পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (সপ্তম খণ্ড).pdf/৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

28 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : সপ্তম খণ্ড এমন একটা অবস্থার সৃষ্টি হলো যে, ক্রমান্বয়ে আইন-শৃংখলা ভেঙ্গে পড়ছিল, নির্দোষ লোকদের সস্ত্রস্ত করা হচ্ছিল, ব্যাপক ঘর জ্বালানী, লুটতরাজ ও হত্যা নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপারে পরিণত হয়েছিল। পরিস্থিতির মোকাবেলা করা ছাড়া কোন বিকল্প পথ ছিল না। সরকার যে সব ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন তা বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ পূর্ব পাকিস্তানী নাগরিকের জান মাল ও সম্মান রক্ষার জন্যই করেছেন। কতিপয় আওয়ামী লীগ নেতা যে ফ্যাসিবাদী তৎপরতা চালাচ্ছিলেন সে সম্পর্কে কেউই দ্বিমত পোষণ করবেন না। গণতন্ত্রকে তার নির্ধারিত পথে এগোতে দেওয়ার ব্যাপারে আমার চেয়ে কেউ বেশী সচেতন নন। এবং আমি এই নীতিতে অবিচল রয়েছি। কিন্তু সোভিয়েট ইউনিয়নসহ কোন দেশই রাষ্ট্র বিরোধী দেশপ্রেম বিবর্জিত লোকদের দেশকে ধ্বংস করার সুযোগ কিংবা নাশকতামূলক কাজ চালানোর সুযোগ কখনো দেয়নি, দিতে পারে না। আমার দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারতের প্রকাশ্য ও নির্লজ্জ হস্তক্ষেপের মাত্র একটাই লক্ষ্য রয়েছে। তা হলো গোলযোগ সৃষ্টিকারী সামান্য কিছু লোককে উৎসাহ এবং বৈষয়িক সমর্থন দিয়ে পরিস্থিতি আরো উত্তপ্ত করে তোলা। কোন শক্তি যদি এ রকম তৎপরতাকে সমর্থন করে কিংবা ক্ষমা করে তবে সেটা হবে জাতিসংঘ সনদ ও বান্দুং নীতির পরিপন্থী। পাকিস্তান সব সময় এসব নীতি মেনে চলেছে এবং পাকিস্তান তার অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে কোন দেশকে হস্তক্ষেপ করতে না দেয়ার প্রশ্নে দৃঢ় সংকল্প। প্রভাবকে ব্যবহার করে। বস্তুতঃ সেটাই হবে এই উপমহাদেশে শান্তি, শৃংখলা এবং বাধাহীন অর্থনৈতিক অগ্রগতি অব্যাহত রাখার সোভিয়েট ইউনিয়নের ইচ্ছার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ।