পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (সপ্তম খণ্ড).pdf/৪৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

414 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : সপ্তম খণ্ড “দেশ বিভাগের সময় যেসব হাজার হাজার অসহায় মুসলিম উদ্বাস্তু পূর্ব বাংলায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন তাদেরকে গত কয়েক সপ্তাহে পূর্ব পাকিস্তানের ক্রুদ্ধ বাঙালীরা হত্যা করেছে।” এ সপ্তাহে যেসব বিহারী মুসলমান উদ্বাস্তু সীমান্ত অতিক্রম করে হিন্দুস্তানে চলে আসে তারা এই হত্যার কথা জানিয়েছে। আজ একজন তরুণ বৃটিশ টেকনিশিয়ান হিলিতে হিন্দুস্তান পাকিস্তান সীমান্ত অতিক্রম করে। তিনি এই হত্যাকাণ্ডের সত্যতা প্রকাশ করেন। “দি টাইমস’ লন্ডন, ৬ই এপ্রিল, ১৯৭১। গতকাল কোলকাতায় যে বৃটিশ জাহাজ নোঙর করা হয় তার যাত্রীরা পূর্ব পাকিস্তানের বন্দরনগরী চট্টগ্রামে ব্যাপক নরহত্যা এবং অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনার কথা জানিয়েছেন।” লেয়ন লামসডেন নামে মার্কিন সাহায্য পরিকল্পনার একজন ইঞ্জিনিয়ার বলেছেন, প্রধানত বাঙালী অধুষিত চট্টগ্রাম শহরে গত সপ্তাহে সেনাবাহিনীর লোক আসার আগে একটানা দুই সপ্তাহ ধরে বাঙালীরা পশ্চিম পাকিস্তানীদের উপর হত্যাযজ্ঞ চালায়। নর্দান ইকো’ ডারলিংটন, ডারহাম, ৬ই এপ্রিল, ১৯৭১। “যখন ইপিআর (ইষ্ট পাকিস্তান রাইফেলস) বিদ্রোহ করলো তখন তারা প্রথম যে কাজে হাতে দিলো তা হচ্ছে বিভিন্ন ব্যাংকে অবাঙলীদের উৎখাত করা।” “১০ থেকে ১৫ হাজার লোক নিয়ে গঠিত ইপিআর-এর শতকরা ৪০ জন হচ্ছে পশ্চিম পাকিস্তানী। তাদের বেশীর ভাগই অফিসার।” “ইপিআর-এর লোকেরা হিন্দুস্তানের সীমান্ত তল্লাশী শহর হরিদাসপুরের কাছে সীমান্ত বরাবর এক গরুর গাড়ী বোঝাই লাশ খালাস করে।” “ফার ইস্টার্ন ইকনোমিক রিভিউ”, হংকং, ২৪শে এপ্রিল, ১৯৭১ টি আই এস জর্জ। “শত শত প্রত্যক্ষদশীর কাছ থেকে যে বিবরণ পাওয়া গেছে তাতে ধারণা করা যায় যে, আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, তখন কিছু কিছু বাঙালী বিহারীদের ঘরবাড়ী লুট করে এবং তাদেরকে হত্যা করে।” নিউইয়র্ক টাইমস’, নিউইয়র্ক ১০ই মে, ১৯৭১ (ম্যালকম ডব্লিউ ব্রাউন) “স্থানীয় একটি ব্যাংকের ইউরোপীয় ম্যানেজার বলেন, অত্যন্ত সৌভাগ্যের বিষয় যে সেনাবাহিনীর সময় মতো উপস্থিতির জন্য প্রতিটি ইউরোপীয় জীবিত আছেন, না হলে এ কাহিনী বলার জন্য আমি বেঁচে থাকতাম না।” নিউইয়র্ক টাইমস’, নিউইয়র্ক ১১ই মে, ১৯৭১ (ম্যালকম ব্রাউন) “এমন প্রমাণ পাওয়া গেছে যে, উন্মুক্ত জনতা অবাঙালীদের উপর আক্রমণ চালিয়ে তাদেরকে হত্যা করে এবং তাদের ঘরবাড়ী জুলিয়ে দেয়। এসব অবাঙালীদের অধিকাংশই ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের সময় হিন্দুস্তান থেকে পাকিস্তানে আসে। প্রত্যক্ষদশীরা দেড় হাজার বিধবা ও এতিম শিশুর নিদারুণ কাহিনীর কথা উল্লেখ করেন। ময়মনসিংহের উত্তরাঞ্চলের একটি মসজিদে আশ্রয় নিতে যাওয়ার সময় বিচ্ছিন্নতাবাদী বলে শনাক্তকৃত সশস্ত্র লোকেরা তাদের স্বামী ও পিতাদের হত্যা করে। ” সিলোন ডেইলী নিউজ’, কলম্বো ১৫ই মে, ১৯৭১ (মরিস কুয়েনট্যান্স)