পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (সপ্তম খণ্ড).pdf/৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : সপ্তম খণ্ড শিরোনাম সূত্র তারিখ ৮। পদগনির বাণীর জবাবে ইয়াহিয়াঃ দৈনিক পাকিস্তান ৭ এপ্রিল, ১৯৭১ অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতে দেব না পদগনির বাণীর জবাবে ইয়াহিয়া অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতে দেব না ইসলামাবাদ, ৬ই এপ্রিল এ পি পি- প্রেসিডেন্ট জেনারেল এ এম ইয়াহিয়া খান আজ পুনরুল্লেখ করেন যে, পাকিস্তান তার অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে কোন দেশকে হস্তক্ষেপ করতে না দেওয়ার ব্যাপারে দৃঢ় সংকল্প। সোভিয়েট প্রেসিডেন্ট এন পদগনির ৩রা এপ্রিলের বাণীর জবাবে তিনি বলেন পাকিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারত খোলাখুলি ও নির্লজ্জ হস্তক্ষেপের একটিউ মাত্র উদ্দেশ্য- গোলযোগ সৃষ্টির জন্য মুষ্টিমেয় লোককে উস্কানী ও বৈষয়িক সাহায্য দিয়ে পরিস্থিতিকে প্রজুলিত করে তোলা। কোন শক্তির পক্ষেই এই উদ্যোগকে সমর্থন বা ক্ষমা করার অর্থ হচ্ছে জাতিসংঘ সনদ ও বান্দুং নীতি খেলাফ করা। পাকিস্তানের দিক থেকে পাকিস্তান সর্বদাই এই নীতিগুলি মেনে চলছে। প্রেসিডেন্ট উল্লেখ করে যে, গণতান্ত্রিক পদ্ধতির নিজস্ব পথে চলতে দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার ব্যাপারে তার নিজের চাইতে বেশী কেউ সচেতন নন এবং এই নীতির প্রতি তিনি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কিন্তু সোভিয়েট ইউনিয়নসহ কোন দেশই জাতিবিরোধী ও অ-দেশপ্রেমিক ব্যক্তিদের দেশকে ধ্বংস করার ব্যাপারে অগ্রসর হতে দিতে পারে না বা কখনও দেয়নি কিংবা নাশকতামূলক কর্ম সমর্থন করতে পারে না। প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ থেকে নয়াদিল্লীকে বিরত করার জন্য সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রতি ভারতে তার অনস্বীকার্য প্রভাব ব্যবহার করার আহবান জানান। কারণ উপমহাদেশে শান্তি বজায় ও অগ্রগতি অব্যাহত রাখার ব্যাপারে সোভিয়েট আগ্রহের সঙ্গে এটা সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে। প্রেসিডেন্টের বাণীর পূর্ণ বিবরণ আপনার বাণী আমাকে ৩রা এপ্রিল প্রদান করা হয়েছে। স্পষ্টতঃ প্রধান মন্ত্রী কোসিগিনের বাণীর জবাবে প্রদত্ত আমার বাণী আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করেনি এবং আপনি যে প্রশ্নগুলো তুলেছেন তা প্রাসঙ্গিক বলে আমি পুনরুল্লেখ করছি। উক্ত বাণীতে আমি বলেছিলামঃ গত ২৮শে মার্চ করাচীতে নিযুক্ত সোভিয়েট কনসাল জেনারেল আপনার মৌখিক বাণী আমাকে জানিয়েছে। ইতিপূর্বে ঢাকায় নিযুক্ত আপনাদের কনসাল জেনারেলও আমার সঙ্গে দেখা করেন এবং শাসনতান্ত্রিক সমস্যাবলী নিরসনের ব্যাপারে আমার প্রচেষ্টা সম্পর্কে তাকে অবহিত করি। আপনার বাণীতে বলা হয়েছে যে তা অসমাপ্ত খবরভিত্তিক। আমি আশা করি, মিঃ প্রধান মন্ত্রী, আপনাদের রাষ্ট্রদূত আপনাকে আমার ৩৬শে মার্চের বিবৃতির বিবরণ অবহিত করেছে। উক্ত বিবৃতিতে আমি যে ঘটনাবলীতে বর্তমান পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে তা পাকিস্তানের জনগণের কাছে পেশ করেছি। পাকিস্তানে গণতান্ত্রিক পদ্ধতির পুনঃপ্রতিষ্ঠা আমার অবিরাম প্রচেষ্টা এবং আমাদের পথে যে সকল অসুবিধা সৃষ্টি হয় সেগুলো নিরসনের জন্যে আমি চেষ্টার ত্রটি করিনি। একই সঙ্গে পাকিস্তানের অখণ্ডতা, সার্বভৌমত্ব ও ঐক্য রক্ষার জন্য জাতির প্রতি আমার দায়িত্ব সম্পর্কে আমি সচেতন।