পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (সপ্তম খণ্ড).pdf/৫৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

532 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : সপ্তম খণ্ড ১৮৭। সামরিক সরকারের বেসামরিক সরকারী প্রচার পুস্তিকা-পূর্ব পাক ১৪ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১ গভর্ণর ডাঃ এ, এম মালিকের বেতার সরকারের তথ্যবিভাগ ভাষণ বেতার ভাষণ ১৪ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১ ডাঃ আবদুল মোতালেব মালিক, এইচ কিউ এ আমার প্রিয় দেশবাসীগণ, জনগণ কর্তৃক নির্বাচত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের উদ্যোগ শুরু করার উদ্দেশ্যে প্রেসিডেন্ট আমাকে এই প্রদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান নিযুক্ত করেছেন। গভর্ণর হিসেনে আমার একটি মন্ত্রী পরিয়দ থাকবে। আল্লাহতায়ালা আমাদের কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন করেছেন। প্রদেশের অভ্যন্তরে ও বহিঃশক্র থেকে ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ ও হুমকি প্রদেশের শান্তির বিঘ্ন ঘটিয়েছে এবং অর্থনীতির ক্ষতি সাধন করেছে। আমার জীবনের সায়াহ্নে এই গুরুদায়িত্ব আমি শুধু এই জন্যই তুলে নিয়েছি যাতে যে দেশের প্রতিষ্ঠা ও সংহতির জন্য আমারও ক্ষুদ্র অবদান ছিল, সেই দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও পুনর্গঠনের কাজে যথাসাধ্য শক্তি নিয়োগ করতে আমি যেন পিছপা না হই। প্রিয় দেশবাসীগণ, আমি আপনাদের সাহায্য ও সহযোগিতা কামনা করছি এই জন্য, যাতে প্রদেশে শান্তি ফিরিয়ে আনা যায়, যাতে করে আমরা এমন এক মুক্ত সমাজ গড়ে তুলতে পারি যেখানে বিভিন্ন সমস্যা, আলাপ-আলোচনারা মাধ্যমে সমাধান করা হবে, শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে নয়; যেখানে জনসাধারণ ও দলসমূহ পরস্পরের সঙ্গে মতানৈক্য থাকা সত্ত্বেও একই দেশের শান্তিপ্রিয় নাগরিক হিসেবে একত্রে বসবাস করতে পারবেন। যে অন্ধ বিদ্বেষ আমাদের বর্তমান দুর্দশার জন্য দায়ী, আসুন আমরা তা পেছনে ফেলে রেখে নুতন যাত্রা শুরু করি। এই যাত্রা পথকে সহজ ও সুগম করার উদ্দেশ্যে প্রেসিডেন্ট ইতিমধ্যেই সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছেন। এর পূর্ণ সুযোগ এখন আমাদের গ্রহণ করতে হবে। সকল ভীতি, সন্দেহ ও তিক্ততা দূর করে পরস্পরের সঙ্গে হাত মিলাবার দায়িতু আমাদেরই। আমার প্রিয় ভাই-বোনেরা, প্রদেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক পুনর্গঠনে উদ্যোগী হওয়ার জন্য আমি আপনাদের সনির্বন্ধ অনুরোধ জানাচ্ছি। আমাদের নিজেদের স্বার্থেই এটা প্রয়োজন। আমি আবারও বলছি, আমাদের নিজেদের স্বার্থেই এটা প্রয়োজন। এ সময় পরস্পরকে দোষারোপ করা, কারো ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে দেওয়া কিংবা মনে ক্ষোভ পোষণ করার সময় নয়। এখন অতীতের সমস্ত দোষ ও অভিযোগ বিস্মৃত হয়ে পুনর্গঠনের কাজে সবাইকে সামিল হতে হবে, যাতে জাতি আবার শান্তি ও উন্নতির পথে অগ্রসর হতে পারে। আজকের যুবক শ্রেণী তো জানে না যে, নূতন এক জাতির বাসভূমি আমাদের এই পাকিস্তানকে বাস্তবে রুপায়িত করার জন্য আমাদের কত পরিশ্রম করতে হয়েছে, কত ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। যখন অবিভক্ত ভারতে আমরা বুঝতে পারলাম যে, আমাদের অস্তিত্বই বিপন্ন হয়ে পড়েছে, তখন আমরা একটা পৃথক আবাসভূমি দাবী করতে বাধ্য হলাম। এই কাজ সহজসাধ্য ছিল না। সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে আমাদেরকে পদানত করে রাখাই শোষকদের গৃঢ় অভিসন্ধি ছিল। আমাদের শত্ররা আমাদের চেয়ে অনেক বেশী সঙ্ঘবন্ধ ছিল। এমনকি নূতন ও প্রাণবন্ত এই রাষ্ট্র গঠিত হওয়ার পরও তারা আমাদের উন্নতির পথে বিঘ্ন সৃষ্টি করার