পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (সপ্তম খণ্ড).pdf/৫৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

530 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : সপ্তম খণ্ড শিরোনাম সূত্র তারিখ ১৮৬ চাপিয়ে দেয়া হলে আক্রমনকারীর দৈনিক পাকিস্তান ৯ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১ ভূখণ্ডেই যুদ্ধ হবে নিয়াজী প্রদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে জেঃ নিয়াজী চাপিয়ে দেওয়া হলে আক্রমণকারীর ভূখণ্ডেই যুদ্ধ হবে এপিপির এক খবরে প্রকাশ, ইষ্টাৰ্ণ কমাণ্ডের কমাণ্ডার ও ‘খ’ অঞ্চলের সামরিক আইন প্রশাসক লেঃ জেনারেল এ, এ, কে নিয়াজী গতকাল বুধবার প্রদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে সফরকালে জনগণের প্রতি এই মৰ্মে আশ্বাস দেন যে, আমাদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হলে আক্রমণকারীর ভূখণ্ডে যুদ্ধ করার মতো যথেষ্ট শক্তি পূর্ব পাকিস্তানে অবস্থিত সমগ্র বাহিনীর রয়েছে। তিনি জনগণের প্রতি প্রদেশ থেকে ভারতীয় চর ও রাষ্ট্রবিরোধী ব্যক্তিদের উৎখাতে দেশপ্রেমিক হিসেবে তাদের ভূমিকা অব্যাহত রাখার উপদেশ দেন। জেনারেল নিয়াজী এক দিনের জন্য পাবনা, রাজশাহী ও বগুড়া জেলা সফর করেন। সফরকালে জিওসি তাঁর সাথে ছিলেন। জেনারেল নিয়াজী সেনাবাহিনীর একখানি হেলিকপ্টারে সফর করেন। প্রথমে তিনি নাটোরে অবতরণ করেন। স্থানীয় কমাণ্ডার তাঁকে জানান যে, সদা জাগ্রত সৈন্যরা আক্রমণের সম্ভাবনার সকল পথ বন্ধ করে দিয়েছে এবং এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণাধীন রয়েছে। স্থানীয় কমাণ্ডার জানান যে, কিছুসংখ্যক ভারতীয় চর মাঝে মাঝে পাট চলাচল ব্যাহত করার চেষ্টা করছে। কিন্তু রাজাকার ও স্থানীয় জনসাধারণ তাদের সকল প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়েছে। স্থানীয় কমাণ্ডার আরো জানান যে, ভারতীয় চরেরা, কয়েকবার পাটের চোরাচালান করে ভারতে নিয়ে যাবার চেষ্টা করে। কিন্তু তা ব্যর্থ করে দেয়া হয়। মহাদেবপুরে (রাজশাহী) জেঃ নিয়াজী শিক্ষারত রাজাকারদের দেখেন। তিনি তাদের গুলি চালনা অনুশীলনও পর্যবেক্ষণ করেন। একই এলাকায় তিনি স্বাভাবিক ট্রেনিংরত সৈন্যদেরও দেখেন। মহাদেবপুর থেকে জেনারেল নিয়াজী বগুড়া জেলার সীমান্ত এলাকায় যান। সেখানে তিনি দেন, যাতে দুশমনেরা কোন রকম সুযোগ নিতে না পারে। সীমান্ত এলাকায় একটি জীপে সফর করার সময় তিনি জনসাধারণকে স্বেচ্ছায় সাম্প্রতিক বর্ষায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক ও বাঁধ মেরামত করতে দেখেন। তিনি তাদের আস্থা ও মনোবল দেখে মুগ্ধ হন। জেনারেলের যাবার পথে জনগণ হর্ষধ্বনি করে তাকে স্বাগত জানায় ও বিভিন্ন দেশাত্মবোধক শ্লোগান তুলে। তিনি প্রতিটি স্থানে গাড়ী থামিয়ে জনগণের সাথে করমর্দন করেন এবং তাদের খোঁজ খবর নেন। তাদের সবাইকে সুখী ও প্রফুল্ল দেখা যায়। এর পরে জেনারেল নিয়াজী বন্যা-উপদ্রুত পাবনা জেলায় সফরে যান। পাবনা শহরে তিনি স্থানীয় কর্মকর্তাদের সাথে রিলিফের ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করেন। বন্যা পরিস্থিতির বেশ উন্নতি হয়েছে ও রিলিফের কাজ সন্তোষজনকভাবে চলছে বলে তাঁকে জানানো হয়। স্থানীয় কর্মকর্তারা তাঁকে জানান যে, প্রথম দিকে কিছু কিছু লোক কলেরায় আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেলেও সময়োচিত ব্যবস্থা নিবার দরুন কলেরা আর মহামারী আকারে দেখা দিতে পারেনি।