনাব তাজুদ্দীনকে সঙ্গে নিয়ে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে এক অনির্ধারিত বৈঠকে মিলিত হন। তিনি উল্লেখ করেন যে, কেন্দ্রীয় উজীর সভা গঠিত হোক এটা তিনি এখন আর চান না। উদ্দেশ্য ও বক্তব্য পেশের এই পরিবর্তন অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আওয়ামী লীগ তাদের খসড়া ঘোষণার আইনগত বৈধতা প্রতিষ্ঠার জন্য শাসনতান্ত্রিক বিশেষজ্ঞ আনার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তাও কার্যকরী করতে ব্যর্থ হন। প্রেসিডেন্টের আমন্ত্রণে পাকিস্তানে পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান জনাব জুলফিকার আলী ভুট্টো তাঁর সহকারীদের সঙ্গে নিয়ে ঢাকায় এলেন। ২২শে মার্চ, ১৯৭১ যদিও শেখ মুজিবুর রহমান ভুট্টোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনার জন্য মিলিত হতে প্রকাশ্যভাবে অস্বীকৃতি ঘোষণা করেন তবুও প্রেসিডেন্ট তাঁর সঙ্গে একটি যৌথ বৈঠক অনুষ্ঠানের জন্য উভয় নেতার উপর তাঁর প্রভাব খাটান। বৈঠক শেষে শেখ মুজিবুর রহমানের অনুরোধ ১৯৭১ সালের২৫শে মার্চ জাতীয় পরিষদ অধিবেশন শুরু করার যে আদেশ প্রেসিডেন্ট দিয়েছিলেন তা বাতিল করা হয়। এটা সাব্যস্ত হয় যে, প্রস্তাবিত ঘোষণাকে আইনগত দিক থেকে বৈধ করার জন্য ১৯৭১ সালের ২ এপ্রিল জাতীয় পরিষদের অধিবেশন ডাকা যেতে পারে। কিন্তু আওয়ামী লীগ তা গ্রহণ করেননি। একই দিন সন্ধ্যায় বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ঘোষণা করেন যে, সারা পাকিস্তানে ২৩শে মার্চ তারিখে যে পাকিস্তান দিবস পালন করা হয় তা এবার পূর্ব পাকিস্তানের প্রতিরোধ দিবস’ হিসেবে পালিত হবে। প্রেসিডেন্ট মিয়া মমতাজ মুহম্মদ খান দৌলতানা, সরদার শওকত হায়াৎ, মওলানা মুফতি মাহমুদ, খান আবদুল ওয়ালী খান এবং মীর গোঁস বক্স বিজেঞ্জোর সঙ্গেও মিলিত হন। তিনি তাঁদেরকে একটা রাজনৈতিক সমঝোতায় উপনীত হওয়ার চেষ্টা করার জন্যে শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে দেখা করতে বলেন।